BLO Duty Case: কলকাতা হাইকোর্টে গড়াল বিএলও ডিউটি বিতর্ক, স্বস্তিতে প্রাথমিক শিক্ষকরা

BLO Duty Case: অবশেষে কলকাতা হাইকোর্টে গড়াল প্রাথমিক শিক্ষকদের বিএলও (বুথ লেভেল অফিসার) ডিউটি বিতর্ক। রাজ্যের প্রাথমিক শিক্ষকদের জোরপূর্বক বিএলও ডিউটি দেওয়ার অভিযোগ তুলে কলকাতা হাইকোর্টে মামলা দায়ের করা হয়েছে। এই মামলায় শিক্ষকদের স্বস্তি দিয়ে মহামান্য আদালত মামলা দায়ের করার অনুমতি দিয়েছে। আগামী সোমবার এই মামলার শুনানি হতে পারে। এই ঘটনায় রাজ্যের হাজার হাজার প্রাথমিক শিক্ষক স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলছেন।
কী এই বিএলও ডিউটি বিতর্ক?
নির্বাচন কমিশনের নির্দেশ অনুযায়ী, ভোটার তালিকা সংশোধন এবং নতুন ভোটারদের নাম তোলার জন্য বুথ লেভেল অফিসার বা বিএলও নিয়োগ করা হয়। অভিযোগ, পশ্চিমবঙ্গের বিভিন্ন জেলায়, নিয়ম বহির্ভূতভাবে মূলত প্রাথমিক শিক্ষকদের এই কাজে নিয়োগ করা হচ্ছে। শিক্ষকদের দাবি, এর ফলে স্কুলের পঠন-পাঠন মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে এবং তাদের উপর অতিরিক্ত কাজের বোঝা চাপানো হচ্ছে।
শিক্ষকদের মূল অভিযোগ:
- নিয়ম লঙ্ঘন: নির্বাচন কমিশনের ২০২২ সালের নির্দেশিকা অনুযায়ী, খুব কম সংখ্যক শিক্ষাকর্মী প্রয়োজনে নির্বাচনী কাজে নিয়োগ করা যেতে পারে। কিন্তু বাস্তবে দেখা যাচ্ছে, ১০০ জন বিএলও-র মধ্যে ৮০-৯০ জনই প্রাথমিক শিক্ষক।
- পঠন-পাঠনের ক্ষতি: বিএলও ডিউটির জন্য শিক্ষকদের স্কুলের সময়ের বাইরেও কাজ করতে হচ্ছে। এমনকি ছুটির দিনেও তাদের এই কাজ করতে হচ্ছে, যার ফলে স্কুলে ছাত্র-ছাত্রীদের পড়াশোনা ব্যাহত হচ্ছে।
- অতিরিক্ত কাজের বোঝা: স্কুলের নিয়মিত কাজের পাশাপাশি বিএলও ডিউটির মতো একটি গুরুত্বপূর্ণ এবং সময়সাপেক্ষ কাজ শিক্ষকদের উপর অতিরিক্ত মানসিক এবং শারীরিক চাপ সৃষ্টি করছে।
- স্বল্প পারিশ্রমিক: এই অতিরিক্ত কাজের জন্য শিক্ষকদের আশানুরূপ পারিশ্রমিক বা ভাতা দেওয়া হচ্ছে না বলে অভিযোগ।
আদালতের পদক্ষেপ
প্রায় ৫০ জন প্রাথমিক শিক্ষক, কলকাতা হাইকোর্টের দ্বারস্থ হন। বিচারপতি অমৃতা সিনহার বেঞ্চে এই মামলার জরুরি ভিত্তিতে শুনানির আবেদন জানানো হয়। মহামান্য আদালত মামলা দায়ের করার অনুমতি দিয়েছে এবং আগামী সোমবার এই মামলার শুনানি হতে পারে।
আইনজীবীদের মতে, মামলাকারীরা এখন থেকে বিএলও ডিউটি গ্রহণ করতে অস্বীকার করতে পারেন এবং আদালতের রায়ের জন্য অপেক্ষা করতে পারেন। যারা এখনও এই মামলায় যোগ দেননি, তারাও একটি CAN অ্যাপ্লিকেশন ফাইল করে এই মামলায় অন্তর্ভুক্ত হতে পারেন এবং একই সুবিধা পেতে পারেন।
এই ঘটনায় রাজ্যের শিক্ষক মহলে আশার আলো দেখা দিয়েছে। তাদের আশা, আদালতের হস্তক্ষেপে এই সমস্যার একটি স্থায়ী সমাধান হবে এবং তারা নিজেদের মূল কাজ, অর্থাৎ ছাত্র-ছাত্রীদের পড়ানোর কাজে পুরোপুরি মনোযোগ দিতে পারবেন।