DA Case Update: ডিএ নিয়ে রাজ্য সরকারের প্রতারণা? অন্যান্য রাজ্য পারলে বাংলা কেন পারছে না, কনফেডারেশনের মাস্টারপ্ল্যান

DA Case Update: ডিএ মামলা নিয়ে পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য সরকারি কর্মীদের প্রতীক্ষার অবসান যেন হচ্ছে না। রাজ্য সরকারের দায়ের করা মডিফিকেশন অ্যাপ্লিকেশন এবং সুপ্রিম কোর্টে নতুন আবেদনকে কেন্দ্র করে পরিস্থিতি আরও জটিল হয়েছে। কনফেডারেশন অফ স্টেট গভর্নমেন্ট এমপ্লয়িজ এই পরিস্থিতিকে রাজ্য সরকারের একটি “প্রতারণার ফাঁদ” হিসেবে আখ্যা দিয়েছে এবং তারা এই ফাঁদে পা না দিয়ে নিজেদের আইনি কৌশলে অটল থাকার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এই ব্লগ পোস্টে আমরা ডিএ মামলার সর্বশেষ পরিস্থিতি, কনফেডারেশনের রণনীতি এবং রাজ্য সরকারের অবস্থান নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করব।
কনফেডারেশনের নতুন রণকৌশল
রাজ্য সরকারি কর্মচারী কনফেডারেশন স্পষ্ট জানিয়েছে যে তারা রাজ্য সরকারের দায়ের করা মডিফিকেশন অ্যাপ্লিকেশনটিকে সম্পূর্ণ উপেক্ষা করবে। তাদের মতে, এই অ্যাপ্লিকেশনটি আসলে মামলা বিলম্বিত করার একটি কৌশল ছাড়া আর কিছুই নয়। মূল ফোকাস এখন ৪ আগস্ট সুপ্রিম কোর্টে জাস্টিস করলের বেঞ্চে হতে চলা শুনানির দিকে।
কনফেডারেশনের পক্ষ থেকে মলয় মুখোপাধ্যায় জানিয়েছেন, গত ১৬ মে জাস্টিস করল একটি গুরুত্বপূর্ণ নির্দেশ দিয়েছিলেন:
- রাজ্য সরকারকে ছয় সপ্তাহের মধ্যে বকেয়া মহার্ঘ ভাতার (ডিএ) ২৫ শতাংশ পরিশোধ করতে হবে।
- আগামী ৪ আগস্ট মামলাটি “টপ অফ দ্য বোর্ড” অর্থাৎ সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার ভিত্তিতে তালিকাভুক্ত করতে হবে।
কনফেডারেশন আশা করছে, এই শুনানিতেই আদালত অবমাননার বিষয়টি জোরালোভাবে উত্থাপন করা হবে এবং রাজ্য সরকার কেন আদালতের নির্দেশ মানেনি, সেই প্রশ্ন তোলা হবে।
রাজ্য সরকারের বিরুদ্ধে প্রতারণার অভিযোগ
কনফেডারেশনের অভিযোগ, রাজ্য সরকার সুপ্রিম কোর্টে একটি নতুন আবেদন করে কর্মীদের প্রতারিত করার চেষ্টা করছে। তাদের মতে, এই নতুন আবেদনের মূল উদ্দেশ্য হলো ডিএ মামলার শুনানি পিছিয়ে দেওয়া এবং কর্মীদের আরও দীর্ঘ সময় ধরে অপেক্ষায় রাখা। এই ধরনের আইনি মারপ্যাঁচের মাধ্যমে রাজ্য সরকার নিজেদের দায়িত্ব এড়িয়ে যাওয়ার চেষ্টা করছে বলে মনে করছেন আন্দোলনকারীরা।
এই পরিস্থিতিকে কেবল আইনি লড়াই হিসেবে দেখা হচ্ছে না, বরং রাজ্য সরকারের সদিচ্ছা এবং আর্থিক পরিচালনা নিয়েও গম্ভীর প্রশ্ন উঠছে। একদিকে যখন কর্মীরা তাদের ন্যায্য অধিকার থেকে বঞ্চিত, অন্যদিকে তখন রাজ্য সরকারের বিভিন্ন অপ্রয়োজনীয় খাতে অর্থ ব্যয় নিয়েও সমালোচনা হচ্ছে।
অন্যান্য রাজ্যের সাথে তুলনা
ভিডিওতে পশ্চিমবঙ্গ সরকারের আর্থিক সংকটের অজুহাতকে অন্যান্য রাজ্যের পরিস্থিতির সঙ্গে তুলনা করে তুলে ধরা হয়েছে। রাজস্থান, উত্তরাখণ্ড, পাঞ্জাব, দিল্লি এবং হরিয়ানার মতো রাজ্যগুলি, যেগুলির মধ্যে অনেকগুলি বিরোধী দল দ্বারা শাসিত, তারা নিয়মিতভাবে কেন্দ্রীয় হারেই ডিএ প্রদান করছে।
- রাজস্থান: কেন্দ্রীয় সরকারের হারেই ডিএ দিচ্ছে।
- পাঞ্জাব: নিয়মিত ডিএ পরিশোধ করছে।
- দিল্লি ও হরিয়ানা: ডিএ প্রদানে কোনও বকেয়া রাখেনি।
এই রাজ্যগুলি যদি আর্থিক ব্যবস্থা করতে পারে, তবে পশ্চিমবঙ্গ সরকার কেন বারবার কেন্দ্রীয় বঞ্চনার অজুহাত দেখিয়ে ডিএ আটকে রাখছে? এই প্রশ্নটিই এখন বড় হয়ে দেখা দিয়েছে। আন্দোলনকারীদের মতে, এটি রাজ্য সরকারের আর্থিক অব্যবস্থাপনা এবং সদিচ্ছার অভাবের একটি স্পষ্ট উদাহরণ।
সব মিলিয়ে, ডিএ মামলাটি এখন একটি চূড়ান্ত পর্যায়ের দিকে এগোচ্ছে। ৪ আগস্টের শুনানি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ হতে চলেছে, যেখানে আদালত অবমাননার মতো গম্ভীর বিষয়টিও বিচার্য হবে। রাজ্য সরকারি কর্মীরা তাকিয়ে আছেন সুপ্রিম কোর্টের দিকে, একটি ন্যায্য সমাধানের আশায়।