DA Controversy: ডিএ বাধ্যতামূলক নয়, ঐচ্ছিক! মমতার মন্তব্যে তোলপাড় রাজ্য, সুপ্রিম রায়ের আগেই সংঘাত
DA Controversy: পশ্চিমবঙ্গের সরকারি কর্মচারীদের দীর্ঘ প্রতীক্ষিত মহার্ঘ ভাতা বা ডিএ মামলার চূড়ান্ত ফয়সালা ঝুলে রয়েছে সুপ্রিম কোর্টে। রাজ্যের লাখ লাখ কর্মী যখন শীর্ষ আদালতের রায়ের দিকে চাতক পাখির মতো তাকিয়ে আছেন, ঠিক সেই মুহূর্তেই মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের একটি মন্তব্য যেন বারুদে আগুন দিল। বৃহস্পতিবার কলকাতার ধনধান্য অডিটোরিয়ামে আয়োজিত একটি বিজনেস কনক্লেভের মঞ্চ থেকে ডিএ প্রসঙ্গে মুখ্যমন্ত্রী যে মন্তব্য করেছেন, তা নিয়ে রীতিমতো তোলপাড় শুরু হয়েছে রাজ্যজুড়ে।
মুখ্যমন্ত্রীর মন্তব্য ও তার প্রেক্ষাপট
বিজনেস কনক্লেভের ওই অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখার সময় মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ডিএ নিয়ে সরকারের অবস্থান অত্যন্ত স্পষ্টভাবে তুলে ধরেন। তিনি সরাসরি জানান যে, মহার্ঘ ভাতা প্রদান করা সরকারের জন্য কোনও বাধ্যতামূলক বিষয় নয়। তাঁর এই মন্তব্য উপস্থিত শ্রোতা এবং সংবাদমাধ্যমের নজর কাড়তে সময় নেয়নি। মুখ্যমন্ত্রী ঠিক কী বলেছেন, তা নিচে উল্লেখ করা হলো:
- ঐচ্ছিক বিষয়: মুখ্যমন্ত্রী স্পষ্ট ভাষায় বলেন, “ডিএ দেওয়া ম্যান্ডেটারি বা বাধ্যতামূলক নয়।”
- বর্তমান পরিস্থিতি: তিনি আরও যোগ করেন, “তা সত্ত্বেও আমরা সরকারি কর্মীদের বছরে ৮ শতাংশ ডিএ দিচ্ছি।”
মুখ্যমন্ত্রীর এই বক্তব্যের পর থেকেই সরকারি কর্মচারী মহলে তীব্র ক্ষোভের সঞ্চার হয়েছে। যেখানে কেন্দ্রীয় সরকারি কর্মচারীদের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে ডিএ-র দাবিতে আন্দোলন চলছে, সেখানে রাজ্যের প্রশাসনিক প্রধানের মুখে এমন কথা শুনে অনেকেই হতাশ এবং ক্ষুব্ধ।
সংগ্রামী যৌথ মঞ্চের তীব্র প্রতিক্রিয়া
মুখ্যমন্ত্রীর এই মন্তব্যের কড়া সমালোচনা করেছেন সংগ্রামী যৌথ মঞ্চের আহ্বায়ক ভাস্কর ঘোষ। তিনি মুখ্যমন্ত্রীর যুক্তি খণ্ডন করে দাবি করেন, ডিএ কোনও দয়ার দান নয়, এটি কর্মীদের সাংবিধানিক অধিকার। ভাস্করবাবু প্রশ্ন তোলেন, যদি ডিএ বাধ্যতামূলক না-ই হবে, তবে রাজ্য সরকার কেন ১৮ শতাংশ দিচ্ছে? অতীতে তো তা শূন্য করে দেওয়া হয়েছিল, তাহলে এখন কেন আবার দেওয়া হচ্ছে?
সবার আগে খবরের আপডেট পান!
টেলিগ্রামে যুক্ত হনতিনি আরও জানান, সারা দেশজুড়ে ডিএ প্রদানের একটি নির্দিষ্ট গাণিতিক সূত্র বা ফর্মুলা রয়েছে, যা মেনে চলা হয়। এটি কোনও ব্যক্তির ইচ্ছার ওপর নির্ভর করে না। সংগ্রামী যৌথ মঞ্চের পক্ষ থেকে হুঁশিয়ারি দেওয়া হয়েছে যে, বকেয়া ৪০ শতাংশ ডিএ কর্মীরা তাদের অধিকার হিসেবেই আদায় করে ছাড়বেন।
সুপ্রিম কোর্টে মামলার বর্তমান অবস্থা
এই বাদানুবাদের মাঝেই সবার নজর এখন সুপ্রিম কোর্টের দিকে। গত ৮ সেপ্টেম্বর ডিএ মামলার শুনানি শেষ হলেও রায়দান স্থগিত রাখা হয়েছিল। বর্তমানে ডিসেম্বর মাস শেষের পথে এবং আগামী ২২ ডিসেম্বর থেকে ২ জানুয়ারি পর্যন্ত সুপ্রিম কোর্টে শীতকালীন ছুটি থাকবে। ফলে, চলতি বছরে এই মামলার রায় ঘোষণার সম্ভাবনা প্রায় নেই বললেই চলে।
আইনি জটিলতা এবং রাজপথে আন্দোলনের আবহ যখন চরমে, তখন মুখ্যমন্ত্রীর এই ‘বাধ্যতামূলক নয়’ মন্তব্য পরিস্থিতিকে আরও জটিল করে তুলেছে। নতুন বছরে সুপ্রিম কোর্ট কী রায় দেয় এবং রাজ্য সরকার তার প্রেক্ষিতে কী পদক্ষেপ নেয়, সেটাই এখন দেখার বিষয়।