Directorate Common Cadre: রাজ্য সরকারি কর্মীদের জন্য বিরাট সুখবর! কমন ক্যাডার চালুর সিদ্ধান্তে একলাফে বাড়ল পদোন্নতির সুযোগ
Directorate Common Cadre: পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য সরকারি কর্মচারীদের জন্য, বিশেষ করে যারা বিভিন্ন দপ্তরের অধীনস্থ ডাইরেক্টরেটগুলিতে কর্মরত, তাঁদের জন্য অত্যন্ত খুশির খবর নিয়ে এল রাজ্য মন্ত্রিসভা। দীর্ঘদিনের অচলাবস্থা কাটিয়ে বুধবার রাজ্য মন্ত্রিসভার বৈঠকে ‘ডাইরেক্টরেট কমন ক্যাডার’ (Directorate Common Cadre) তৈরির প্রস্তাবে চূড়ান্ত ছাড়পত্র দেওয়া হয়েছে। রাজ্য সরকারের এই যুগান্তকারী সিদ্ধান্তের ফলে হাজার হাজার কর্মীর পদোন্নতির পথ বা প্রোমোশনের সুযোগ একলাফে অনেকটাই বেড়ে গেল।
কী এই ডাইরেক্টরেট কমন ক্যাডার?
প্রশাসনিক সূত্রে প্রাপ্ত তথ্য অনুযায়ী, রাজ্যে বর্তমানে ১০৬টি ডাইরেক্টরেট রয়েছে এবং সেখানে প্রায় ১১ হাজারেরও বেশি আধিকারিক ও কর্মী কর্মরত আছেন। এতদিন পর্যন্ত প্রচলিত নিয়ম অনুযায়ী, একজন কর্মী যেই ডাইরেক্টরেটে চাকরিতে যোগদান করতেন, তাকে মূলত সেই ডাইরেক্টরেটেই সীমাবদ্ধ থাকতে হত। এর ফলে পদোন্নতির সুযোগ ছিল অত্যন্ত সীমিত।
অনেক ক্ষেত্রে দেখা যেত, দীর্ঘ চাকরি জীবনে মাত্র একটি প্রোমোশন পেতে পেতেই কর্মীদের অবসরের সময় চলে আসত। কিন্তু এবার সেই চিত্রে আমূল পরিবর্তন আসতে চলেছে। রাজ্য সরকারের নতুন সিদ্ধান্ত অনুযায়ী:
- সমস্ত ডাইরেক্টরেটের কর্মীদের প্রশাসনিক ও কর্মিবর্গ দপ্তরের (P&AR Department) অধীনে নিয়ে এসে একটি ‘কমন ক্যাডার’ তৈরি করা হবে।
- এর ফলে এক ডাইরেক্টরেট থেকে অন্য ডাইরেক্টরেটে বদলি বা ট্রান্সফারের দরজা খুলে যাবে।
- বিভিন্ন দপ্তরে কাজের সুযোগ তৈরি হওয়ায় স্বাভাবিকভাবেই পদোন্নতির সুযোগ আগের তুলনায় বহুগুণ বেড়ে যাবে।
আধিকারিক মহলের মতে, এটি কর্মীদের কেরিয়ার গ্রোথের ক্ষেত্রে এবং প্রশাসনিক কাজে গতি আনতে একটি অত্যন্ত ইতিবাচক পদক্ষেপ।
সবার আগে খবরের আপডেট পান!
টেলিগ্রামে যুক্ত হনদীর্ঘদিনের দাবি ও হাইপাওয়ার কমিটি
কর্মীদের এই পদোন্নতি সংক্রান্ত সমস্যা ও দাবি দীর্ঘদিনের। সেই দাবিগুলি গুরুত্ব সহকারে খতিয়ে দেখার জন্য নবান্নের তরফে একটি হাইপাওয়ার কমিটি গঠন করে দেওয়া হয়েছিল। সেই কমিটির সুপারিশ ও প্রস্তাব মেনেই এদিন মন্ত্রিসভা এই কমন ক্যাডার তৈরির সিদ্ধান্তে সিলমোহর দিয়েছে।
এই সিদ্ধান্তের বিষয়ে পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য সরকারি কর্মচারী ফেডারেশনের চেয়ারম্যান ডাক্তার মানস ভুঁইয়া সন্তোষ প্রকাশ করেছেন। তিনি জানান, ২০১১ সালের পর থেকে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় কর্মচারীদের কথা ভেবে একাধিক গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ নিয়েছেন এবং এটিও তার মধ্যে অন্যতম। ফেডারেশনের কনভেনার প্রতাপ নায়েকও কর্মীদের দীর্ঘদিনের সমস্যার সমাধানের জন্য মুখ্যমন্ত্রীকে ধন্যবাদ জানিয়েছেন।
খেলোয়াড়দের নিয়োগ ও অন্যান্য সিদ্ধান্ত
এদিনের মন্ত্রিসভার বৈঠকে কর্মীদের পদোন্নতি ছাড়াও আরও কিছু গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
- খেলোয়াড়দের সরাসরি নিয়োগ: কৃতি ও পদকজয়ী খেলোয়াড়দের সরকারি চাকরিতে সরাসরি নিয়োগের পথ সুগম করতে ‘পশ্চিমবঙ্গ পরিষেবা (বিশেষ ব্যবস্থার অধীনে খেলোয়াড়দের নিয়োগ) বিধিমালা ২০২৫’-এ ছাড়পত্র দেওয়া হয়েছে। প্রশাসনিক ও কর্মিবর্গ দপ্তরের বর্তমান পদসমূহের কাঠামো পরিবর্তন না করেই সেকশন অফিসার, ইউডিএ (UDA), এলডিএ (LDA) এবং গ্রুপ-ডি পদে তাঁদের নিয়োগ করা যাবে।
- নিউটাউনের পরিধি বৃদ্ধি: দক্ষিণ ২৪ পরগনার ভাঙড়ের দুটি ব্লকের চারটি মৌজাকে নিউটাউন কলকাতা প্ল্যানিং এরিয়ার (New Town Kolkata Planning Area) অন্তর্ভুক্ত করার প্রস্তাবেও সায় দিয়েছে মন্ত্রিসভা।
রাজ্য সরকারের এই সিদ্ধান্তগুলি প্রশাসনিক পরিকাঠামো উন্নয়ন এবং কর্মীদের মনোবল বৃদ্ধিতে সহায়ক হবে বলেই মনে করা হচ্ছে।