Fake Medicine Alert: আবারও গুণমানের পরীক্ষায় ফেল ১৮৮টি ওষুধ, তালিকায় জীবনদায়ী ইনজেকশন-ও

Fake Medicine Alert: আবারও সাধারণ মানুষের স্বাস্থ্য নিয়ে ছিনিমিনি খেলার অভিযোগ উঠল। কেন্দ্রীয় ড্রাগ কন্ট্রোল বিভাগের সাম্প্রতিক রিপোর্ট অনুযায়ী, ১৮৮টি বহুল ব্যবহৃত ওষুধ গুণমানের পরীক্ষায় ব্যর্থ হয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে ট্যাবলেট, ক্যাপসুল এবং ইনজেকশনের মতো জীবনদায়ী ওষুধও। এই ঘটনা ফের একবার দেশের ওষুধ নিয়ামক ব্যবস্থার স্বচ্ছতা এবং কার্যকারিতা নিয়ে বড়সড় প্রশ্নচিহ্ন তুলে দিল।
কেন্দ্রীয় ড্রাগ কন্ট্রোল বিভাগ সূত্রে খবর, গত মাসে বাজার থেকে এই ওষুধগুলির নমুনা সংগ্রহ করে ল্যাবে পরীক্ষার জন্য পাঠানো হয়েছিল। সেই পরীক্ষার রিপোর্ট সামনে আসতেই চক্ষু চড়কগাছ স্বাস্থ্যকর্তাদের। কলকাতার সেন্ট্রাল ড্রাগ ল্যাবে পরীক্ষা হওয়া ওষুধের মধ্যে ২৭টিই গুণমানে ব্যর্থ হয়েছে। এই তালিকা প্রকাশ করে কেন্দ্রীয় ড্রাগ কন্ট্রোল বিভাগ জানিয়েছে, কিছু কিছু ক্ষেত্রে পরিস্থিতি অত্যন্ত উদ্বেগজনক।
রিপোর্টে কী কী উঠে এসেছে?
কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রকের অধীনস্থ এই সংস্থা জানিয়েছে, গুণমানে ব্যর্থ হওয়া ওষুধগুলির মধ্যে মারাত্মক গাফিলতির প্রমাণ মিলেছে।
- বিপজ্জনক ব্যাকটিরিয়ার উপস্থিতি: বেশ কিছু ইঞ্জেকশনের ভায়ালে ক্ষতিকারক ব্যাকটেরিয়ার উপস্থিতি পাওয়া গেছে, যা সরাসরি রক্তে মিশলে রোগীর প্রাণের ঝুঁকি পর্যন্ত হতে পারত।
- পরিশোধিত জলের অভাব: একাধিক ওষুধ তৈরিতে পরিশোধিত জল ব্যবহার করা হয়নি, যা ওষুধের কার্যকারিতা কমানোর পাশাপাশি পার্শ্বপ্রতিক্রিয়ার আশঙ্কাও বাড়িয়ে তোলে।
- নকল ব্র্যান্ডিং: সবচেয়ে ভয়ের বিষয় হল, বেশ কিছু নামী সংস্থার ব্র্যান্ড নাম নকল করে এই নিম্নমানের ওষুধগুলি তৈরি করা হয়েছে। ফলে সাধারণ মানুষের পক্ষে আসল ও নকলের ফারাক করা কার্যত অসম্ভব।
কোন রাজ্যের সংস্থাগুলি জড়িত?
তালিকায় দেখা যাচ্ছে, মূলত কয়েকটি রাজ্যের ওষুধ প্রস্তুতকারক সংস্থার নামই বেশি করে উঠে এসেছে। এর মধ্যে রয়েছে:
- হিমাচল প্রদেশ (৪৪টি সংস্থা)
- উত্তরাখণ্ড (২৩টি সংস্থা)
- গুজরাত (২৩টি সংস্থা)
- মহারাষ্ট্র (১৬টি সংস্থা)
- মধ্যপ্রদেশ (১৩টি সংস্থা)
- পাঞ্জাব (১২টি সংস্থা)
এই পরিসংখ্যান থেকে স্পষ্ট যে, কয়েকটি নির্দিষ্ট এলাকাকে কেন্দ্র করে নকল বা নিম্নমানের ওষুধ তৈরির একটি চক্র সক্রিয় রয়েছে।
ভোক্তাদের জন্য সতর্কতা
এই পরিস্থিতিতে সাধারণ মানুষের আরও বেশি সতর্ক হওয়া প্রয়োজন। যে কোনও ওষুধ কেনার আগে কিছু বিষয় মাথায় রাখা জরুরি:
- বিশ্বাসযোগ্য দোকান: সর্বদা লাইসেন্সপ্রাপ্ত এবং বিশ্বাসযোগ্য দোকান থেকেই ওষুধ কিনুন।
- প্যাকেজিং খুঁটিয়ে দেখুন: ওষুধের প্যাকেজিং, সিল এবং হলোগ্রাম ভালোভাবে পরীক্ষা করে নিন। কোনও রকম অসঙ্গতি চোখে পড়লে তা এড়িয়ে চলুন।
- বিল সংগ্রহ করুন: ওষুধ কেনার সময় অবশ্যই বিল সংগ্রহ করুন। এতে ব্যাচ নম্বর এবং অন্যান্য তথ্য থাকায় ভবিষ্যতে কোনও সমস্যা হলে অভিযোগ জানাতে সুবিধা হবে।
এই ঘটনা প্রমাণ করে যে, শুধুমাত্র নামী ব্র্যান্ডের উপর ভরসা না করে, ওষুধ কেনার সময় আমাদের প্রত্যেককেই আরও অনেক বেশি সচেতন হতে হবে। সরকারের পক্ষ থেকে এই চক্রের বিরুদ্ধে কড়া পদক্ষেপ নেওয়ার পাশাপাশি, ভোক্তা হিসেবে আমাদেরও নিজেদের সুরক্ষার দায়িত্ব নিতে হবে।