Gold Investment: সোনা কি শেয়ার বাজারের চেয়েও ভালো? দেখুন ২৫ বছরের পরিসংখ্যান, বিনিয়োগের আগে জানুন সত্যিটা
Gold Investment: ২০২৫ সাল শুরু হওয়ার পর থেকে সোনার দামে এক অভূতপূর্ব বৃদ্ধি লক্ষ্য করা গেছে, যা বিনিয়োগকারীদের মধ্যে এক নতুন আলোচনার জন্ম দিয়েছে: ইক্যুইটির চেয়ে সোনায় বিনিয়োগ করা কি এখন বেশি লাভজনক? বছরের শুরুতে যেখানে মার্কিন ডলারে সোনার দাম ছিল প্রায় $২,৬০০ এবং ভারতীয় বাজারে প্রায় ৮০,০০০ টাকা, সেখানে বর্তমানে সোনার দাম $৪,০৭৭ এবং ভারতে ১,২২,৮৪০ টাকায় পৌঁছেছে।
এই বিপুল বৃদ্ধি অনেককেই ইক্যুইটি বাজার থেকে মুখ ফিরিয়ে সোনার দিকে আকৃষ্ট করছে। কিন্তু কোনো সিদ্ধান্তে আসার আগে সম্পূর্ণ চিত্রটা বোঝা অত্যন্ত জরুরি।
সোনার দুর্দান্ত পারফরম্যান্স
চলতি বছরে সোনা ভারতের প্রধান ইক্যুইটি সূচকগুলিকে বহুদূরে পিছনে ফেলে দিয়েছে। ২০২৫ সালে এখন পর্যন্ত সেনসেক্স এবং নিফটি যথাক্রমে ৮% এবং ৯.৫% রিটার্ন দিয়েছে, সেখানে সোনা ৫৫%-এর বেশি রিটার্ন দিয়েছে। এই বৃদ্ধি হঠাৎ করে হয়নি। এর আগের বছর, অর্থাৎ ২০২৪ সালেও সোনা ২৭% এবং ২০২৩ সালে ১৩% লাভ দিয়েছিল।
স্বল্প থেকে মধ্যমেয়াদে সোনার পারফরম্যান্স নিঃসন্দেহে আকর্ষণীয়। আসুন গত কয়েক বছরের পরিসংখ্যান দেখে নেওয়া যাক:
সবার আগে খবরের আপডেট পান!
টেলিগ্রামে যুক্ত হন- বিগত ১ বছরে: সোনা ৬১% রিটার্ন দিয়েছে, যেখানে সেনসেক্স দিয়েছে মাত্র ৯%।
- বিগত ৩ বছরে: সোনায় ৩১% রিটার্ন মিলেছে, আর সেনসেক্স দিয়েছে ১১%।
- বিগত ৫ বছরে: সোনা ১৬% রিটার্ন দিয়েছে, যেখানে সেনসেক্স দিয়েছে ১৪%।
এই পরিসংখ্যান স্পষ্ট দেখাচ্ছে যে গত ৫ বছরে সোনা বিনিয়োগকারীদের মুখে হাসি ফুটিয়েছে।
দীর্ঘমেয়াদী রিটার্নের তুলনা
তবে দীর্ঘমেয়াদী বিনিয়োগের ক্ষেত্রে চিত্রটা কিছুটা ভিন্ন। এখানে সোনা এবং সেনসেক্সের মধ্যে রিটার্নের একটি তুলনামূলক সারণি দেওয়া হলো:
| সময়কাল | সোনা (CAGR) | সেনসেক্স (CAGR) |
|---|---|---|
| ১০ বছর | ১২.৭% | ১২.৭% |
| ১৫ বছর | ৭.৭% | ১০% |
| ২০ বছর | ১১% | ১২% |
| ২৫ বছর | ১১.৫% | ১৩% |
এই ডেটা থেকে বোঝা যায় যে দীর্ঘমেয়াদে, ইক্যুইটি সামান্য হলেও সোনার চেয়ে ভালো পারফর্ম করেছে। সেনসেক্স এবং সোনার রিটার্নের মধ্যে পার্থক্য খুব বেশি না হলেও, ২৫ বছরের মতো দীর্ঘ সময়ে এই ১.৫% পার্থক্য একটি বড় অঙ্কের ব্যবধান তৈরি করতে পারে।
বিনিয়োগকারীদের জন্য সতর্কতা
সোনায় বিনিয়োগের আগে একটি বিষয় মাথায় রাখা উচিত। ইতিহাসে দেখা গেছে, সোনা দীর্ঘ সময় ধরে স্থবির থাকতে পারে বা এমনকি নেতিবাচক রিটার্নও দিতে পারে। উদাহরণস্বরূপ, ১৯৮০ সালের নভেম্বরে সোনার দাম ছিল $৬০০, কিন্তু এই স্তরটি পুনরায় ফিরে পেতে ২০০৬ সালের মার্চ পর্যন্ত সময় লেগেছিল, অর্থাৎ প্রায় ২৫ বছর।
বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ: কী করা উচিত?
ইতিহাস বলছে, অর্থনৈতিক এবং ভূ-রাজনৈতিক অনিশ্চয়তার সময়ে সোনা একটি নিরাপদ বিনিয়োগ হিসাবে কাজ করে। সাম্প্রতিককালে সোনার দাম বাড়ার অন্যতম কারণ হলো বিশ্বের বিভিন্ন কেন্দ্রীয় ব্যাংকগুলির দ্বারা সোনা কেনার প্রবণতা বৃদ্ধি।
আসল প্রশ্নটি ‘সোনা বনাম ইক্যুইটি’ হওয়া উচিত নয়। আর্থিক পরিকল্পনাকারীরা প্রায়শই পরামর্শ দেন যে একজন খুচরা বিনিয়োগকারীর মোট বিনিয়োগ পোর্টফোলিওর ১০% থেকে ১৫% সোনায় বিনিয়োগ করা উচিত। এটি পোর্টফোলিওকে স্থিতিশীলতা প্রদান করে। ধাতব সোনা কেনার পরিবর্তে গোল্ড ইটিএফ (Gold ETFs)-এর মাধ্যমে বিনিয়োগ করা কম ব্যয়বহুল এবং সুবিধাজনক বিকল্প হতে পারে।
Disclaimer: এই প্রতিবেদনটি শুধুমাত্র তথ্যের উদ্দেশ্যে প্রকাশিত। এটি কোনো বিনিয়োগের পরামর্শ নয়। যেকোনো বিনিয়োগের সিদ্ধান্ত নেওয়ার আগে অনুগ্রহ করে একজন প্রত্যয়িত আর্থিক উপদেষ্টার সাথে পরামর্শ করুন।