High-Value Transactions: এই ১১টি লেনদেন করলে আসতে পারে আয়কর নোটিশ! জেনে নিন আয়কর দপ্তরের নিয়ম

High-Value Transactions: আজকাল আমরা অনেকেই নানা ধরনের ডিজিটাল লেনদেনে অভ্যস্ত হয়ে উঠেছি। কিন্তু আপনি কি জানেন, কিছু বড় অঙ্কের লেনদেন আয়কর দপ্তরের কড়া নজরে থাকে? যদি আপনার আয় এবং লেনদেনের মধ্যে কোনো অসঙ্গতি পাওয়া যায়, তাহলে আয়কর দপ্তর আপনাকে নোটিশ পাঠাতে পারে। এই ধরনের পরিস্থিতি এড়ানোর জন্য কোন কোন লেনদেনের উপর বিশেষ নজর রাখা উচিত, তা জেনে নেওয়া অত্যন্ত জরুরি।
আয়কর আইন অনুযায়ী, সমস্ত ব্যাঙ্ক, মিউচুয়াল ফান্ড হাউস, ব্রোকার প্ল্যাটফর্ম এবং সম্পত্তি রেজিস্ট্রারদের মতো আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলিকে একটি নির্দিষ্ট সীমার বেশি বড় অঙ্কের লেনদেনের তথ্য আয়কর দপ্তরের কাছে জমা দিতে হয়। এই প্রক্রিয়াটিকে বলা হয় স্টেটমেন্ট অফ ফিনান্সিয়াল ট্রানজ্যাকশন (SFT)। এর মাধ্যমে আয়কর দপ্তর কর ফাঁকি দেওয়ার ঘটনাগুলি সহজেই চিহ্নিত করতে পারে।
যে ১১টি বড় অঙ্কের লেনদেনের উপর আয়কর দপ্তরের নজর থাকে:
আয়কর ফাঁকি রুখতে এবং স্বচ্ছতা বজায় রাখতে, আয়কর দপ্তর মূলত ১১ ধরনের বড় অঙ্কের লেনদেনের উপর নজর রাখে। আসুন, এই লেনদেনগুলি সম্পর্কে বিস্তারিত জেনে নেওয়া যাক:
- সেভিংস অ্যাকাউন্টে নগদ জমা: যদি আপনি এক আর্থিক বছরে আপনার সেভিংস অ্যাকাউন্টে ১০ লক্ষ টাকা বা তার বেশি নগদ জমা করেন, তবে ব্যাঙ্ক সেই তথ্য আয়কর দপ্তরকে জানায়।
- কারেন্ট অ্যাকাউন্টে লেনদেন: এক আর্থিক বছরে যদি কোনো কারেন্ট অ্যাকাউন্টে ৫০ লক্ষ টাকা বা তার বেশি নগদ জমা বা তোলা হয়, তাহলে সেই তথ্যও আয়কর দপ্তরের কাছে পৌঁছায়।
- সম্পত্তি ক্রয়-বিক্রয়: ৩০ লক্ষ টাকা বা তার বেশি মূল্যের কোনো স্থাবর সম্পত্তি ক্রয় বা বিক্রয় করলে, সেই লেনদেনের তথ্য আয়কর দপ্তরের নজরে থাকে।
- শেয়ার, মিউচুয়াল ফান্ড বা বন্ডে বিনিয়োগ: যদি আপনি শেয়ার, মিউচুয়াল ফান্ড বা বন্ডে ১০ লক্ষ টাকা বা তার বেশি নগদ বিনিয়োগ করেন, তবে সেই তথ্য আয়কর দপ্তরকে জানানো হয়।
- ক্রেডিট কার্ড বিল পেমেন্ট: যদি আপনি নগদে এক লক্ষ টাকার বেশি ক্রেডিট কার্ডের বিল মেটান, অথবা অন্য কোনো মাধ্যমে ১০ লক্ষ টাকার বেশি বিল পেমেন্ট করেন, তবে আয়কর দপ্তর সেই বিষয়ে অবগত থাকে।
- ফিক্সড বা রেকারিং ডিপোজিট: ফিক্সড বা রেকারিং ডিপোজিটে এক আর্থিক বছরে ১০ লক্ষ টাকা বা তার বেশি নগদ জমা করলেও তা আয়কর দপ্তরের নজরে আসে।
- বিদেশি মুদ্রা বিনিময়: যদি আপনি এক আর্থিক বছরে ১০ লক্ষ টাকা বা তার বেশি মূল্যের বিদেশি মুদ্রা কেনেন, তবে সেই তথ্যও আয়কর দপ্তরের কাছে যায়।
- ডিমান্ড ড্রাফট এবং প্রি-পেইড ইনস্ট্রুমেন্ট: ডিমান্ড ড্রাফট বা রিজার্ভ ব্যাঙ্কের প্রি-পেইড ইনস্ট্রুমেন্ট কেনার জন্য যদি ১০ লক্ষ টাকা বা তার বেশি নগদ ব্যবহার করা হয়, তাহলে সেটিও আয়কর দপ্তরের পর্যবেক্ষণে থাকে।
- বিদেশ ভ্রমণ: যদি আপনি বিদেশ ভ্রমণের জন্য ২ লক্ষ টাকা বা তার বেশি খরচ করেন, তাহলে সেই তথ্যও আয়কর দপ্তরের নজরে আসতে পারে।
- বিদ্যুৎ বিল: যদি আপনার বার্ষিক বিদ্যুৎ বিল ১ লক্ষ টাকা বা তার বেশি হয়, তাহলে আয়কর দপ্তর সেই বিষয়েও খোঁজখবর নিতে পারে।
আপনার সমস্ত বড় অঙ্কের লেনদেনের তথ্য আপনার ফর্ম 26AS এবং অ্যানুয়াল ইনফরমেশন স্টেটমেন্টে (AIS) নথিভুক্ত থাকে। আয়কর রিটার্ন (ITR) ফাইল করার আগে এই দুটি ফর্ম ভালোভাবে মিলিয়ে দেখা উচিত। যদি আপনার দেওয়া তথ্যের সঙ্গে এই ফর্মের তথ্যে কোনো গরমিল পাওয়া যায়, তাহলে আয়কর দপ্তর আপনাকে নোটিশ পাঠাতে পারে। তাই, সমস্ত বড় অঙ্কের লেনদেনের নথি সাবধানে গুছিয়ে রাখা বুদ্ধিমানের কাজ।