Income Tax: ১৪.৬৫ লক্ষ টাকা পর্যন্ত ট্যাক্স ফ্রী, নতুন নিয়মে কীভাবে সম্ভব, জানুন!

Income Tax: কেন্দ্রীয় বাজেট ২০২৫-এ ঘোষিত নতুন আয়কর নিয়মাবলী অনুসারে, নির্দিষ্ট পরিস্থিতিতে বার্ষিক ₹১৪.৬৫ লক্ষ পর্যন্ত বেতনভোগী কর্মচারীরা কোনও আয়কর ছাড়াই সম্পূর্ণ বেতন তুলতে পারবেন। এই সুবিধা মূলত নতুন কর কাঠামোর অধীনে বর্ধিত ছাড় এবং কিছু নির্দিষ্ট কর-সঞ্চয়কারী ব্যবস্থার সমন্বয়ে সম্ভব হচ্ছে। আসুন, এই নতুন নিয়ম এবং গণনা বিস্তারিতভাবে জেনে নেওয়া যাক।
নতুন কর কাঠামোর মূল পরিবর্তন (FY 2025-26):
অর্থবর্ষ ২০২৫-২৬ (মূল্যায়ন বর্ষ ২০২৬-২৭) থেকে কার্যকর হওয়া নতুন কর কাঠামোয় বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ পরিবর্তন আনা হয়েছে:
- আয়কর ছাড়ের সীমা বৃদ্ধি: নতুন ব্যবস্থায়, বার্ষিক ₹১২ লক্ষ পর্যন্ত করযোগ্য আয়ের উপর কোনও কর দিতে হবে না। এটি ধারা 87A-এর অধীনে ₹৬০,০০০ পর্যন্ত বর্ধিত ছাড়ের কারণে সম্ভব হয়েছে।
- স্ট্যান্ডার্ড ডিডাকশন: বেতনভোগী কর্মচারীদের জন্য স্ট্যান্ডার্ড ডিডাকশনের পরিমাণ ₹৫০,০০০ থেকে বাড়িয়ে ₹৭৫,০০০ করা হয়েছে। অর্থাৎ, আপনার মোট বেতন থেকে সরাসরি ₹৭৫,০০০ বাদ দিয়ে করযোগ্য আয় গণনা করা হবে। এর ফলে, বেতনভোগীরা ₹১২.৭৫ লক্ষ (₹১২ লক্ষ + ₹৭৫,০০০) পর্যন্ত আয়ের উপর কার্যকরভাবে শূন্য করের সুবিধা পেয়ে যাচ্ছেন।
- নতুন আয়কর স্ল্যাব (FY 2025-26):
- ₹৪ লক্ষ পর্যন্ত: ০%
- ₹৪ লক্ষ থেকে ₹৮ লক্ষ: ৫%
- ₹৮ লক্ষ থেকে ₹১২ লক্ষ: ১০%
- ₹১২ লক্ষ থেকে ₹১৬ লক্ষ: ১৫%
- ₹১৬ লক্ষ থেকে ₹২০ লক্ষ: ২০%
- ₹২০ লক্ষ থেকে ₹২৪ লক্ষ: ২৫%
- ₹২৪ লক্ষের বেশি: ৩০%
কীভাবে ₹১৪.৬৫ লক্ষ পর্যন্ত বেতন করমুক্ত সম্ভব?
এবার দেখা যাক কীভাবে একজন বেতনভোগী কর্মচারী, যার বার্ষিক CTC (Cost To Company) ₹১৪.৬৫ লক্ষ, তিনি নতুন কর কাঠামোয় শূন্য আয়কর দিতে পারেন। এর জন্য কিছু শর্ত প্রযোজ্য:
- বেসিক বেতন: গণনাটি সাধারণত বেসিক বেতনের একটি নির্দিষ্ট শতাংশের উপর নির্ভর করে (যেমন, CTC-এর ৫০%)।
- নিয়োগকর্তার EPF কন্ট্রিবিউশন: যদি আপনার নিয়োগকর্তা আপনার বেসিক বেতনের ১২% এমপ্লয়িজ প্রভিডেন্ট ফান্ডে (EPF) জমা দেন, তবে সেই পরিমাণ অর্থ করমুক্ত।
- নিয়োগকর্তার NPS কন্ট্রিবিউশন: যদি আপনার নিয়োগকর্তা আপনার বেসিক বেতনের ১৪% ন্যাশনাল পেনশন সিস্টেমে (NPS) ধারা 80CCD(2)-এর অধীনে জমা দেন, তবে সেই পরিমাণ অর্থও করযোগ্য আয় থেকে বাদ যাবে।
একটি উদাহরণসহ গণনা:
ধরুন, আপনার বার্ষিক CTC ₹১৪,৬৫,০০০।
এবং বেসিক বেতন CTC-এর ৫০% = ₹৭,৩২,৫০০।
- নিয়োগকর্তার EPF কন্ট্রিবিউশন (১২%): ₹৭,৩২,৫০০ * ১২% = ₹৮৭,৯০০ (করমুক্ত)
- নিয়োগকর্তার NPS কন্ট্রিবিউশন (১৪%): ₹৭,৩২,৫০০ * ১৪% = ₹১,০২,৫৫০ (ধারা 80CCD(2) অনুযায়ী করযোগ্য আয় থেকে বাদ)
এখন, করযোগ্য আয় গণনা করা যাক:
মোট CTC: ₹১৪,৬৫,০০০
বাদ: নিয়োগকর্তার EPF কন্ট্রিবিউশন: ₹৮৭,৯০০
বেতন যা কর গণনার জন্য বিবেচিত হবে: ₹১৪,৬৫,০০০ – ₹৮৭,৯০০ = ₹১৩,৭৭,১০০
এই বেতন থেকে নিম্নলিখিতগুলি বাদ যাবে:
বাদ: স্ট্যান্ডার্ড ডিডাকশন: ₹৭৫,০০০
বাদ: নিয়োগকর্তার NPS কন্ট্রিবিউশন: ₹১,০২,৫৫০
সুতরাং, চূড়ান্ত করযোগ্য আয়:
₹১৩,৭৭,১০০ – ₹৭৫,০০০ – ₹১,০২,৫৫০ = ₹১১,৯৯,৫৫০
যেহেতু এই করযোগ্য আয় ₹১২ লক্ষের কম, নতুন নিয়ম অনুযায়ী ধারা 87A-এর অধীনে সম্পূর্ণ রিবেট পাওয়ার ফলে কোনও আয়কর দিতে হবে না।
গুরুত্বপূর্ণ বিষয়:
- এই গণনা নির্দিষ্ট অনুমান এবং শর্তের উপর ভিত্তি করে করা হয়েছে, যেমন – বেসিক বেতনের পরিমাণ এবং নিয়োগকর্তার তরফ থেকে EPF ও NPS-এ উল্লিখিত হারে কন্ট্রিবিউশন। আপনার ক্ষেত্রে এই পরিমাণ ভিন্ন হলে করযোগ্য আয়ের পরিবর্তন হতে পারে।
- নতুন কর কাঠামো এখন ডিফল্ট বিকল্প। তবে আপনি চাইলে পুরনো কর কাঠামোও বেছে নিতে পারেন, যদি সেটি আপনার জন্য বেশি লাভজনক হয়।
- আপনার আর্থিক পরিকল্পনা করার আগে একজন কর বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নেওয়া বুদ্ধিমানের কাজ হবে।
এই নতুন পরিবর্তনগুলি বেতনভোগী শ্রেণীর জন্য নিঃসন্দেহে স্বস্তিদায়ক এবং এটি তাদের সঞ্চয় ও ব্যয় ক্ষমতা বৃদ্ধিতে সহায়ক হবে।