Primary Teacher Case: নতুন প্রাথমিক শিক্ষক নিয়োগ নিয়ে হাইকোর্টে মামলা দায়ের, আবার কি মামলার জালে আটকে যাবে নিয়োগ?

Primary Teacher Case: পশ্চিমবঙ্গে প্রাথমিক শিক্ষক নিয়োগের নতুন বিজ্ঞপ্তি (২০২৫) ঘিরে ফের শুরু হয়েছে জটিলতা। ১৩,৪২১টি শূন্যপদে নিয়োগ প্রক্রিয়ায় অংশ নেওয়ার সুযোগ থেকে বাদ পড়ায়, ১৮ মাসের ডি.এল.এড ডিগ্রিধারী (NIOS) প্রার্থীরা কলকাতা হাইকোর্টের দ্বারস্থ হয়েছেন। সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ থাকা সত্ত্বেও কেন তাঁদের সুযোগ দেওয়া হচ্ছে না, সেই প্রশ্ন তুলে এবার জরুরি ভিত্তিতে মামলা দায়ের করা হয়েছে। এই গুরুত্বপূর্ণ আইনি পদক্ষেপ এবং এর সম্ভাব্য প্রভাব সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করা হলো।
নিয়োগ বিজ্ঞপ্তিতে NIOS-এর অনুপস্থিতি: মূল সমস্যা কোথায়?
- সমস্যা: পশ্চিমবঙ্গ প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদ কর্তৃক প্রকাশিত ২০২৫ সালের নিয়োগ বিজ্ঞপ্তিতে যে পাঁচটি যোগ্যতার মাপকাঠি দেওয়া হয়েছে, সেখানে স্পষ্টভাবে এনআইওএস-এর ১৮ মাসের ডি.এল.এড ডিগ্রি-কে অন্তর্ভুক্ত করা হয়নি।
- আইনি প্রশ্ন: NIOS প্রার্থীরা জানিয়েছেন, সুপ্রিম কোর্টের একাধিক নির্দেশ থাকা সত্ত্বেও এনআইওএসদের বাদ দেওয়াটা পুরোপুরি অযৌক্তিক। এর ফলে নতুন করে আইনি জটের সৃষ্টি হয়েছে, যা নিয়োগ প্রক্রিয়াকে প্রভাবিত করতে পারে।
Related Posts
অতীতের প্রেক্ষাপট: ২০২২ সালের নিয়োগ ও সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ
এনআইওএস ডিগ্রিধারীদের নিয়ে আইনি টানাপোড়েন এটাই প্রথম নয়। এর আগেও বিষয়টি আদালত পর্যন্ত গড়িয়েছে।
- প্রথমে অংশগ্রহণ: ২০২২ সালের নিয়োগ প্রক্রিয়ায় এনআইওএস প্রার্থীরা বোর্ডের অনুমতিতেই অংশগ্রহণ করেছিলেন।
- পরে বাদ পড়া: রেগুলার ডি.এল.এড হোল্ডারদের মামলার ভিত্তিতে হাইকোর্ট পরবর্তীতে তাঁদের বাদ দিলেও, সুপ্রিম কোর্ট থেকে আসে ইতিবাচক বার্তা।
- সুপ্রিম কোর্টের রায়: জয়বীর সিং মামলার রিভিউ এবং পশ্চিমবঙ্গ থেকে করা মামলায় সুপ্রিম কোর্ট স্পষ্টভাবে জানায় যে এনআইওএস ডিগ্রিধারীদের নিয়োগ প্রক্রিয়ায় অংশ নিতে কোনো বাধা নেই। এমনকি সুপ্রিম কোর্ট ৩ মাসের মধ্যে ডকুমেন্ট ভেরিফিকেশন হওয়া প্রার্থীদের চাকরি দেওয়ার নির্দেশ দিলেও, সেই তালিকা এখনও প্রকাশিত হয়নি।
বর্তমান আইনি পদক্ষেপ ও প্রত্যাশা
২০২৫ সালের বিজ্ঞপ্তিতে বাদ পড়ায় এনআইওএস প্রার্থীরা দ্রুততার সাথে আদালতে প্রতিকার চাইছেন।
- আদালতে আবেদন: প্রার্থীরা জরুরি ভিত্তিতে হাইকোর্টের ভ্যাকেশন বেঞ্চে মামলাটি তোলার প্রস্তুতি নিচ্ছেন। বিচারপতিদের ভ্যাকেশন বেঞ্চে আগামী ৯ তারিখে এর শুনানি করানোর আর্জি জানানো হবে।
- মামলার মূল যুক্তি: অ্যাডভোকেট স্যার জোর দিয়ে বলেছেন যে সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশকে অগ্রাহ্য করে এনআইওএস প্রার্থীদের বাদ দেওয়া যায় না। তাঁর মতে, অংশগ্রহণ করার সুযোগ পাওয়াটা প্রথম ধাপ, ডকুমেন্ট ভেরিফিকেশন তার পরের পর্যায়।
- আইনজীবীর আশাবাদ: আইনজীবী মহলে এই বিষয়ে যথেষ্ট আশাবাদ রয়েছে যে এনআইওএস প্রার্থীরা নিয়োগ প্রক্রিয়ায় অংশগ্রহণের সুযোগ পাবেন।
চাকরিপ্রার্থীদের জন্য করণীয়
এই পরিস্থিতিতে চাকরিপ্রার্থীদের জন্য কিছু গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ:
- আইনি ফলাফলের উপর নজর: সকল এনআইওএস ডিগ্রিধারীদের আদালতের রায়ের দিকে নিবিড় নজর রাখতে হবে এবং তাদের আইনি প্রতিনিধিদলের সাথে যোগাযোগ বজায় রাখা উচিত।
- প্রস্তুতি বজায় রাখা: মামলা চলাকালীনও নিয়োগের জন্য প্রয়োজনীয় সকল প্রস্তুতি (টেট স্কোর, অন্যান্য নথি) প্রস্তুত রাখতে হবে, যাতে সুযোগ পাওয়া মাত্র দ্রুত অংশগ্রহণ করা যায়।
- ইউনিটি বজায় রাখা: সম্মিলিতভাবে আইনি লড়াইয়ের পক্ষকে সমর্থন করা এই মুহূর্তে খুবই জরুরি।
পশ্চিমবঙ্গের প্রাথমিক শিক্ষক নিয়োগে NIOS D.El.Ed ডিগ্রিধারীদের বসার অধিকার নিয়ে আইনি লড়াই এখন এক গুরুত্বপূর্ণ মোড়ে। সুপ্রিম কোর্টের পূর্ববর্তী রায় থাকার কারণে, এই মামলা প্রাথমিক শিক্ষকদের নিয়োগ প্রক্রিয়ার ভবিষ্যতের জন্য একটি নির্ণায়ক ভূমিকা নিতে পারে। আগামী দিনের আদালতের সিদ্ধান্তই নির্ধারণ করবে এনআইওএস প্রার্থীরা নতুন নিয়োগ প্রক্রিয়ায় অংশ নিতে পারবেন কিনা।