Primary Teacher: ব্রেকিং! ৪২,৯৪৯ শিক্ষকের প্যানেল সংশোধনের নির্দেশ হাইকোর্টের! প্রাথমিকে বিরাট রদবদল?

Primary Teacher: এক যুগান্তকারী নির্দেশে, কলকাতা হাইকোর্ট পশ্চিমবঙ্গ প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদকে ৪২,৯৪৯ জন শিক্ষকের সম্পূর্ণ প্যানেলটি সংশোধন করে চার সপ্তাহের মধ্যে নতুনভাবে প্রকাশ করার নির্দেশ দিয়েছে। বিচারপতি সৌগত ভট্টাচার্যের এই নির্দেশ ২০১৭ সালের প্রাথমিক শিক্ষক নিয়োগ প্রক্রিয়ায় স্বচ্ছতা ফেরানোর একটি বিশাল পদক্ষেপ বলে মনে করা হচ্ছে। এই রায়ের কেন্দ্রে রয়েছে প্রশিক্ষিত প্রার্থীদের নম্বর এবং স্ট্যাটাস সংক্রান্ত গরমিল, যার ফলে হাজার হাজার শিক্ষকের ভবিষ্যৎ নতুন করে পর্যালোচনার অধীনে চলে এল।
কেন এই সংশোধনের নির্দেশ?
এই ঐতিহাসিক রায়ের উৎস একটি মামলা, যেখানে একজন প্রশিক্ষিত শিক্ষক হওয়া সত্ত্বেও পর্ষদের তালিকায় তাঁকে প্রশিক্ষণহীন হিসেবে দেখানো হয়েছিল। যদিও পরবর্তীকালে তাঁর স্ট্যাটাস সংশোধন করে প্রশিক্ষিত শিক্ষকের বেতনক্রম দেওয়া হয়, কিন্তু পর্ষদের অফিসিয়াল ব্রেক-আপ মার্কশিটে সেই ভুল থেকে যায়। এর ফলেই ৩২,০০০ বিতর্কিত প্রশিক্ষণহীন শিক্ষকের তালিকায় তাঁর নাম অন্তর্ভুক্ত হওয়ার আশঙ্কা তৈরি হয়। এই অসামঞ্জস্য দূর করতেই আবেদনকারী আদালতের দ্বারস্থ হন। আবেদনকারীর প্রধান দাবি ছিল, পর্ষদের রেকর্ডে তাঁর তথ্য সংশোধন করা হোক এবং সেই অনুযায়ী একটি পরিমার্জিত তালিকা প্রকাশ করা হোক।
আদালতের সুস্পষ্ট নির্দেশ
মামলার শুনানি শেষে, বিচারপতি সৌগত ভট্টাচার্য পশ্চিমবঙ্গ প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদকে কয়েকটি সুস্পষ্ট নির্দেশ দিয়েছেন:
- ভুল সংশোধন: আবেদনকারীকে অবিলম্বে প্রশিক্ষিত প্রার্থী হিসাবে গণ্য করে পর্ষদের সমস্ত রেকর্ড সংশোধন করতে হবে।
- সম্পূর্ণ প্যানেল পুনঃপ্রকাশ: সবচেয়ে তাৎপর্যপূর্ণ নির্দেশটি হলো, শুধুমাত্র আবেদনকারীর তথ্যই নয়, বরং ৪২,৯৪৯ জনের সম্পূর্ণ প্যানেলটি পুঙ্খানুপুঙ্খভাবে খতিয়ে দেখে সংশোধন করতে হবে।
- সময়সীমা: এই সম্পূর্ণ প্রক্রিয়াটি শেষ করে একটি সংশোধিত ও পরিমার্জিত প্যানেল আগামী চার সপ্তাহের মধ্যে জনসমক্ষে প্রকাশ করার জন্য সময়সীমা বেঁধে দেওয়া হয়েছে।
এই রায়ের প্রভাব কী হতে পারে?
হাইকোর্টের এই নির্দেশ শুধুমাত্র একজন আবেদনকারীর জয় নয়, এর প্রভাব সুদূরপ্রসারী এবং রাজ্যের শিক্ষা ব্যবস্থায় একটি বড় পরিবর্তনের ইঙ্গিত দিচ্ছে:
- হাজার হাজার শিক্ষকের স্বস্তি: যে সমস্ত প্রশিক্ষিত শিক্ষককে ভুলবশত প্রশিক্ষণহীন দেখানো হয়েছিল, তাঁরা এই রায়ে ন্যায়বিচার পাবেন। তাঁদের সঠিক মর্যাদা পুনঃপ্রতিষ্ঠিত হবে।
- স্বচ্ছতা বৃদ্ধি: এই রায় নিয়োগ প্রক্রিয়ায় স্বচ্ছতা আনতে পর্ষদকে বাধ্য করবে। প্রতিটি প্রার্থীর যোগ্যতা এবং নম্বর সঠিকভাবে যাচাই করার গুরুত্ব আরও একবার প্রতিষ্ঠিত হলো।
- ভবিষ্যৎ নির্ধারণ: সংশোধিত প্যানেল প্রকাশের পর অনেক শিক্ষকের অবস্থান এবং ভবিষ্যতের উপর তার প্রভাব পড়বে। কারা তালিকায় থাকবেন এবং কারা বাদ পড়বেন, তা নিয়ে নতুন করে জল্পনা শুরু হয়েছে।
পশ্চিমবঙ্গের প্রাথমিক শিক্ষা ক্ষেত্রে এই রায় একটি মাইলফলক। এখন সমস্ত নজর প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদের দিকে, তারা কীভাবে আদালতের এই নির্দেশ মেনে একটি ত্রুটিমুক্ত তালিকা প্রকাশ করে, তার উপরেই রাজ্যের হাজার হাজার শিক্ষকের ভবিষ্যৎ নির্ভর করছে।