New Land Rules: জমির মালিকানা নিয়ে সুপ্রিম কোর্টের বড় রায়! শুধু রেজিস্ট্রেশন থাকলেই কি আপনি আসল মালিক? জানুন বিস্তারিত
New Land Rules: স্থাবর সম্পত্তির মালিকানা নিয়ে একটি যুগান্তকারী পর্যবেক্ষণে, সুপ্রিম কোর্ট স্পষ্ট জানিয়েছে যে কোনও স্থাবর সম্পত্তি ক্রয়ের দলিল রেজিস্ট্রি করা হলেই তা মালিকানার নিশ্চিত গ্যারান্টি দেয় না। এই রেজিস্ট্রেশন শুধুমাত্র একটি লেনদেনের পাবলিক রেকর্ড হিসাবে কাজ করে এবং এর একটি অনুমানমূলক প্রমাণমূলক মূল্য (presumptive evidentiary value) রয়েছে, তবে এটি মালিকানার চূড়ান্ত প্রমাণ নয়।
বিচারপতি পি.এস. নরসিমহা এবং বিচারপতি জয়মাল্য বাগচীর দুই সদস্যের বেঞ্চ এই গুরুত্বপূর্ণ রায় দিয়েছে। এই মামলাটি পাটনা হাইকোর্টের একটি রায়কে চ্যালেঞ্জ করে দায়ের করা হয়েছিল, যেখানে বিহার রেজিস্ট্রেশন রুলস, ২০০৮-এর কিছু সংশোধিত নিয়মকে চ্যালেঞ্জ করা হয়েছিল।
রেজিস্ট্রেশন এবং মালিকানার মধ্যে পার্থক্য
সুপ্রিম কোর্টের বেঞ্চ ব্যাখ্যা করেছে যে ভারতের আইনি ব্যবস্থায় দীর্ঘকাল ধরে মালিকানা এবং রেজিস্ট্রেশনের মধ্যে একটি বিভেদ রয়েছে। বেঞ্চের মতে:
- ট্রান্সফার অফ প্রপার্টি অ্যাক্ট (Transfer of Property Act): এটি স্থাবর সম্পত্তি ক্রয়-বিক্রয়ের জন্য আইনি কাঠামো প্রদান করে।
- স্ট্যাম্প অ্যাক্ট (Stamp Act): এটি রেজিস্ট্রেশনের পূর্বশর্ত হিসাবে হস্তান্তরযোগ্য সম্পত্তির উপর একটি আর্থিক চার্জ আরোপ করে।
- রেজিস্ট্রেশন অ্যাক্ট (Registration Act): এটি লেনদেনের একটি পাবলিক রেকর্ড তৈরি করার জন্য নথি নিবন্ধীকরণের প্রক্রিয়াকে প্রাতিষ্ঠানিক রূপ দেয়।
আদালত জোর দিয়ে বলেছে, “রেজিস্ট্রেশন অ্যাক্ট নথির রেজিস্ট্রেশন বাধ্যতামূলক করে, টাইটেলের নয়। এই পার্থক্যটিই আমাদের দেশের অনুমানমূলক টাইটেলিং সিস্টেমের মূল ভিত্তি। তাই, রেজিস্ট্রেশন মালিকানার চূড়ান্ত প্রমাণ হিসাবে গণ্য হতে পারে না।”
সবার আগে খবরের আপডেট পান!
টেলিগ্রামে যুক্ত হনবিহার রেজিস্ট্রেশন রুলস সংক্রান্ত বিতর্ক
বিহার রেজিস্ট্রেশন রুলস, ২০০৮-এ ২০১৯ সালের একটি সংশোধনীতে দুটি নতুন উপ-বিধি (xvii এবং xviii) যুক্ত করা হয়েছিল। এই নিয়ম অনুসারে, বিক্রেতার নামে সম্পত্তির মিউটেশনের প্রমাণ (mutation) ছাড়া কোনও দলিল রেজিস্ট্রি করা যাবে না। রেজিস্টারিং কর্তৃপক্ষকে এই কারণে রেজিস্ট্রেশন প্রত্যাখ্যান করার ক্ষমতা দেওয়া হয়েছিল। এই নিয়মকেই সুপ্রিম কোর্টে চ্যালেঞ্জ করা হয়েছিল।
সুপ্রিম কোর্টের পর্যবেক্ষণ ও রায়
সুপ্রিম কোর্ট এই বিষয়ে তার পর্যবেক্ষণে জানিয়েছে যে, মিউটেশন এবং সার্ভে ও সেটেলমেন্টের প্রক্রিয়া সম্পূর্ণ না হওয়ায় একটি বড় ব্যবধান রয়েছে। আদালত বলেছে:
- এই পরিস্থিতিতে, জমাবন্দি বা হোল্ডিং অ্যালটমেন্ট না হওয়া পর্যন্ত রেজিস্ট্রেশন আটকে রাখা বেআইনি। কারণ এটি সম্পত্তি ক্রয় ও বিক্রয়ের অধিকার এবং স্বাধীনতার উপর সরাসরি প্রভাব ফেলে।
- আদালত আরও মনে করে যে কোনও নিয়ম যা সম্পত্তির সহজ এবং কার্যকর হস্তান্তরকে বাধা দেয় বা সীমাবদ্ধ করে তা বেআইনি। কারণ এটি ‘সম্পত্তি থেকে বঞ্চিত’ করার সামিল।
- এই কারণে, আদালত বিহার রেজিস্ট্রেশন রুলস-এর উপ-বিধি ১৯ (xvii) এবং (xviii)-কে স্বেচ্ছাচারী এবং বেআইনি বলে ঘোষণা করেছে এবং সেগুলিকে বাতিল করে দিয়েছে।
আদালত আরও উল্লেখ করেছে যে একজন সম্ভাব্য ক্রেতাকে অনেক বেশি সতর্ক থাকতে হয়। তাকে কমপক্ষে ৩০ বছর বা তারও বেশি সময়ের মালিকানার ইতিহাস খতিয়ে দেখতে হয় এবং সাব-রেজিস্ট্রার অফিস থেকে ‘নো এনকামব্রেন্স’ সার্টিফিকেট (no encumbrance certificate) নিতে হয়, যাতে নিশ্চিত হওয়া যায় যে সম্পত্তিটি কোনও আইনি দায় বা বন্ধক থেকে মুক্ত।