SEBI New Rules: শেয়ার বাজারে বড় পরিবর্তন! ১ অক্টোবর থেকে বদলে যাচ্ছে ট্রেডিংয়ের নিয়ম!

SEBI New Rules: ইন্ট্রাডে ট্রেডারদের জন্য সেবির নতুন নিয়ম, ১ অক্টোবর থেকে কার্যকর হচ্ছে। এই নতুন নিয়মগুলি ভারতীয় স্টক মার্কেটের ডেরিভেটিভস সেগমেন্টে ট্রেডিংয়ের ক্ষেত্রে একটি বড় পরিবর্তন আনবে। ভারতীয় সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ বোর্ড (SEBI) এই পদক্ষেপ নিয়েছে ইন্ট্রাডে ট্রেডিংয়ে অতিরিক্ত ঝুঁকি এবং অস্থিরতা কমানোর জন্য। আসুন বিস্তারিতভাবে জেনে নেওয়া যাক এই নতুন নিয়মগুলি কী এবং এর ফলে বিনিয়োগকারীদের উপর কী প্রভাব পড়বে।
নতুন নিয়মাবলী কী?
SEBI-এর এই নতুন নিয়মগুলি মূলত ইক্যুইটি ইনডেক্স ডেরিভেটিভসে ট্রেডিংয়ের জন্য পজিশন লিমিটের উপর আরোপ করা হয়েছে। এর প্রধান উদ্দেশ্য হল বড় ট্রেডিং সংস্থাগুলির দ্বারা বাজারে সৃষ্ট হওয়া আকস্মিক অস্থিরতা রোধ করা, বিশেষ করে অপশন এক্সপায়ারির দিনগুলিতে।
মূল পরিবর্তনগুলি হল:
- নেট ইন্ট্রাডে পজিশন লিমিট: এখন থেকে কোনও একটি ট্রেডিং সংস্থা ইন্ট্রাডে ট্রেডিংয়ের সময় সর্বাধিক ₹৫,০০০ কোটি টাকার নেট পজিশন রাখতে পারবে। এটি আগের তুলনায় একটি গুরুত্বপূর্ণ নিয়ন্ত্রণমূলক পদক্ষেপ।
- গ্রস ইন্ট্রাডে পজিশন লিমিট: সংস্থাগুলির জন্য গ্রস পজিশন লিমিট নির্ধারণ করা হয়েছে ₹১০,০০০ কোটি টাকা। এই নিয়মটি লং এবং শর্ট উভয় পজিশনের জন্য আলাদাভাবে প্রযোজ্য হবে।
- কঠোর নিরীক্ষণ: এই নিয়মগুলি সঠিকভাবে পালন করা হচ্ছে কিনা তা নিশ্চিত করার জন্য স্টক এক্সচেঞ্জগুলিকে আরও সক্রিয় ভূমিকা নিতে হবে। ট্রেডিং চলাকালীন সময়ে অন্তত চারটি র্যান্ডম স্ন্যাপশট নিয়ে পজিশন লিমিট নিরীক্ষণ করা হবে। এর মধ্যে একটি স্ন্যাপশট দুপুর ২:৪৫ থেকে ৩:৩০ মিনিটের মধ্যে নেওয়া বাধ্যতামূলক, কারণ এই সময়ে বাজারে ট্রেডিংয়ের চাপ সবচেয়ে বেশি থাকে।
বিনিয়োগকারীদের উপর এর প্রভাব কী হবে?
এই নতুন নিয়মাবলী খুচরা এবং প্রাতিষ্ঠানিক উভয় প্রকার বিনিয়োগকারীদের জন্যই গুরুত্বপূর্ণ।
- খুচরা বিনিয়োগকারীদের জন্য: ছোট বিনিয়োগকারীদের জন্য এটি একটি ইতিবাচক পদক্ষেপ। বড় সংস্থাগুলির বিশাল ট্রেডের কারণে বাজারে যে আকস্মিক ওঠানামা দেখা যেত, তা এখন কমবে। এর ফলে বাজার আরও স্থিতিশীল হবে এবং খুচরা বিনিয়োগকারীরা অপ্রত্যাশিত ক্ষতির হাত থেকে রক্ষা পাবে।
- প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীদের জন্য: বড় ট্রেডিং সংস্থা এবং প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীদের এখন থেকে তাদের ট্রেডিং কৌশল পরিবর্তন করতে হতে পারে। তাদের পজিশন লিমিটের মধ্যে ট্রেড করতে হবে, যার ফলে তাদের পক্ষে বিশাল আকারের পরিবর্তন করা বা বাজারকে প্রভাবিত করা কঠিন হবে।
- বাজারের স্থিতিশীলতা: এই নিয়মগুলির ফলে সর্বোপরি বাজারের স্বাস্থ্য উন্নত হবে। বিশেষ করে মাসের শেষে এক্সপায়ারির দিনগুলিতে যে অস্থিরতা দেখা যায়, তা নিয়ন্ত্রণে আসবে। এটি দীর্ঘমেয়াদী বিনিয়োগের জন্য একটি সুস্থ পরিবেশ তৈরি করবে।
নিয়ম লঙ্ঘনের শাস্তি
যদি কোনও ট্রেডিং সংস্থা এই নির্ধারিত সীমা লঙ্ঘন করে, তবে স্টক এক্সচেঞ্জ তাদের ট্রেডিং প্যাটার্ন খতিয়ে দেখবে এবং প্রয়োজনে SEBI-কে রিপোর্ট করবে। নিয়ম লঙ্ঘনের জন্য জরিমানা বা অতিরিক্ত নজরদারি আমানত (surveillance deposits) আরোপ করা হতে পারে। বিশেষত, এক্সপায়ারির দিনে নিয়ম লঙ্ঘনের জন্য শাস্তিমূলক ব্যবস্থা আরও কঠোর হবে, যা ৬ ডিসেম্বর, ২০২৫ থেকে কার্যকর হবে।
সব মিলিয়ে, SEBI-এর এই নতুন পদক্ষেপ ভারতীয় শেয়ার বাজারকে আরও সুরক্ষিত এবং স্বচ্ছ করার একটি প্রয়াস। এটি বিনিয়োগকারীদের আস্থা বাড়াতে এবং একটি স্থিতিশীল ট্রেডিং পরিবেশ তৈরি করতে সাহায্য করবে।