SLST Case Update: এসএলএসটি চাকরিপ্রার্থীদের জন্য সুপ্রিম কোর্ট থেকে বড় খবর! অভিজ্ঞতার ১০ নম্বর নিয়ে চূড়ান্ত ফয়সালা আজ?
SLST Case Update: পশ্চিমবঙ্গের হাজার হাজার শিক্ষক পদপ্রার্থীর নজর আজ দেশের সর্বোচ্চ ন্যায়ালয়ের দিকে। সুপ্রিম কোর্টে আজ এসএলএসটি (SLST) নিয়োগ প্রক্রিয়ায় অভিজ্ঞতার জন্য বরাদ্দ ১০ নম্বর সংক্রান্ত অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ মামলার শুনানি অনুষ্ঠিত হতে চলেছে। এই মামলার ফলাফলের ওপর ভিত্তি করেই নির্ধারিত হবে নিয়োগ প্রক্রিয়ার ভবিষ্যৎ গতিপথ। মূলত অভিজ্ঞ শিক্ষকদের প্রাপ্য ১০ নম্বর কখন এবং কীভাবে যোগ করা হবে, সেই বিষয়টিই আজ আদালতের বিচার্য বিষয়।
মামলার বিবরণ ও আজকের শুনানির তালিকা
আজ সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতি সঞ্জয় কুমার এবং বিচারপতি অলোক আরাধে-র বেঞ্চে এই হাই-প্রোফাইল মামলাটি শুনানির জন্য তালিকাভুক্ত হয়েছে। মামলাটি তালিকার শেষের দিকে থাকায় ধারণা করা হচ্ছে যে লাঞ্চ ব্রেকের পরেই এর শুনানি শুরু হতে পারে। নিচে মামলার বিস্তারিত তথ্য একটি তালিকার মাধ্যমে তুলে ধরা হলো:
| বিবরণ | তথ্য |
|---|---|
| মামলার নাম | বিজয় বিশ্বাস বনাম দ্য স্টেট অফ ওয়েস্ট বেঙ্গল (Bijay Biswas Vs The State of West Bengal) |
| ডায়েরি নম্বর | ৪৬০৮/২০২৪ |
| এসএলপি (SLP) নম্বর | ২৩৭৮৪/২০২৪ |
| কোর্ট নম্বর | ১১ |
| সিরিয়াল নম্বর | ৫২ |
মামলার মূল বিষয়বস্তু এবং বিতর্ক
এই মামলার কেন্দ্রবিন্দুতে রয়েছে এসএলএসটি নিয়োগ প্রক্রিয়ায় অভিজ্ঞতার জন্য বরাদ্দ ১০ নম্বরের বন্টন নীতি। আদালতে যে প্রশ্নগুলো আজ জোরালোভাবে উঠে আসছে তা হলো:
- নম্বর যোগ করার সময়কাল: অভিজ্ঞতার জন্য বরাদ্দ এই ১০ নম্বর কি মেধা তালিকা তৈরির আগে লিখিত পরীক্ষার নম্বরের সাথে যোগ করা হবে, নাকি পরবর্তী ধাপে?
- ফ্রেশার বনাম অভিজ্ঞ: অভিজ্ঞ শিক্ষকদের এই ১০ নম্বর আগে প্রদান করার নিয়ম কি বৈধ? নাকি এর ফলে নতুন বা ‘ফ্রেশার’ প্রার্থীরা অন্যায্যভাবে প্রতিযোগিতা থেকে ছিটকে যাচ্ছেন?
- মামলায় পিটিশনারদের পাশাপাশি রেসপন্ডেন্ট হিসেবে উপস্থিত রয়েছেন স্কুল এডুকেশন ডিপার্টমেন্ট এবং স্কুল সার্ভিস কমিশন (SSC)-এর আধিকারিকরা।
বিচারপতির পর্যবেক্ষণ এবং প্রশাসনিক এখতিয়ার
এর আগের শুনানিতে বিচারপতি সঞ্জয় কুমার কিছু গুরুত্বপূর্ণ ইঙ্গিত দিয়েছিলেন। আদালতের পর্যবেক্ষণ অনুযায়ী:
সবার আগে খবরের আপডেট পান!
টেলিগ্রামে যুক্ত হন- অভিজ্ঞ শিক্ষকদের নিয়োগ করা এবং তাদের কাজের অভিজ্ঞতার স্বীকৃতি স্বরূপ নম্বর প্রদান করাকে আদালত ইতিবাচক বা ‘ভালো পদক্ষেপ’ হিসেবেই দেখছে।
- বিচারপতিদের মতে, এসএসসি (SSC) যে নিয়ম বা রুলস তৈরি করেছে, তা সম্পূর্ণভাবে প্রশাসনিক এবং নীতিনির্ধারণী বিষয় (Administrative Issue)।
- সাধারণত আদালত নিয়োগকারী সংস্থা বা রাজ্যের তৈরি প্রশাসনিক রুলে হস্তক্ষেপ করতে চায় না। যেহেতু পুরনো রুলস অনুযায়ী পরীক্ষা প্রক্রিয়া ইতিমধ্যেই সম্পন্ন হয়েছে, তাই এই মুহূর্তে সেই নিয়মে বড় কোনো পরিবর্তন আনতে আদালত খুব একটা আগ্রহী নয় বলেই মনে করা হচ্ছে।
সংবিধান লঙ্ঘন ও সমান অধিকারের প্রশ্ন
মামলাকারীরা অভিযোগ করেছেন যে বর্তমান নিয়ম ভারতীয় সংবিধানের সমান অধিকারের পরিপন্থী। তাদের যুক্তিগুলো বেশ জোরালো:
- বৈষম্যের অভিযোগ: অনেক নতুন প্রার্থী লিখিত পরীক্ষা এবং অ্যাকাডেমিক স্কোরে পূর্ণ নম্বর (৭০-এর মধ্যে ৭০) পাওয়ার পরেও ইন্টারভিউ বা ভেরিফিকেশনে ডাক পাচ্ছেন না। কারণ, অভিজ্ঞতার ১০ নম্বর আগেই যোগ হওয়ার ফলে অভিজ্ঞ প্রার্থীরা তালিকায় এগিয়ে যাচ্ছেন।
- অসম প্রতিযোগিতা: লিখিত পরীক্ষায় কম নম্বর পেয়েও শুধুমাত্র অভিজ্ঞতার ১০ নম্বরের সুবিধায় অনেক অভিজ্ঞ প্রার্থী নতুনদের পেছনে ফেলে দিচ্ছেন।
- সাংবিধানিক অধিকার: একটি পাবলিক রিক্রুটমেন্টে সকলকে সমান সুযোগ (Level Playing Field) না দিয়ে একটি নির্দিষ্ট গোষ্ঠীকে আগেভাগে সুবিধা দেওয়া সংবিধান লঙ্ঘনের সামিল বলে দাবি করা হচ্ছে।
আজকের শুনানিতেই পরিষ্কার হয়ে যাবে যে এই ১০ নম্বর শেষ পর্যন্ত কবে প্রদান করা হবে বা আদৌ এই প্রক্রিয়ায় কোনো বদল আসবে কি না। আদালতের পূর্ববর্তী মনোভাব বিশ্লেষণ করলে দেখা যায়, পুরনো রুলস পরিবর্তনের ক্ষেত্রে বিচারকদের অনীহা রয়েছে, যা ফ্রেশার প্রার্থীদের জন্য খুব একটা আশাব্যঞ্জক নাও হতে পারে। তবে সুপ্রিম কোর্ট শেষ পর্যন্ত কী রায় দেয়, তার দিকেই তাকিয়ে হাজার হাজার চাকরিপ্রার্থী।