SLST Recruitment Movement: এক লক্ষ শূন্যপদ সহ পাঁচ দফা দাবিতে বিকাশ ভবন অভিযানের ডাক দিল SLST নতুন চাকরি প্রার্থীরা

SLST Recruitment Movement: স্কুল সার্ভিস কমিশনের (SSC) বিরুদ্ধে বঞ্চনার অভিযোগ তুলে এবং পাঁচ দফা ন্যায্য দাবির ভিত্তিতে আগামী ২৫শে সেপ্টেম্বর বিকাশ ভবন অভিযানের ডাক দিল সেকেন্ড এসএলএসটি (SLST) নতুন চাকরি প্রার্থীরা। এই অভিযানে প্রায় এক লক্ষ শূন্যপদ পূরণের দাবিকে সামনে রেখে ঐক্যবদ্ধ হচ্ছেন রাজ্যের হাজার হাজার নতুন পরীক্ষার্থীরা।
কেন এই আন্দোলন? চাকরি প্রার্থীদের মূল দাবিগুলি কী কী?
সম্প্রতি শেষ হওয়া এসএসসির নবম-দশম এবং একাদশ-দ্বাদশ স্তরের শিক্ষক নিয়োগ পরীক্ষায় মোট শূন্যপদের সংখ্যা ৩৫,৭২৬। কিন্তু চাকরি প্রার্থীদের মতে, রাজ্যের স্কুলগুলিতে দীর্ঘদিন ধরে প্রচুর সংখ্যক শিক্ষকের পদ খালি পড়ে আছে। তাই এই সংখ্যাটি বাড়িয়ে অবিলম্বে ১ লক্ষ করার দাবি তুলেছেন তারা। তাদের মতে, শূন্যপদ না বাড়ালে বহু যোগ্য প্রার্থী নিয়োগ থেকে বঞ্চিত হবেন।
আসন্ন এই আন্দোলনকে কেন্দ্র করে চাকরি প্রার্থীরা মূলত পাঁচটি প্রধান দাবি সামনে এনেছেন:
- শূন্যপদ বৃদ্ধি: সেকেন্ড এসএলএসটির মোট শূন্যপদ ৩৫,৭২৬ থেকে বাড়িয়ে ১ লক্ষ করতে হবে। এটিই তাদের প্রধান এবং প্রথম দাবি। রাজ্যের বিপুল সংখ্যক বেকার যুবক-যুবতীদের কর্মসংস্থানের সুযোগ করে দেওয়ার জন্য এই পদক্ষেপ অত্যন্ত জরুরি বলে তারা মনে করছেন।
- অভিজ্ঞতার নম্বর বিতর্ক: কর্মরত শিক্ষকদের জন্য অতিরিক্ত ১০ নম্বর ইন্টারভিউয়ের আগে বরাদ্দ করার সিদ্ধান্তের তীব্র বিরোধিতা করেছেন নতুন প্রার্থীরা। তাদের মতে, এটি ভারতীয় সংবিধানের ১৬ নম্বর অনুচ্ছেদের সমানাধিকারের পরিপন্থী। লিখিত পরীক্ষার নম্বরের ভিত্তিতেই কাটঅফ নির্ধারণ করতে হবে এবং অভিজ্ঞতার নম্বর ইন্টারভিউ প্রক্রিয়ার সঙ্গে যুক্ত করা যাবে না।
- স্বচ্ছ ইন্টারভিউ প্রক্রিয়া: নিয়োগ প্রক্রিয়ায় স্বচ্ছতা আনতে ইন্টারভিউ চলাকালীন সিসিটিভি ক্যামেরার মাধ্যমে ভিডিও এবং অডিও রেকর্ডিংয়ের ব্যবস্থা করতে হবে। এটি দুর্নীতি রুখতে এবং যোগ্য প্রার্থীদের সঠিক মূল্যায়নের জন্য অপরিহার্য।
- নিয়োগ প্রক্রিয়ার ক্রম: চাকরি প্রার্থীদের দাবি, প্রথমে একাদশ-দ্বাদশ স্তরের নিয়োগ প্রক্রিয়া সম্পন্ন করতে হবে এবং তারপর নবম-দশম স্তরের নিয়োগ করতে হবে। কারণ, অনেক প্রার্থী উভয় স্তরেই আবেদন করেছেন। যদি নবম-দশমের নিয়োগ আগে হয়, তবে যোগ্য প্রার্থীরা সেখানে যোগ দেওয়ার পর একাদশ-দ্বাদশে সুযোগ পেলে আগের পদটি ছেড়ে দেবেন। এর ফলে নবম-দশম স্তরের পদটি খালি হয়ে যাবে এবং প্যানেল থেকে নতুন করে নিয়োগ করা সম্ভব হবে না।
- সুপ্রিম কোর্টের রায়কে সম্মান: শীর্ষ আদালতের সাম্প্রতিক ২৬,০০০ চাকরি বাতিলের রায়কে মান্যতা দিতে হবে এবং নিয়োগ প্রক্রিয়ায় কোনোভাবেই সেই রায়কে অমান্য করা চলবে না।
সরকারের ভূমিকা এবং ভবিষ্যৎ সম্ভাবনা
আন্দোলনকারীরা ইতিমধ্যেই স্কুল সার্ভিস কমিশন এবং বিকাশ ভবনে তাদের দাবি জানিয়েছেন। তাদের আশা, সরকার তাদের ন্যায্য দাবিগুলি মেনে নেবে। সামনেই ২০২৬ সালের বিধানসভা নির্বাচন, তাই অনেকেই মনে করছেন যে সরকার চাকরি প্রার্থীদের দাবিদাওয়ার প্রতি সহানুভূতিশীল হতে পারে এবং শূন্যপদ বৃদ্ধির মতো গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত নিতে পারে। তবে অতীত অভিজ্ঞতা থেকে শিক্ষা নিয়ে চাকরি প্রার্থীরা কোনো ফাঁকা আশ্বাসে বিশ্বাস করতে নারাজ। তাই ২৫শে সেপ্টেম্বরের বিকাশ ভবন অভিযানকে সফল করতে এবং নিজেদের অধিকার আদায় করতে তারা বদ্ধপরিকর। এখন দেখার বিষয়, সরকারের পক্ষ থেকে কী পদক্ষেপ নেওয়া হয় এবং এই আন্দোলনের ভবিষ্যৎ কোন দিকে গড়ায়।