Smart Meter: স্মার্ট মিটারের ফাঁদে সাধারণ মানুষ? বিল দেখে মাথায় হাত, বিদ্যুৎ দপ্তরের যুক্তি

Smart Meter: পশ্চিমবঙ্গের বিভিন্ন জেলায়, বিশেষ করে গ্রামীণ এলাকায়, স্মার্ট মিটার বসানো নিয়ে গ্রাহকদের মধ্যে তীব্র আতঙ্ক ও ক্ষোভ ছড়িয়ে পড়েছে। অনেকের অভিযোগ, তাদের সম্মতি ছাড়াই জোর করে স্মার্ট মিটার বসিয়ে দেওয়া হচ্ছে এবং তার পরেই বিদ্যুৎ বিল আসছে কয়েক গুণ বেশি। এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে তৈরি হয়েছে ব্যাপক বিভ্রান্তি ও সংশয়।
বাধ্যতামূলকভাবে স্মার্ট মিটার স্থাপন এবং অস্বাভাবিক বিল বৃদ্ধি
একটি সংবাদ প্রতিবেদন অনুযায়ী ব্যান্ডেলের বাসিন্দা সুশান্ত জোসেফ এবং পম্পা জোসেফের ঘটনাটি এই সমস্যার একটি জ্বলন্ত উদাহরণ। গত মাসে তাদের বাড়িতে একটি স্মার্ট মিটার বসানো হয় এবং চলতি মাসের বিল আসে প্রায় ১২,০০০ টাকা, যেখানে আগে তাদের গড় বিল ছিল ১,০০০ থেকে ১,১০০ টাকার মধ্যে। পম্পা জোসেফ জানান, তারা স্মার্ট মিটার বসাতে চাননি, কিন্তু জোর করে তা বসিয়ে দেওয়া হয়। এখন এই বিপুল পরিমাণ বিল মেটাতে গিয়ে তারা অসহায় বোধ করছেন। তিনি আরও বলেন, আপত্তি সত্ত্বেও বিদ্যুৎ কর্মীরা হঠাৎ করে বাড়িতে ঢুকে মিটার পরিবর্তন করে দেন।
গ্রাহকদের অভিযোগ এবং কর্তৃপক্ষের প্রতিক্রিয়া
পম্পা জোসেফের মতে, স্মার্ট মিটারে কোনো ত্রুটি থাকতে পারে, না হলে এক মাসে বিল এতটা কী করে বাড়তে পারে? তিনি বিদ্যুৎ দপ্তরে বিষয়টি নিয়ে কথা বলতে গেলে তাকে জানানো হয় যে নতুন মিটার গ্রহণ করা বাধ্যতামূলক এবং এই সংক্রান্ত কোনো সার্কুলার দেখাতেও অস্বীকার করা হয়। তার স্বামী সুশান্ত, যিনি গুজরাটে থাকেন, এই বিষয়ে মুখ্যমন্ত্রী, বিদ্যুৎ মন্ত্রী এবং বিদ্যুৎ দপ্তরে ইমেল করে অভিযোগ জানিয়েছেন এবং পুরনো মিটার ফিরিয়ে দেওয়ার অনুরোধ করেছেন।
হুগলি অঞ্চলের বিদ্যুৎ দপ্তরের রিজিওনাল ম্যানেজার মধুসূদন রায় এই প্রসঙ্গে জানান যে, আগে বিল ত্রৈমাসিক ছিল, ফলে গ্রাহকরা কিস্তিতে বিল মেটানোর সুযোগ পেতেন। এখন মাসিক বিল চালু হওয়ায় প্রথম বিলে তিন মাসের খরচ একসঙ্গে যুক্ত হয়ে যাওয়ায় বিল বেশি মনে হচ্ছে। তিনি আশ্বাস দেন যে, গ্রাহকরা কাস্টমার কেয়ার সেন্টারে যোগাযোগ করলে প্রাথমিক উচ্চ বিলের ক্ষেত্রে কিস্তিতে টাকা দেওয়ার সুযোগ পাবেন। তিনি আরও বলেন যে, স্মার্ট মিটার নিয়ে ভয়ের কিছু নেই।
এই ঘটনাটি প্রযুক্তি এবং তার প্রয়োগের মধ্যে সমন্বয়ের অভাবকে তুলে ধরেছে। একদিকে যখন সরকার ডিজিটাল ইন্ডিয়ার স্বপ্ন দেখাচ্ছে, তখন অন্যদিকে প্রযুক্তিগত ত্রুটি এবং তার সঠিক প্রয়োগের অভাবে সাধারণ মানুষের হয়রানি বাড়ছে। স্মার্ট মিটার বসানোর আগে গ্রাহকদের যথেষ্ট পরিমাণে সচেতন করা এবং তাদের সম্মতি নেওয়া আবশ্যক। এছাড়াও, বিলিং প্রক্রিয়া আরও স্বচ্ছ এবং বোধগম্য করা প্রয়োজন যাতে গ্রাহকদের মধ্যে কোনো বিভ্রান্তি না থাকে। এই ধরনের সমস্যার দ্রুত সমাধান না হলে সরকারের ডিজিটাল ইন্ডিয়ার উদ্যোগ প্রশ্নের মুখে পড়বে।