SSC 10 Mark Case: এসএসসির চূড়ান্ত ফলাফল ঝুলে রইলো ১০ নম্বর মামলার জেরে! কবে রায়? জানুন শুনানির সব খুঁটিনাটি
SSC 10 Mark Case: স্কুল সার্ভিস কমিশন (SSC)-এর নিয়োগ প্রক্রিয়ার চূড়ান্ত ফলাফল একটি গুরুত্বপূর্ণ মামলার রায়ের উপর নির্ভরশীল হয়ে পড়ল। বিচারপতি অমৃতা সিনহার বেঞ্চে অভিজ্ঞতার ১০ নম্বর সংক্রান্ত এসএসসি মামলার দীর্ঘ শুনানির পর আদালত জানিয়েছে যে, লিখিত পরীক্ষার ফলাফল প্রকাশ করা গেলেও, চূড়ান্ত ফলাফল এই মামলার রায়ের পরেই ঘোষিত হবে। এই ঘটনায় চাকরিপ্রার্থীদের মধ্যে নতুন করে উদ্বেগ তৈরি হয়েছে।
মামলার মূল বিতর্ক কী?
মামলার মূল কেন্দ্রবিন্দু ছিল অভিজ্ঞ শিক্ষকদের জন্য বরাদ্দ ১০ নম্বর। বিতর্কটি হলো, এই ১০ নম্বর ইন্টারভিউয়ের তালিকা তৈরির আগে দেওয়া হবে, নাকি পরে দেওয়া হবে। এই নিয়েই আদালতে তীব্র সওয়াল-জবাব হয়, যেখানে একাধিক সিনিয়র আইনজীবী উপস্থিত ছিলেন।
আবেদনকারীদের যুক্তি ও অভিযোগ
আবেদনকারীদের পক্ষে আইনজীবী সুদীপ্ত দাসগুপ্ত জোরালো সওয়াল করেন। তাঁদের মূল বক্তব্যগুলি হলো:
- আপত্তির কারণ: ১০ নম্বর দেওয়ার সিদ্ধান্তে তাঁদের আপত্তি নেই, কারণ এটি আইন মেনেই হচ্ছে। কিন্তু ইন্টারভিউয়ের আগে এই নম্বর দেওয়ায় ফ্রেশার বা নতুন চাকরিপ্রার্থীরা বঞ্চিত হবেন।
- অভিজ্ঞতা বনাম যোগ্যতা: তিনি যুক্তি দেন যে, শিক্ষকতার অভিজ্ঞতা (Teaching Experience) কখনওই অ্যাকাডেমিক যোগ্যতার (Academic Qualification) অংশ হতে পারে না। এটি নতুনদের প্রতি বঞ্চনার একটি কৌশল।
- বৈষম্যের আশঙ্কা: আরেক আইনজীবী শামীম আহমেদ প্রশ্ন তোলেন, যারা ৯-১০ স্তরে চাকরি করছেন, তাঁরা কেন ১১-১২ স্তরের চাকরির জন্যেও অতিরিক্ত ১০ নম্বর পাবেন? এটিকে তিনি সরাসরি ফ্রেশারদের প্রতি বৈষম্য (Discrimination) বলে অভিহিত করেন। তিনি আরও আশঙ্কা প্রকাশ করেন যে, ডেমো টিচিং-এও অভিজ্ঞ শিক্ষকরা বাড়তি সুবিধা পেয়ে যাবেন।
কমিশন ও সিনিয়র আইনজীবীদের পাল্টা সওয়াল
কমিশন এবং রাজ্যের পক্ষে সিনিয়র আইনজীবীরা আবেদনকারীদের যুক্তির তীব্র বিরোধিতা করেন।
সবার আগে খবরের আপডেট পান!
টেলিগ্রামে যুক্ত হন- নিয়মের ব্যাখ্যা: কমিশনের তরফে পথিক মহাশয় ‘টু কে’ ডেফিনেশন এবং সিডিউল টু-এর নিয়মগুলি ব্যাখ্যা করেন।
- নিয়ম জেনেই পরীক্ষা: সিনিয়র অ্যাডভোকেট অনিন্দ্য কুমার মিত্র বলেন, এই ১০ নম্বর আগেই দেওয়া হবে, এই নিয়ম স্পষ্ট ছিল এবং সেই নিয়ম দেখেই সকলে পরীক্ষা দিয়েছেন। তাই এখন এটিকে অযৌক্তিক বলা যায় না।
- মামলার গ্রহণযোগ্যতা নিয়ে প্রশ্ন: অ্যাডভোকেট কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায় আরও কঠোর অবস্থান নিয়ে বলেন, আবেদনকারীরা নিয়ম জেনেই পরীক্ষায় বসেছেন। পরীক্ষা দেওয়ার কয়েকমাস পর এসে সেই নিয়মকে চ্যালেঞ্জ করা যায় না। তাঁর মতে, এই মামলাটি গ্রহণযোগ্যই নয়।
সুপ্রিম কোর্ট বিতর্ক
শুনানির একটি বড় অংশ জুড়ে ছিল এই বিষয়টি সুপ্রিম কোর্টে বিচারাধীন কিনা, সেই বিতর্ক। কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায় দাবি করেন যে, সুপ্রিম কোর্ট ইতিমধ্যেই এই বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিয়েছে। কিন্তু আবেদনকারীদের আইনজীবী এই দাবি খারিজ করে দেন।
আদালতের চূড়ান্ত নির্দেশ
দু’পক্ষের দীর্ঘ সওয়াল-জবাব শোনার পর বিচারপতি অমৃতা সিনহা তাঁর নির্দেশ দেন। তিনি অর্ডারে উভয় পক্ষের বক্তব্যই নথিভুক্ত করেন। বিচারপতি স্পষ্ট জানান যে, লিখিত পরীক্ষার ফলাফল আজ প্রকাশিত হতে পারে, কিন্তু চূড়ান্ত ফলাফল (Final Result) এই মামলার রায়ের (Outcome) উপর নির্ভর করবে। মামলার পরবর্তী শুনানির জন্য ১২ তারিখ দিন ধার্য করা হয়েছে। ফলে, চূড়ান্ত মেধাতালিকা প্রকাশের জন্য চাকরিপ্রার্থীদের আরও কিছুদিন অপেক্ষা করতে হবে।