SSC 2016: শিক্ষাকর্মীদের জন্যও রিভিউ চাইবে রাজ্য, স্কুল চালাতে তাদের ভূমিকাও অপরিসীম, ব্রাত্য বসুর বক্তব্য

SSC 2016: ২০১৬ সালের এস এস সি (স্কুল সার্ভিস কমিশন) নিয়োগ প্রক্রিয়ায় দুর্নীতির অভিযোগে সম্প্রতি সুপ্রিম কোর্টের রায়ে প্রায় ২৬,০০০ শিক্ষক ও শিক্ষাকর্মীর চাকরি বাতিল হয়েছে। এই রায় রাজ্য জুড়ে আলোড়ন সৃষ্টি করেছে এবং বহু চাকরিহারাদের ভবিষ্যৎ অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে। এই পরিস্থিতিতে রাজ্যের শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু এবং বিভিন্ন শিক্ষাকর্মী সংগঠন নিজেদের বক্তব্য পেশ করেছে।
সুপ্রিম কোর্টের রায় ও তার প্রভাব:
ওয়েস্ট বেঙ্গল স্কুল অ্যান্ড মাদ্রাসা ক্লার্ক অ্যাসোসিয়েশন (WBSMCA) এর পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে যে তারা সুপ্রিম কোর্টের রায়কে সম্মান জানাচ্ছে। তবে, মধ্যশিক্ষা পর্ষদ সুপ্রিম কোর্টে একটি আবেদন জানিয়েছিল, যেখানে উল্লেখ করা হয় যে বিপুল সংখ্যক শিক্ষক ও শিক্ষাকর্মী চাকরি হারানোর ফলে বিদ্যালয় পরিচালনা করা কঠিন হয়ে পড়ছে। আদালত যোগ্য শিক্ষকদের কাজে ফেরার অনুমতি দিলেও, শিক্ষাকর্মীদের ক্ষেত্রে সেই অনুমতি দেয়নি, কারণ তাদের নিয়োগে বেশি দুর্নীতির অভিযোগ রয়েছে।
আরো পড়ুন: SSC 2016: ব্রেকিং নিউজ! যোগ্য-অযোগ্যের তালিকা জমা দিল এসএসসি, দেখুন এখানে
শিক্ষাকর্মীদের গুরুত্ব ও সংগঠনের আবেদন:
WBSMCA এর পক্ষ থেকে জোর দিয়ে বলা হয়েছে যে বিদ্যালয়ের বিভিন্ন প্রশাসনিক কাজ, সরকারি প্রকল্প পরিচালনা, ছাত্রছাত্রীদের ডেটা রক্ষণাবেক্ষণ এবং সামগ্রিক স্কুল পরিচালনার জন্য শিক্ষাকর্মীদের (গ্রুপ সি ও গ্রুপ ডি) ভূমিকা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। সংগঠনটির মতে, শিক্ষাকর্মী ছাড়া বিদ্যালয় সঠিকভাবে চালানো সম্ভব নয়। এমনকি প্রধান শিক্ষকরাও জানাচ্ছেন যে শিক্ষক ছাড়া স্কুল চালানো গেলেও, শিক্ষাকর্মী ছাড়া তা সম্ভব নয়। তাই, WBSMCA মধ্যশিক্ষা পর্ষদ ও রাজ্য সরকারের কাছে আবেদন জানিয়েছে যাতে যোগ্য শিক্ষাকর্মীদের পুনর্বহালের জন্য পুনরায় সুপ্রিম কোর্টে আবেদন করা হয়, যাতে বিদ্যালয়গুলির স্বাভাবিক কাজকর্ম বজায় থাকে। সংগঠনটি যোগ্য ও ক্ষতিগ্রস্ত শিক্ষাকর্মীদের পাশে থাকার বার্তা দিয়েছে।
শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসুর আশ্বাস:
অন্যদিকে, শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু জানিয়েছেন যে যোগ্য ও অযোগ্য প্রার্থীদের তালিকা শীঘ্রই (২১ এপ্রিলের মধ্যে) প্রকাশ করা হবে। তিনি আরও জানান যে রাজ্য সরকার চাকরি হারানো শিক্ষাকর্মীদের জন্য আইনি সুরক্ষা চাইবে, যাতে তারা ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত কাজ চালিয়ে যেতে পারেন। শিক্ষামন্ত্রী গ্রুপ সি ও গ্রুপ ডি কর্মীদের আশ্বাস দিয়েছেন যে তাদের বিষয়গুলি বিবেচনা করা হচ্ছে এবং তাদের সহায়তার জন্য শীঘ্রই আইনি প্রক্রিয়া শুরু হবে।
বর্তমান পরিস্থিতি ও ভবিষ্যৎ:
যদিও শিক্ষামন্ত্রী আশ্বাস দিয়েছেন, শিক্ষাকর্মীরা জানিয়েছেন যে তাদের দাবি পূরণ না হওয়া পর্যন্ত তারা তাদের প্রতিবাদ চালিয়ে যাবেন। একদিকে আইনি লড়াই এবং অন্যদিকে বিদ্যালয় পরিচালনার সংকট – এই দুইয়ের মধ্যে ঝুলে রয়েছে রাজ্যের হাজার হাজার শিক্ষাকর্মীর ভবিষ্যৎ। আগামী দিনে রাজ্য সরকার এবং বিচারব্যবস্থা কী পদক্ষেপ নেয়, সেদিকেই তাকিয়ে রয়েছে সকলে।