SSC চাকরিহারাদের অভিনব প্রস্তাব দিলেন বিকাশ রঞ্জন ভট্টাচার্য, আদৌ কি এটা করা সম্ভব?

SSC: পশ্চিমবঙ্গ স্কুল সার্ভিস কমিশন (WBSSC) দুর্নীতি কাণ্ডে চাকরি বাতিলের পর উদ্ভূত পরিস্থিতিতে আইনজীবী ও প্রাক্তন মেয়র বিকাশ রঞ্জন ভট্টাচার্য চাকরিহারাদের জন্য এক অভিনব প্রস্তাব রেখেছেন। সাম্প্রতিক এক সাক্ষাৎকারে তিনি এই বিষয়ে বিস্তারিত আলোচনা করেন এবং রাজ্য সরকারের সদিচ্ছা নিয়েও প্রশ্ন তোলেন।
বিকাশ রঞ্জন ভট্টাচার্যের প্রস্তাব:
আইনজীবী বিকাশ রঞ্জন ভট্টাচার্য পরামর্শ দিয়েছেন যে, যে সমস্ত চাকরিহারা ব্যক্তিরা মনে করেন তারা কোনো রকম দুর্নীতিতে জড়িত নন এবং সম্পূর্ণ মেধার ভিত্তিতে চাকরি পেয়েছিলেন, তাদের উচিত নিজেদের উদ্যোগে একটি তালিকা তৈরি করা। তিনি আরও বলেন, এই সৎ চাকরিপ্রার্থীদের উচিত ব্যানার পরিধান করে প্রকাশ্যে ঘোষণা করা যে তারা দুর্নীতির সঙ্গে যুক্ত নন।
ভট্টাচার্যের মতে, এই পদক্ষেপ নিলে স্বাভাবিকভাবেই দুর্নীতিগ্রস্ত ব্যক্তিরা চিহ্নিত হয়ে যাবেন। তিনি জোর দিয়ে বলেন যে, এই তালিকাটি আন্দোলনকারীদের নিজেদেরই তৈরি করতে হবে, কারণ রাজ্য সরকার দুর্নীতিতে জড়িতদের রক্ষা করার জন্য এই ধরনের কোনো পদক্ষেপ নেবে না। তাঁর মতে, এর মাধ্যমে জনগণের অর্থ যা দুর্নীতিগ্রস্তদের বেতন হিসেবে দেওয়া হয়েছে, তা পুনরুদ্ধার করা সম্ভব হবে।
রাজ্য সরকারের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন:
বিকাশ রঞ্জন ভট্টাচার্য রাজ্য সরকারের সদিচ্ছা নিয়ে একাধিক প্রশ্ন তুলেছেন। তাঁর অভিযোগ, রাজ্য সরকার আসলে নতুন নিয়োগ করতে চায় না, কারণ তাদের আর্থিক অবস্থা শোচনীয়; কার্যত তারা দেউলিয়া। তিনি মনে করেন, সরকার চায় না শিক্ষিত মানুষ চাকরি পাক, বরং প্রান্তিক মানুষকে অশিক্ষিত রেখে শোষণ করতে চায়। তাঁর মতে, শিক্ষা ও স্বাস্থ্যক্ষেত্রে ধীরে ধীরে বেসরকারিকরণের দিকে এগোচ্ছে সরকার।
নতুন নিয়োগের বিজ্ঞপ্তিটিকে তিনি সুপ্রিম কোর্টের কোপ থেকে বাঁচার একটি কৌশল হিসেবে দেখছেন। তিনি আশঙ্কা প্রকাশ করেন যে, এই বিজ্ঞপ্তিটিকেও চ্যালেঞ্জ করা হবে এবং নিয়োগ প্রক্রিয়া আবারও আটকে যাবে।
আইনি লড়াইয়ের প্রস্তুতি:
ভট্টাচার্য জানিয়েছেন যে, রাজ্য সরকারের নতুন নিয়োগ বিজ্ঞপ্তিটিকে তাঁরা আইনিভাবে চ্যালেঞ্জ করবেন। তাঁর মতে, রাজ্য সরকারের রিভিউ পিটিশনের কোনো আইনি ভিত্তি নেই, কারণ তারাই সুপ্রিম কোর্টে নতুন পরীক্ষা নেওয়ার প্রস্তাব দিয়েছিল।
বিকাশ রঞ্জন ভট্টাচার্যের এই প্রস্তাব চাকরিহারাদের একাংশের জন্য একটি নতুন পথের সন্ধান দিয়েছে। তাঁর মতে, সততার সঙ্গে নিজেদের আলাদা করতে পারলে দুর্নীতিগ্রস্তদের চিহ্নিত করা সহজ হবে এবং সরকারের উপরও চাপ সৃষ্টি হবে। এখন দেখার বিষয়, চাকরিহারারা এই প্রস্তাবকে কীভাবে গ্রহণ করেন কিংবা আদৌ এটা করা সম্ভব কিনা এবং এর মাধ্যমে কোনো ইতিবাচক পরিবর্তন আসে কিনা।