Download WB Holiday Calendar App 2026

Download Now!
চাকরি

অভিজ্ঞতার নম্বরে না সহ এসএসসি ফ্রেশার চাকরিপ্রার্থীদের ৭ দফা দাবি, নিয়োগ প্রক্রিয়ায় কি বড়সড় পরিবর্তন আসছে?

SSC Case Update: পশ্চিমবঙ্গের স্কুল সার্ভিস কমিশন (SSC) নিয়ে বিতর্ক এবং আন্দোলন যেন শেষই হচ্ছে না। ২০১৬ সালের প্যানেল বাতিলের পর থেকেই একদিকে যেমন যোগ্য চাকরিপ্রার্থীরা নিজেদের অধিকারের জন্য লড়ছেন, তেমনই নতুন বা ফ্রেশার চাকরিপ্রার্থীদের ভবিষ্যৎ নিয়েও তৈরি হয়েছে গভীর অনিশ্চয়তা। সম্প্রতি, এই ফ্রেশার প্রার্থীরা তাদের ৭ দফা দাবি নিয়ে বৃহত্তর আন্দোলন এবং আইনি লড়াইয়ের পথে নামার ঘোষণা দিয়েছেন, যা রাজ্যের শিক্ষক নিয়োগ প্রক্রিয়ায় এক নতুন মাত্রা যোগ করেছে। এই প্রতিবেদনে আমরা এসএসসি ফ্রেশারদের ৭ দফা দাবি, তাদের যৌক্তিকতা এবং এর ফলে তৈরি হওয়া পরিস্থিতি নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করব।

ফ্রেশারদের প্রধান ৭ দফা দাবি

এসএসসি ফ্রেশারদের আন্দোলন মূলত সাতটি মূল দাবির উপর ভিত্তি করে গড়ে উঠেছে। তাদের মতে, এই দাবিগুলি পূরণ না হলে রাজ্যের হাজার হাজার যোগ্য প্রার্থীর ভবিষ্যৎ অন্ধকারে নিমজ্জিত হবে। আসুন, দাবিগুলো এক এক করে দেখে নেওয়া যাক:

  • ১. অভিজ্ঞতার নম্বর (Experience Marks) যোগের নীতির পরিবর্তন: আন্দোলনকারীদের প্রথম এবং অন্যতম প্রধান দাবি হলো, নিয়োগ প্রক্রিয়ায় অভিজ্ঞতার জন্য বরাদ্দ ১০ নম্বর ইন্টারভিউর পরে যোগ করতে হবে। তাদের মতে, ইন্টারভিউর আগে এই নম্বর যোগ করার ফলে অনেক যোগ্য ফ্রেশার প্রার্থী প্রাথমিক স্তর থেকেই পিছিয়ে পড়ছেন।
  • ২. ২০১৬ সালের বাতিল প্যানেলের অভিজ্ঞতার মার্ক বাতিল: যেহেতু ২০১৬ সালের পুরো প্যানেলটিই সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশে বাতিল হয়েছে, তাই সেই প্যানেলের ভিত্তিতে কোনো প্রার্থীকে অভিজ্ঞতার নম্বর দেওয়া সম্পূর্ণ অযৌক্তিক। এই দাবি তুলে ধরে তারা বলছেন যে, একটি অবৈধ প্যানেলের উপর ভিত্তি করে কোনো সুবিধা দেওয়া চলতে পারে না।
  • ৩. শূন্যপদের সংখ্যা বৃদ্ধি: গত প্রায় ১৩ বছর ধরে রাজ্যে কোনো নতুন SLST নিয়োগ হয়নি। এর ফলে বিপুল সংখ্যক শূন্যপদ তৈরি হয়েছে। ফ্রেশারদের দাবি, রাজ্যের প্রায় ৬ লক্ষ চাকরিপ্রার্থীর কথা মাথায় রেখে শূন্যপদের সংখ্যা বাড়িয়ে অন্তত ১ লক্ষ করা হোক এবং প্রয়োজনে বন্ধ হয়ে যাওয়া স্কুলগুলো পুনরায় চালু করা হোক।
  • ৪. রাজ্যের প্রার্থীদের অগ্রাধিকার: নিয়োগ প্রক্রিয়ায় ভিন রাজ্যের প্রার্থীদের অংশগ্রহণের ফলে রাজ্যের যোগ্য প্রার্থীরা বঞ্চিত হচ্ছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। তাই তাদের দাবি, রাজ্যের ছেলেমেয়েদের জন্য চাকরিতে অগ্রাধিকার সুনিশ্চিত করতে হবে।
  • ৫. পরীক্ষা ও কাট-অফ মার্কের অসংগতি দূরীকরণ: লিখিত পরীক্ষার মোট নম্বর ৬০ হওয়া সত্ত্বেও কাট-অফ মার্ক ৮০-র কাছাকাছি পৌঁছে যাচ্ছে, যা সম্পূর্ণ অবাস্তব এবং অনৈতিক। এই অসংগতি অবিলম্বে দূর করে একটি স্বচ্ছ মূল্যায়ন প্রক্রিয়া চালু করার দাবি জানিয়েছেন তারা।
  • ৬. সিসিটিভি ক্যামেরার নজরদারিতে ইন্টারভিউ: ইন্টারভিউ প্রক্রিয়াকে সম্পূর্ণ স্বচ্ছ এবং দুর্নীতিমুক্ত করতে পুরো প্রক্রিয়াটি সিসিটিভি ক্যামেরার আওতায় আনার দাবি করা হয়েছে। পাশাপাশি, সেই অডিও-ভিডিওগ্রাফি সংরক্ষণ করার কথাও বলা হয়েছে, যাতে প্রয়োজনে তা খতিয়ে দেখা যায়।
  • ৭. চূড়ান্ত মেধা তালিকায় অ্যাকাডেমিক স্কোর যোগ: যদি অ্যাকাডেমিক স্কোর যোগ করতেই হয়, তবে তা যেন ইন্টারভিউ এবং পার্সোনালিটি টেস্টের ফল প্রকাশের পর চূড়ান্ত মেধা তালিকা তৈরির সময় যোগ করা হয়। এর ফলে প্রক্রিয়াটি আরও স্বচ্ছ হবে বলে মনে করছেন আন্দোলনকারীরা।

এই দাবিগুলো নিয়ে ফ্রেশার প্রার্থীরা ইতিমধ্যেই আইনি পদক্ষেপ নেওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছেন এবং আগামী দিনে বৃহত্তর আন্দোলনের পথে নামার হুঁশিয়ারি দিয়েছেন। তাদের এই আন্দোলন রাজ্যের শিক্ষক নিয়োগ প্রক্রিয়াকে কোন দিকে নিয়ে যায়, সেটাই এখন দেখার। একদিকে যোগ্য বঞ্চিতদের চাকরিতে পুনর্বহালের চাপ, অন্যদিকে নতুনদের ভবিষ্যৎ সুনিশ্চিত করার দাবি—এই দুইয়ের মধ্যে ভারসাম্য রেখে রাজ্য সরকার এবং স্কুল সার্ভিস কমিশন কী পদক্ষেপ নেয়, তার উপরেই নির্ভর করছে হাজার হাজার প্রার্থীর ভবিষ্যৎ।

সবার আগে খবরের আপডেট পান!

টেলিগ্রামে যুক্ত হন

WBPAY Team

আমাদের প্রতিবেদন গুলি WBPAY Team এর দ্বারা যাচাই করে লেখা হয়। আমরা একটি স্বাধীন প্ল্যাটফর্ম যা পাঠকদের জন্য স্পষ্ট এবং সঠিক খবর পৌঁছে দিতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। আমাদের লক্ষ্য এবং সাংবাদিকতার মান সম্পর্কে জানতে, অনুগ্রহ করে আমাদের About us এবং Editorial Policy পৃষ্ঠাগুলি পড়ুন।
Back to top button