চাকরি

SSC Recruitment Scam: SSC-র রিভিউ পিটিশনে ৮টি গুরুত্বপূর্ণ যুক্তি, ফিরবে কি চাকরি?

SSC Recruitment Scam: কলকাতা হাইকোর্টের নির্দেশে ২০১৬ সালের প্যানেলে নিযুক্ত প্রায় ২৬ হাজার শিক্ষক ও শিক্ষাকর্মীর চাকরি বাতিলের রায় বহাল রেখেছিল সুপ্রিম কোর্ট। সম্প্রতি, সেই রায় পুনর্বিবেচনা করার জন্য শীর্ষ আদালতে রিভিউ পিটিশন দাখিল করেছে পশ্চিমবঙ্গ স্কুল সার্ভিস কমিশন (SSC) এবং রাজ্য সরকার। এই পদক্ষেপে নতুন করে আইনি প্রক্রিয়ার সম্ভাবনা তৈরি হয়েছে, যা হাজার হাজার চাকরিপ্রার্থীর ভবিষ্যৎ নির্ধারণ করবে।

মূল বিষয়বস্তু ও কমিশনের যুক্তি:

সূত্র অনুযায়ী, কমিশনের রিভিউ পিটিশনে মূলত ৩রা এপ্রিল, ২০২৫-এর সুপ্রিম কোর্টের মূল রায়কে চ্যালেঞ্জ জানানো হয়েছে। কমিশনের প্রধান যুক্তিগুলি হল:

  1. সকলের নিয়োগ অবৈধ নয়: কমিশন জোর দিয়ে বলেছে যে, প্যানেলের সকল নিযুক্ত ব্যক্তি দুর্নীতির সঙ্গে যুক্ত ছিলেন না। তা সত্ত্বেও সকলের চাকরি বাতিল করা হয়েছে। অতীতে মানবিক দিক বিবেচনা করে সিদ্ধান্ত নেওয়ার নজিরও উল্লেখ করা হয়েছে।
  2. বিদ্যালয়ের ওপর প্রভাব: এত বিপুল সংখ্যক শিক্ষক ও শিক্ষাকর্মীর চাকরি বাতিলের ফলে বিদ্যালয়গুলিতে শূন্যতা তৈরি হবে এবং পঠনপাঠন ব্যাহত হবে।
  3. সমতার অধিকার লঙ্ঘন: কমিশন দাবি করেছে যে, যোগ্য এবং অযোগ্য প্রার্থীদের একই দৃষ্টিতে দেখা সংবিধানের ১৪ নং ধারা অনুসারে সমতার অধিকার লঙ্ঘন করে।
  4. অনির্দিষ্ট ভবিষ্যৎ: ৩রা এপ্রিলের রায়ে যোগ্য প্রার্থীদের চাকরির ধারাবাহিকতা বা ভবিষ্যৎ সুরক্ষিত করা হয়নি, যা তাঁদের প্রায় ১০ বছরের চাকরির অভিজ্ঞতা এবং পেনশনের অধিকারকে অনিশ্চিত করে তুলেছে।
  5. মানবিক আবেদন: যাঁরা সৎভাবে চাকরি পেয়েছেন, তাঁদের কথা মানবিক দৃষ্টিভঙ্গি দিয়ে বিবেচনা করার আর্জি জানানো হয়েছে। ‘নির্দোষ প্রমাণিত না হওয়া পর্যন্ত সকলেই নির্দোষ‘ – এই নীতির উপর জোর দেওয়া হয়েছে।
  6. যোগ্য-অযোগ্য পৃথকীকরণে ব্যর্থতা: কমিশনের অভিযোগ, আদালত যোগ্য ও অযোগ্য প্রার্থীদের সঠিকভাবে পৃথক করতে ব্যর্থ হয়েছে।
  7. তথ্যের নির্ভরযোগ্যতা নিয়ে প্রশ্ন: CBI দ্বারা সরবরাহ করা তথ্যের নির্ভরযোগ্যতা নিয়েও প্রশ্ন তুলেছে কমিশন। নিজেদের দেওয়া তথ্যে গরমিলের অভিযোগও অস্বীকার করা হয়েছে।
  8. রায় পুনর্বিবেচনার আবেদন: কমিশন ৩রা এপ্রিলের রায় বাতিল করে প্যানেল বাতিলের পরিবর্তে বিকল্প কোনও নির্দেশ দেওয়ার জন্য আবেদন করেছে।

আরো পড়ুন:  আজ উচ্চমাধ্যমিকের ফল প্রকাশ! কখন, কীভাবে জানবেন রেজাল্ট? রইল বিস্তারিত

প্রেক্ষাপট:

উল্লেখ্য, ২০১৬ সালের নিয়োগ প্রক্রিয়ায় (OMR sheet tampering), র‍্যাঙ্ক জাম্পিং (rank jumping) এবং প্যানেলের মেয়াদ উত্তীর্ণ হওয়ার পরেও নিয়োগপত্র দেওয়ার মতো গুরুতর অভিযোগ ওঠে। কলকাতা হাইকোর্ট এই সমগ্র নিয়োগ প্রক্রিয়াকে ‘অবৈধ’ ঘোষণা করে এবং ২০২২ সালের এপ্রিল মাসে প্রায় ২৫,৭৫৩ জনের চাকরি বাতিলের নির্দেশ দেয়। সুপ্রিম কোর্ট ৩রা এপ্রিল, ২০২৫ তারিখে হাইকোর্টের সেই রায়কেই মান্যতা দেয়, সমগ্র প্রক্রিয়াকে ‘পদ্ধতিগত জালিয়াতি’ (systemic fraud) বলে অভিহিত করে। তবে পরে, ১৭ই এপ্রিল CBI দ্বারা ‘যোগ্য’ বলে চিহ্নিত প্রার্থীদের ৩১শে ডিসেম্বর, ২০২৫ পর্যন্ত কাজ চালিয়ে যাওয়ার সাময়িক অনুমতি দেয় এবং রাজ্যকে নতুন নিয়োগ প্রক্রিয়া শুরু করার নির্দেশ দেয়।

সবার আগে খবরের আপডেট পান!

টেলিগ্রামে যুক্ত হন

রাজ্য সরকার এবং এসএসসির এই রিভিউ পিটিশন (যা ৩রা মে, ২০২৫ ফাইল করা হয়েছে) সেই প্রেক্ষাপটেই জমা দেওয়া হয়েছে, যেখানে যোগ্য প্রার্থীদের ভবিষ্যৎ সুরক্ষিত করার আবেদন জানানো হয়েছে। এখন দেখার বিষয়, সুপ্রিম কোর্ট এই রিভিউ পিটিশন গ্রহণ করে কিনা এবং এই মামলার জল কোন দিকে গড়ায়।

WBPAY Team

আমাদের প্রতিবেদন গুলি WBPAY Team এর দ্বারা যাচাই করে লেখা হয়। আমরা একটি স্বাধীন প্ল্যাটফর্ম যা পাঠকদের জন্য স্পষ্ট এবং সঠিক খবর পৌঁছে দিতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। আমাদের লক্ষ্য এবং সাংবাদিকতার মান সম্পর্কে জানতে, অনুগ্রহ করে আমাদের About us এবং Editorial Policy পৃষ্ঠাগুলি পড়ুন।
Back to top button