SSC Result: এ কি রেজাল্ট? ৬০-এ ৬০ পেয়েও ইন্টারভিউয়ের ডাক নেই, কেন এত হাই কাট-অফ? আসল কারণ জানলে চমকে উঠবেন
SSC Result: অবশেষে প্রকাশিত হল SSC-র একাদশ-দ্বাদশ শ্রেণীর শিক্ষক নিয়োগের ইন্টারভিউয়ের তালিকা, কিন্তু ফল প্রকাশের পর থেকেই চাকরিপ্রার্থীদের মধ্যে আনন্দের বদলে ছড়িয়ে পড়েছে তীব্র হতাশা এবং ক্ষোভ। বিশেষ করে, যারা ‘ফ্রেশার’ বা নতুন প্রার্থী, তাদের কাছে এই ফলাফল এক দুঃস্বপ্নের চেয়ে কম কিছু নয়। অভিযোগ উঠেছে, কাট-অফ মার্কস এতটাই বেশি রাখা হয়েছে যে, লিখিত পরীক্ষায় ৬০-এ ৬০ পেয়েও বহু যোগ্য প্রার্থী ইন্টারভিউয়ের জন্যই ডাক পাননি। এই ঘটনাকে অনেকেই ‘প্রহসন’ বলে অভিহিত করছেন।
এই ফলাফলের পর থেকেই প্রশ্ন উঠছে, কেন এই অস্বাভাবিক উচ্চ কাট-অফ? এর পেছনে আসল কারণটাই বা কী?
অবিশ্বাস্য কাট-অফ: স্বপ্নভঙ্গ ফ্রেশারদের
এবারের প্রকাশিত তালিকায় কাট-অফ দেখে কার্যত মাথায় হাত পড়েছে সকলের। উদাহরণস্বরূপ, কিছু বিষয়ের কাট-অফ এক নজরে দেখা যাক:
| বিষয় ও ক্যাটাগরি | কাট-অফ মার্কস |
|---|---|
| বাংলা (জেনারেল – পুরুষ/মহিলা) | 73 |
| বাংলা (জেনারেল – মহিলা) | 72 |
| ইতিহাস (জেনারেল – পুরুষ/মহিলা) | 75 |
| ইংরেজি (জেনারেল – পুরুষ/মহিলা) | 77 |
শুধু এই বিষয়গুলোই নয়, অন্যান্য কলা বিভাগের বিষয়গুলিতেও কাট-অফ আকাশছোঁয়া। এমনকি, যে প্রার্থী লিখিত পরীক্ষায় ৬০ এবং অ্যাকাডেমিক স্কোরে ১০, অর্থাৎ মোট ৭০ পেয়েও ইন্টারভিউয়ের ডাক পাননি, এমন উদাহরণও রয়েছে। এই পরিস্থিতিতে ফ্রেশার প্রার্থীদের মধ্যে চরম হতাশা তৈরি হয়েছে।
সবার আগে খবরের আপডেট পান!
টেলিগ্রামে যুক্ত হনকেন এত হাই কাট-অফ? নেপথ্যের কারণ কী?
বিশেষজ্ঞ এবং চাকরিপ্রার্থীদের মতে, এই অস্বাভাবিক উচ্চ কাট-অফের মূল কারণ হল ইন-সার্ভিস বা কর্মরত শিক্ষকদের জন্য বরাদ্দ অতিরিক্ত ১০ নম্বর। নিয়ম অনুযায়ী, কর্মরত শিক্ষকরা অভিজ্ঞতার জন্য অতিরিক্ত ১০ নম্বর পেয়েছেন। এই নম্বরটি লিখিত পরীক্ষার নম্বরের সাথে যোগ হওয়ার ফলেই মোট নম্বর অনেকটা বেড়ে গেছে।
ফ্রেশারদের অভিযোগ, এই ১০ নম্বর তাদের এবং ইন-সার্ভিস প্রার্থীদের মধ্যে একটি বিশাল ব্যবধান তৈরি করে দিয়েছে। একজন ফ্রেশার প্রার্থী যদি লিখিত পরীক্ষায় অসাধারণ ফল করেও ৬০ পান, সেখানে একজন ইন-সার্ভিস প্রার্থী তুলনামূলকভাবে কম নম্বর পেয়েও অভিজ্ঞতার ১০ নম্বর যোগ হওয়ায় সহজেই তাকে টপকে যাচ্ছেন। তাদের মতে, যদি এই পরীক্ষা নেওয়ার উদ্দেশ্যই ছিল কর্মরত শিক্ষকদের সুযোগ দেওয়া, তবে প্রথম থেকেই তা ঘোষণা করে দেওয়া উচিত ছিল। কেন লক্ষ লক্ষ ফ্রেশার প্রার্থীকে স্বপ্ন দেখিয়ে তাদের পরিশ্রম এবং আবেগের সাথে এমন প্রহসন করা হল?
পরীক্ষার্থীদের মানসিক বিপর্যয় ও ভবিষ্যৎ পদক্ষেপ
এই ফলাফলের পর বহু প্রার্থী কান্নায় ভেঙে পড়েছেন। তাদের কথায়, “দিনরাত এক করে পরিশ্রম করে ৬০-এ ৬০ পেয়েও যদি ইন্টারভিউতে ডাক না পাই, তাহলে এই পরীক্ষা নেওয়ার প্রয়োজন কী ছিল?” অনেকে বলছেন, “শিক্ষকতা পেশায় প্রবেশের আগেই আমাদের মেরুদণ্ড ভেঙে দেওয়া হল।”
এই পরিস্থিতিতে কয়েকটি দাবি সামনে আসছে:
- আইনি লড়াই ও আন্দোলন: অনেকেই মনে করছেন, এই বঞ্চনার বিরুদ্ধে বৃহত্তর আন্দোলন এবং আইনি লড়াই ছাড়া আর কোনও পথ খোলা নেই।
- আপডেটেড ভ্যাকেন্সিতে নিয়োগ: সরকারের কাছে আবেদন জানানো হচ্ছে, যেহেতু বিপুল সংখ্যক শূন্যপদ রয়েছে, তাই আপডেটেড ভ্যাকেন্সিতে একটি দ্বিতীয় তালিকা প্রকাশ করে ফ্রেশারদের সুযোগ দেওয়া হোক।
- পৃথক পরীক্ষা: ভবিষ্যতে ইন-সার্ভিস এবং ফ্রেশারদের জন্য পৃথক পরীক্ষার ব্যবস্থা করার দাবিও উঠছে, যাতে উভয় পক্ষই সমান সুযোগ পায়।
সামগ্রিকভাবে, এই ফলাফল রাজ্যের শিক্ষা ব্যবস্থা এবং নিয়োগ প্রক্রিয়ার স্বচ্ছতা নিয়ে এক বিরাট প্রশ্নচিহ্ন তৈরি করেছে। লক্ষ লক্ষ শিক্ষিত যুবক-যুবতীর ভবিষ্যৎ এখন এক গভীর অনিশ্চয়তার মুখে দাঁড়িয়ে।