চাকরি

SSC Scam: ঘুষ ও সুদ-সহ মোট কত টাকা গচ্চা গেল দাগি অযোগ্যদের? জানুন দুর্নীতির আর্থিক ক্ষতির হিসাব

SSC Scam: কলকাতা হাইকোর্টের সাম্প্রতিক রায়ে কেবল প্রায় ২৬,০০০ চাকরিই বাতিল হয়নি, অবৈধভাবে নিযুক্তদের উপর নেমে এসেছে এক বিপুল আর্থিক বিপর্যয়ের খাঁড়া। দুর্নীতির মাধ্যমে পাওয়া চাকরির জন্য তাদের এখন সুদ-সহ লক্ষ লক্ষ টাকা ফেরত দিতে হবে। এই পোস্টে আমরা বিস্তারিতভাবে বিশ্লেষণ করব, ঠিক কত টাকা গচ্চা যেতে পারে অভিযুক্তদের।

আর্থিক ক্ষতির কেন্দ্রবিন্দু: সুদ-সহ কত টাকা ফেরত দিতে হবে?

আদালতের নির্দেশ অত্যন্ত স্পষ্ট: ২০১৬ সালের প্যানেলে যারা অবৈধভাবে চাকরি পেয়েছিলেন, তাদের ২০১৯ সাল থেকে পাওয়া সম্পূর্ণ বেতন ১২ শতাংশ বার্ষিক সুদসহ কোষাগারে ফেরত দিতে হবে। এর সাথে যোগ হবে চাকরির জন্য দেওয়া ঘুষের বিপুল পরিমাণ অর্থ। আইনজীবী ফেরদৌস শামিমের মতে, এই দুই মিলে ক্ষতির পরিমাণ আকাশছোঁয়া।

আসুন দুটি ভিন্ন পদের জন্য ক্ষতির হিসাবটি বিস্তারিতভাবে দেখে নেওয়া যাক:

নবম-দশম শ্রেণীর শিক্ষকদের ক্ষেত্রে

  • ঘুষের পরিমাণ: চাকরি পাওয়ার জন্য এঁদের প্রত্যেককে গড়ে ১০ থেকে ১২ লক্ষ টাকা ঘুষ দিতে হয়েছিল।
  • গৃহীত বেতন: ২০১৯ থেকে মার্চ ২০২৪ পর্যন্ত, একজন নবম-দশম শ্রেণীর শিক্ষক মোট বেতন পেয়েছেন প্রায় ২৪ লক্ষ টাকা।
  • ফেরতযোগ্য মোট অর্থ: গৃহীত বেতন (২৪ লক্ষ) এবং তার উপর ১২% সুদ।
  • চূড়ান্ত আর্থিক ক্ষতি: সব মিলিয়ে, ঘুষের টাকা এবং সুদ-সহ ফেরতযোগ্য বেতন ধরে এঁদের মোট ক্ষতির পরিমাণ দাঁড়াতে পারে প্রায় ৩৪ লক্ষ টাকা

একাদশ-দ্বাদশ শ্রেণীর শিক্ষকদের ক্ষেত্রে

  • ঘুষের পরিমাণ: এই পদের জন্যও প্রায় ১০ থেকে ১২ লক্ষ টাকা ঘুষ দিতে হয়েছিল।
  • গৃহীত বেতন: ২০১৯ থেকে মার্চ ২০২৪ পর্যন্ত, একজন একাদশ-দ্বাদশ শ্রেণীর শিক্ষক মোট বেতন পেয়েছেন প্রায় ২৬ লক্ষ টাকা।
  • ফেরতযোগ্য মোট অর্থ: গৃহীত বেতন (২৬ লক্ষ) এবং তার উপর ১২% সুদ।
  • চূড়ান্ত আর্থিক ক্ষতি: সব মিলিয়ে, এঁদের ক্ষেত্রে মোট ক্ষতির পরিমাণ দাঁড়াতে পারে প্রায় ৩৬ লক্ষ টাকা

দুর্নীতির অন্যান্য দিক

এই বিপুল আর্থিক ক্ষতির পাশাপাশি, কেলেঙ্কারির আরও কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ দিক রয়েছে যা রাজ্যের শিক্ষাব্যবস্থাকে নাড়িয়ে দিয়েছে:

সবার আগে খবরের আপডেট পান!

টেলিগ্রামে যুক্ত হন
  • ২৬,০০০ চাকরি বাতিল: ২০১৬ সালের সম্পূর্ণ এসএসসি প্যানেল বাতিল হওয়ায় রাজ্যের শিক্ষাক্ষেত্রে একটি বড় শূন্যতা তৈরি হয়েছে।
  • “দাগি অযোগ্য” তালিকা: এসএসসি এখনও পর্যন্ত ১,৮০৬ জনের একটি তালিকা প্রকাশ করলেও আইনজীবীদের মতে, আসল সংখ্যা ৬,০০০ ছাড়িয়ে যেতে পারে।
  • ভবিষ্যৎ অন্ধকার: আদালত স্পষ্ট জানিয়েছে, এই “অযোগ্য” ব্যক্তিরা ভবিষ্যতের কোনো নিয়োগ প্রক্রিয়ায় অংশ নিতে পারবেন না, যা তাদের ক্যারিয়ারে একটি পূর্ণচ্ছেদ টেনে দিয়েছে।
  • রাজনৈতিক যোগসূত্র: অভিযুক্তদের তালিকায় শাসক ও বিরোধী উভয় দলের নেতাদের আত্মীয়দের নাম থাকায় দুর্নীতির গভীরতা এবং এর রাজনৈতিক বিস্তার স্পষ্ট হয়েছে।

এই রায় শুধুমাত্র একটি দুর্নীতিগ্রস্ত নিয়োগ প্রক্রিয়াকে বাতিল করেনি, বরং এটি ভবিষ্যতের জন্য একটি কঠোর বার্তাও দিয়েছে যে দুর্নীতির ফল শেষ পর্যন্ত ভয়াবহ হতে পারে।

WBPAY Team

আমাদের প্রতিবেদন গুলি WBPAY Team এর দ্বারা যাচাই করে লেখা হয়। আমরা একটি স্বাধীন প্ল্যাটফর্ম যা পাঠকদের জন্য স্পষ্ট এবং সঠিক খবর পৌঁছে দিতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। আমাদের লক্ষ্য এবং সাংবাদিকতার মান সম্পর্কে জানতে, অনুগ্রহ করে আমাদের About us এবং Editorial Policy পৃষ্ঠাগুলি পড়ুন।
Back to top button