চাকরি

SSC SLST: অযোগ্য প্রার্থীরাও পাচ্ছেন SLST পরীক্ষার অ্যাডমিট কার্ড! RTI অভিযানে কতটা কাজ হবে?

SSC SLST: পশ্চিমবঙ্গ স্কুল সার্ভিস কমিশন (SSC) দ্বারা আয়োজিত নতুন রাজ্য স্তরের নির্বাচন পরীক্ষা (SLST) ঘিরে এক নতুন বিতর্ক দানা বেঁধেছে। একাধিক অযোগ্য এবং অযোগ্য প্রার্থীদের অ্যাডমিট কার্ড দেওয়া হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে, যা নিয়ে রাজ্যজুড়ে তৈরি হয়েছে তীব্র চাঞ্চল্য। এই ঘটনায় শুধু চাকরিপ্রার্থীদের মধ্যেই নয়, শিক্ষা মহলের অন্দরেও ছড়িয়ে পড়েছে গভীর উদ্বেগ। অনেকেই মনে করছেন, এই ঘটনা ২৫-এর নিয়োগ প্রক্রিয়াকে এক অনিশ্চিত ভবিষ্যতের দিকে ঠেলে দিচ্ছে।

বিতর্কের কেন্দ্রবিন্দু

মূল অভিযোগ হলো, স্কুল সার্ভিস কমিশন সুপ্রিম কোর্টসহ একাধিক আদালতের নির্দেশ অমান্য করেছে। আদালত স্পষ্টভাবে জানিয়েছিল যে, অযোগ্য প্রার্থীদের নতুন নিয়োগ প্রক্রিয়ায় অংশ নিতে দেওয়া যাবে না। কিন্তু অভিযোগ, কমিশন আদালতের সেই নির্দেশকে কার্যত উপেক্ষা করে অযোগ্য প্রার্থীদের পরীক্ষার জন্য আবেদন করার সুযোগ করে দিয়েছে এবং তাদের নামে অ্যাডমিট কার্ডও ইস্যু করেছে। এর ফলে, হাজার হাজার অযোগ্য প্রার্থী নতুন SLST পরীক্ষায় বসার সুযোগ পেয়ে যাচ্ছেন, যা যোগ্য প্রার্থীদের জন্য এক বড় ধাক্কা।

উদ্বেগের কারণ

এই ঘটনায় চাকরিপ্রার্থীদের মধ্যে তীব্র ক্ষোভের সঞ্চার হয়েছে। তাদের আশঙ্কা, ২০১৬ সালের SLST-এর মতোই এই নিয়োগ প্রক্রিয়াও আইনি জটিলতায় জড়িয়ে পড়তে পারে। যদি অযোগ্য প্রার্থীরা পরীক্ষায় বসেন এবং চাকরি পান, তাহলে পুরো নিয়োগ প্রক্রিয়াটিই প্রশ্নের মুখে পড়বে এবং ভবিষ্যতে তা বাতিলের সম্ভাবনাও উড়িয়ে দেওয়া যায় না। এই পরিস্থিতি এড়ানোর জন্য এবং নিয়োগ প্রক্রিয়ায় স্বচ্ছতা আনার জন্য চাকরিপ্রার্থীরা একজোট হচ্ছেন।

সমাধানের পথ: RTI অভিযান

এই সমস্যার মোকাবিলায় একটি ভাইরাল হওয়া অডিও ক্লিপে এক নতুন কৌশলের কথা বলা হয়েছে। পরিকল্পনা অনুযায়ী, তথ্য জানার অধিকার আইন (RTI) ব্যবহার করে কমিশনের কাছ থেকে কিছু গুরুত্বপূর্ণ তথ্য চাওয়া হবে। এই RTI আবেদনের মূল উদ্দেশ্য হলো:

  • মোট আবেদনকারীর সংখ্যা: ৯, ১০, ১১ এবং ১২ শ্রেণীর জন্য মোট কতজন আবেদন করেছেন, তার সঠিক পরিসংখ্যান জানা।
  • “দাগি” প্রার্থীদের সংখ্যা: কতজন অযোগ্য প্রার্থী আবেদন করেছেন, তাদের শ্রেণীভিত্তিক তথ্য বের করা।
  • অ্যাডমিট কার্ডের তথ্য: সুপ্রিম কোর্টের রায় অনুযায়ী, কতজন “দাগি” প্রার্থীকে অ্যাডমিট কার্ড দেওয়া হয়েছে এবং তাদের পরিচয় প্রকাশ করা।

এই RTI অভিযানের মাধ্যমে কমিশনের কার্যকলাপের ওপর চাপ সৃষ্টি করা সম্ভব হবে বলে মনে করছেন আন্দোলনকারীরা। যদি কমিশন ভুল তথ্য দেয়, তাহলে সংশ্লিষ্ট আধিকারিকের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া যাবে। আর যদি কমিশন কোনো উত্তর না দেয়, তাহলে আদালতের দ্বারস্থ হয়ে অভিযোগ জানানো হবে যে, সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ অমান্য করা হয়েছে।

ভবিষ্যতের পদক্ষেপ

চাকরিপ্রার্থীরা মনে করছেন, এই RTI আবেদনটি পুরো প্রক্রিয়ায় স্বচ্ছতা আনতে একটি গুরুত্বপূর্ণ হাতিয়ার হতে পারে। ২০১৬ সালের প্যানেল বাতিলের ক্ষেত্রেও একটি RTI আবেদন গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছিল। তাই এবারও তারা আশাবাদী যে, এই পদক্ষেপের মাধ্যমে ২৫-এর নিয়োগ প্রক্রিয়াকে আইনি জটিলতা থেকে বাঁচানো সম্ভব হবে। এখন দেখার বিষয়, স্কুল সার্ভিস কমিশন এই বিষয়ে কী পদক্ষেপ নেয় এবং এই বিতর্ক শেষ পর্যন্ত কোন দিকে মোড় নেয়।

WBPAY Team

আমাদের প্রতিবেদন গুলি WBPAY Team এর দ্বারা যাচাই করে লেখা হয়। আমরা একটি স্বাধীন প্ল্যাটফর্ম যা পাঠকদের জন্য স্পষ্ট এবং সঠিক খবর পৌঁছে দিতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। আমাদের লক্ষ্য এবং সাংবাদিকতার মান সম্পর্কে জানতে, অনুগ্রহ করে আমাদের About us এবং Editorial Policy পৃষ্ঠাগুলি পড়ুন।
Back to top button