SSC SLST: “আন্দোলন করলে ১৪ হাজারে নিয়োগ,” SSC চেয়ারম্যানের মন্তব্যে বিতর্কের ঝড়!

SSC SLST Recruitment: পশ্চিমবঙ্গ স্কুল সার্ভিস কমিশনের (SSC) অফিসে SLST চাকরিপ্রার্থীদের সাথে চেয়ারম্যানের বৈঠক নিষ্ফলা রইল। নতুন শিক্ষক নিয়োগের একাধিক দাবি নিয়ে আলোচনা হলেও, কমিশনের তরফ থেকে কোনো ইতিবাচক সাড়া মেলেনি বলে জানা গেছে। এই বৈঠকের পর ফ্রেশার চাকরিপ্রার্থীদের মধ্যে তীব্র হতাশা এবং ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে, যা রাজ্যের শিক্ষক নিয়োগ প্রক্রিয়াকে এক নতুন সংকটের মুখে দাঁড় করিয়েছে।
বৈঠকের মূল বিষয় এবং কমিশনের অনড় মনোভাব
এসএসসি চেয়ারম্যান এবং সেক্রেটারি মহাশয়ের সাথে আলোচনায় বসেন SLST-র নতুন চাকরিপ্রার্থীরা। তাদের মূল দাবিগুলো ছিল:
- শূন্যপদ বৃদ্ধি: রাজ্যের বিপুল সংখ্যক শূন্যপদের কথা মাথায় রেখে, বিজ্ঞপ্তিতে অন্তত এক লক্ষ শূন্যপদ অন্তর্ভুক্ত করার দাবি জানানো হয়। কিন্তু কমিশন এই দাবি সরাসরি নাকচ করে দিয়েছে।
- অভিজ্ঞতার জন্য অতিরিক্ত নম্বর: অভিজ্ঞ প্রার্থীদের জন্য বরাদ্দ ১০ নম্বর বাতিলের দাবি করা হয়। চাকরিপ্রার্থীদের মতে, এটি ফ্রেশারদের জন্য বৈষম্যমূলক। বিকল্প হিসেবে, এই নম্বরটি ইন্টারভিউয়ের পরে যোগ করার প্রস্তাব দেওয়া হলেও কমিশন তাতে কর্ণপাত করেনি। কমিশনের যুক্তি, সমস্ত প্রক্রিয়া গ্যাজেট এবং নিয়ম মেনেই হবে।
ফ্রেশারদের প্রতি কমিশনের কঠোর বার্তা
বৈঠকে কমিশনের মনোভাব ছিল অপ্রত্যাশিতভাবে কঠোর। চেয়ারম্যান স্পষ্ট জানিয়ে দেন যে, অভিজ্ঞ শিক্ষকদের (যেমন KVS বা NVS-এর কর্মরত শিক্ষক) নিয়োগের দিকেই তারা বেশি আগ্রহী। তার মতে, অভিজ্ঞ শিক্ষকরা স্কুলের পঠন-পাঠনের মান উন্নত করতে পারবেন। ফ্রেশারদের যোগ্যতা নিয়ে প্রশ্ন তুলে তিনি বলেন, “আমরা কেন ফ্রেশারদের নিতে যাব? যাদের অভিজ্ঞতা আছে, তারা বেশি ভালো পড়াতে পারবেন।”
এই মন্তব্যের পর ফ্রেশারদের ভবিষ্যৎ নিয়ে গভীর উদ্বেগ তৈরি হয়েছে। তাদের মতে, কমিশন যদি অভিজ্ঞদেরই অগ্রাধিকার দেয়, তাহলে নতুনদের জন্য সুযোগ কোথায়?
আন্দোলনের হুঁশিয়ারি এবং চাকরির অনিশ্চয়তা
চাকরিপ্রার্থীরা যখন তাদের দাবি নিয়ে আরও সোচ্চার হন, তখন কমিশন পরোক্ষভাবে হুঁশিয়ারি দেয় বলে অভিযোগ। বলা হয়, যদি আন্দোলন চলতে থাকে, তাহলে মাত্র ১৪,০০০ শূন্যপদে নিয়োগ করা হবে, যা চাকরিপ্রার্থীদের আশার তুলনায় নিতান্তই কম। এর ফলে, যোগ্য প্রার্থীরাও চাকরি থেকে বঞ্চিত হতে পারেন।
বৈঠকের পর এক চাকরিপ্রার্থী জানান, “আজকের আলোচনার পর এটা স্পষ্ট যে, বাড়িতে বসে থাকলে চাকরি পাওয়া যাবে না। আমাদের ঐক্যবদ্ধ হয়ে বৃহত্তর আন্দোলনের পথে নামতে হবে।”
এই পরিস্থিতি রাজ্যের হাজার হাজার শিক্ষিত বেকারের ভবিষ্যৎকে এক গভীর অনিশ্চয়তার মধ্যে ঠেলে দিয়েছে। একদিকে চাকরির আকাল, অন্যদিকে কমিশনের এই কঠোর মনোভাব, সব মিলিয়ে রাজ্যের শিক্ষক নিয়োগ প্রক্রিয়া এক জটিল মোড়ে দাঁড়িয়ে। এখন দেখার, ভবিষ্যতে চাকরিপ্রার্থীরা কোন পথে হাঁটেন এবং সরকার বা কমিশনের মনোভাব বদলায় কিনা।