SSC Teachers Protest: কখনো ভাবিনি রাস্তায় বসে খাতা দেখতে হবে, কিন্তু… বিকাশভবনের সামনে আন্দোলনের চিত্র

SSC Teachers Protest: পশ্চিমবঙ্গে শিক্ষকদের আন্দোলন এক নতুন মাত্রা পেয়েছে, যেখানে চাকরীহারা শিক্ষক-শিক্ষিকারা তাঁদের অধিকারের জন্য লড়াই করার পাশাপাশি ছাত্রছাত্রীদের প্রতি নিজেদের দায়বদ্ধতা ভোলেননি। এমনই এক চিত্র দেখা গেল সাম্প্রতিক বিক্ষোভে, যেখানে পূর্ব বর্ধমানের ভূগোল শিক্ষিকা অর্পিতা সেনগুপ্তকে দেখা গেল আন্দোলনের ফাঁকেই পরীক্ষার খাতা দেখতে। এই ঘটনা নাড়িয়ে দিয়েছে সকলকে, তুলে ধরেছে শিক্ষকদের নিষ্ঠা এবং একইসাথে তাঁদের বর্তমান পরিস্থিতির করুন চিত্র।
বিকাশ ভবনের সামনে আন্দোলনরত পাঁচজন শিক্ষককে পুলিশি জিজ্ঞাসাবাদের সম্মুখীন হতে হয়েছে। তাঁদের বিরুদ্ধে সরকারি সম্পত্তি নষ্ট এবং সরকারি কর্মচারীদের হুমকি দেওয়ার মতো গুরুতর অভিযোগ আনা হয়েছে। যদিও শিক্ষকরা এই সমস্ত অভিযোগ অস্বীকার করে জানিয়েছেন যে তাঁরা শান্তিপূর্ণভাবে এবং নিরস্ত্র অবস্থায় প্রতিবাদ করছিলেন।
এই আন্দোলনের মধ্যে বিশেষভাবে নজর কেড়েছে অর্পিতা সেনগুপ্তের ঘটনা। চাকরী হারানোর পরেও, তিনি তাঁর ছাত্রছাত্রীদের প্রতি দায়বদ্ধতা ভোলেননি। আন্দোলনের স্থলেই তাঁকে ভূগোলের খাতা দেখতে দেখা যায়। তাঁর কথায়, “এই রকমটা হবে কোনোদিন দুঃস্বপ্নেও ভাবিনি। স্কুল খোলার আগেই ফলাফল তৈরি করতে হবে, ছাত্রছাত্রীদের কাছে আমি দায়বদ্ধ”। অর্পিতার এই কাজ একদিকে যেমন তাঁর কর্তব্যের প্রতি নিষ্ঠার পরিচয় দেয়, তেমনই অন্যদিকে চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দেয় রাজ্যের শিক্ষাব্যবস্থার এক সংকটময় পরিস্থিতি।
আন্দোলনে শিশুদের উপস্থিতি নিয়ে শিশু অধিকার সুরক্ষা কমিশনও উদ্বেগ প্রকাশ করেছে এবং বিধাননগর কমিশনারেটের কাছে এই বিষয়ে রিপোর্ট তলব করেছে। শিক্ষকদের এই লড়াইয়ে তাঁদের পরিবারের সদস্যরাও পাশে দাঁড়িয়েছেন। যেমন, আর এক আন্দোলনকারী শিক্ষিকা রাজশ্রী রায়ের স্বামী তাঁর অসুস্থ স্ত্রীর পাশে থেকে তাঁকে ক্রমাগত সাহস জুগিয়ে চলেছেন।
এই ঘটনাগুলি পশ্চিমবঙ্গের শিক্ষক আন্দোলনের একাধিক দিক তুলে ধরেছে – একদিকে যেমন রয়েছে প্রশাসনের কঠোর মনোভাব এবং শিক্ষকদের বিরুদ্ধে অভিযোগ, তেমনই অন্যদিকে রয়েছে শিক্ষকদের কর্তব্যে অবিচল থাকার মানসিকতা এবং সহকর্মীদের প্রতি সহমর্মিতা। অর্পিতা সেনগুপ্তের মতো শিক্ষিকারা প্রমাণ করেছেন যে পরিস্থিতি যতই কঠিন হোক না কেন, তাঁরা তাঁদের ছাত্রছাত্রীদের ভবিষ্যৎ নিয়ে সর্বদা চিন্তিত এবং দায়বদ্ধ। এই আন্দোলন শুধুমাত্র চাকরী ফিরে পাওয়ার লড়াই নয়, এ লড়াই শিক্ষার অধিকার এবং শিক্ষকদের সম্মানেরও।