SSC Teachers: মর্মান্তিক! শিক্ষকের মৃত্যু, বিক্ষোভে উত্তাল রাজ্য, ‘অর্ধনগ্ন’ প্রতিবাদ অভিযানের ডাক

SSC Teachers: রাজ্যে ফের শিক্ষাব্যবস্থা ও চাকরিপ্রার্থীদের দুর্দশা নিয়ে প্রতিবাদের আগুন জ্বলে উঠেছে। সম্প্রতি মুর্শিদাবাদে চাকরি হারানো এক স্কুল শিক্ষক, প্রবীন কর্মকারের মৃত্যুর ঘটনাকে কেন্দ্র করে শোক ও ক্ষোভের বাতাবরণ তৈরি হয়েছে। এই মর্মান্তিক ঘটনার প্রতিবাদে এবং নিজেদের একাধিক দাবি আদায়ে শুক্রবার (৩০শে মে) শিয়ালদহ থেকে নবান্ন পর্যন্ত এক বৃহত্তর প্রতিবাদ মিছিলের ডাক দিয়েছেন চাকরিচ্যুত শিক্ষক, শিক্ষিকা ও শিক্ষাকর্মীরা।
জানা গিয়েছে, মৃত শিক্ষক প্রবীন কর্মকার কিডনির সমস্যায় ভুগছিলেন এবং তাঁর ডায়ালিসিস চলছিল। হাসপাতাল সূত্রে তাঁর মৃত্যুর কারণ ব্রেন হেমারেজ বলে জানানো হলেও, আন্দোলনরত শিক্ষকদের দাবি, চাকরি হারানোর মানসিক চাপ এবং দুশ্চিন্তার কারণেই তাঁর স্ট্রোক হয়, যা পরিণামে তাঁর মৃত্যু ডেকে আনে।
এই ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্তের চাকরিচ্যুত শিক্ষকেরা ক্ষোভে ফেটে পড়েছেন। তাঁরা রাজ্য সরকারের দ্বিতীয় দফার পরীক্ষার সিদ্ধান্তের তীব্র বিরোধিতা করছেন। আন্দোলনকারীদের বক্তব্য, তাঁরা দুর্নীতির শিকার এবং কোনও দুর্নীতি না করেও তাঁদের চাকরি গিয়েছে। তাই পুনরায় পরীক্ষায় বসার পরিবর্তে তাঁদের যোগ্যতার ভিত্তিতে সসম্মানে চাকরিতে পুনর্বহালের দাবি জানিয়েছেন তাঁরা।
প্রতিবাদীরা জানিয়েছেন, শুক্রবার সকাল ১১টায় শিয়ালদহ স্টেশন থেকে এই প্রতিবাদ মিছিল শুরু হবে, যা নবান্নের উদ্দেশে রওনা দেবে। এই মিছিলের একটি উল্লেখযোগ্য দিক হলো, শিক্ষকেরা “অর্ধনগ্ন” অবস্থায় প্রতিবাদে সামিল হবেন। তাঁদের কথায়, সরকারি দুর্নীতি এবং কমিশন ও পর্ষদের উদাসীনতা রাজ্যের শিক্ষা ব্যবস্থাকে এবং যোগ্য চাকরিপ্রার্থীদের “নগ্ন” করে দিয়েছে। তাই এই অভিনব প্রতিবাদের পথ বেছে নিয়েছেন তাঁরা।
নবান্নে পৌঁছে তাঁরা সরাসরি মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে সাক্ষাৎ করে তাঁদের দাবিদাওয়া জানাতে চান। তাঁদের মূল দাবিগুলির মধ্যে রয়েছে:
- অবিলম্বে পরীক্ষায় না বসিয়ে যোগ্য চাকরিহারাদের চাকরিতে পুনর্বহাল করা।
- যাঁরা দুর্নীতির সঙ্গে যুক্ত নয়, তাঁদের সম্মানজনকভাবে চাকরিতে ফিরিয়ে নেওয়ার প্রক্রিয়া স্পষ্ট করা।
আন্দোলনকারীরা মুখ্যমন্ত্রীর সাম্প্রতিক পরীক্ষার মাধ্যমে নিয়োগ এবং রিভিউ প্রক্রিয়ার ঘোষণার সঙ্গেও দ্বিমত পোষণ করেছেন। তাঁদের মতে, রিভিউ প্রক্রিয়াকেই অগ্রাধিকার দেওয়া উচিত এবং তারপরেই অন্যান্য আইনি পদক্ষেপের মাধ্যমে যোগ্যদের চাকরি ফিরিয়ে দেওয়া হোক। তাঁরা আরও উল্লেখ করেছেন যে, প্রায় ১০ বছর পর নতুন করে প্রতিযোগিতামূলক পরীক্ষার জন্য মানসিক প্রস্তুতি নেওয়া অত্যন্ত কঠিন, বিশেষত যখন অনেকের বয়স বেড়েছে, কেউ অসুস্থ বা কেউ গর্ভবতী। এই পরিস্থিতিতে পরীক্ষার আয়োজন হলে বহু যোগ্য প্রার্থীই বঞ্চিত হবেন বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন তাঁরা। যদি পরিস্থিতি আরও খারাপ হয় এবং যোগ্যরা চাকরি ফিরে না পান, তাহলে আরও কঠোর পদক্ষেপ নেওয়ার হুঁশিয়ারিও দিয়েছেন আন্দোলনকারীরা।
এই ঘটনা রাজ্যজুড়ে আলোড়ন সৃষ্টি করেছে এবং চাকরিচ্যুত শিক্ষামহলের ভবিষ্যৎ নিয়ে নতুন করে প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে। সকলের নজর এখন শুক্রবারের প্রতিবাদ মিছিল এবং রাজ্য সরকারের পরবর্তী পদক্ষেপের দিকে।