WBBSE: এবার থেকে রাজ্যের সমস্ত স্কুলে রোজ গাইতে হবে ‘বাংলার মাটি, বাংলার জল’! পর্ষদের কড়া নির্দেশিকা জারি
State Song: পশ্চিমবঙ্গ মধ্যশিক্ষা পর্ষদ (WBBSE) রাজ্যের শিক্ষা ব্যবস্থায় একটি গুরুত্বপূর্ণ সংযোজন করেছে। পর্ষদের তরফে ৬ই নভেম্বর, ২০২৫ তারিখে একটি বিশেষ বিজ্ঞপ্তি জারি করা হয়েছে, যার মাধ্যমে রাজ্যের সমস্ত সরকার-পোষিত (aided) এবং স্পনসর্ড উচ্চ প্রাথমিক ও মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে প্রতিদিনের প্রার্থনাসভায় রাজ্যগান গাওয়া বাধ্যতামূলক করা হয়েছে। এই নির্দেশ অবিলম্বে কার্যকর করার জন্য সমস্ত স্কুলের প্রধান শিক্ষকদের জানানো হয়েছে, যা রাজ্যের লক্ষ লক্ষ ছাত্রছাত্রীর দৈনন্দিন রুটিনে একটি নতুন অধ্যায়ের সূচনা করল।
বিজ্ঞপ্তির মূল বিষয়বস্তু
পর্ষদের ডেপুটি সেক্রেটারি (অ্যাকাডেমিক), ঋতব্রত চ্যাটার্জী-এর স্বাক্ষর করা এই বিজ্ঞপ্তিটির নম্বর হল D.S.(Aca)/859/N/11। এতে অত্যন্ত স্পষ্টভাবে বলা হয়েছে যে, এখন থেকে প্রতিদিন সকালের প্রার্থনাসভায় (Morning Assembly) রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর রচিত ‘বাংলার মাটি, বাংলার জল’ গানটি বাধ্যতামূলকভাবে গাইতে হবে।
এই নির্দেশিকাটি স্কুল শিক্ষা দপ্তরের ২২শে সেপ্টেম্বর, ২০২৫ তারিখের একটি মেমো (Memo No. 1377-SE/S/10M-04/2025) অনুসরণ করে জারি করা হয়েছে। বিজ্ঞপ্তিতে “mandatorily” অর্থাৎ “বাধ্যতামূলকভাবে” শব্দটি ব্যবহার করে এই নির্দেশের গুরুত্বকে বিশেষভাবে প্রতিষ্ঠা করা হয়েছে। এর অর্থ হল, এই নিয়ম পালনের ক্ষেত্রে কোনও স্কুল কর্তৃপক্ষের কোনও ধরনের শিথিলতা বা অবহেলা বরদাস্ত করা হবে না। সমস্ত স্বীকৃত স্কুলের প্রধানদের এই নির্দেশ কঠোরভাবে পালন করার জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করতে বলা হয়েছে।
তাৎপর্য ও প্রভাব
সম্প্রতি পশ্চিমবঙ্গ সরকার কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের লেখা ‘বাংলার মাটি, বাংলার জল’ গানটিকে রাজ্যের রাজ্যগান (State Song) হিসেবে ঘোষণা করেছে। এই গানটি বাংলার সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য, ঐক্য এবং পরিচয়ের এক অসামান্য প্রতীক। স্কুলস্তরে এই গানটিকে বাধ্যতামূলক করার মাধ্যমে রাজ্য সরকার এবং মধ্যশিক্ষা পর্ষদ সেই সিদ্ধান্তকেই বাস্তবায়িত করার পথে একটি চূড়ান্ত পদক্ষেপ গ্রহণ করল।
সবার আগে খবরের আপডেট পান!
টেলিগ্রামে যুক্ত হনআশা করা হচ্ছে, এই উদ্যোগের ফলে রাজ্যের ছাত্রছাত্রীদের মধ্যে শৈশব থেকেই বাংলার সংস্কৃতি, ঐতিহ্য এবং মাটির প্রতি এক গভীর শ্রদ্ধা ও একাত্মতাবোধ জন্মাবে। প্রতিদিন স্কুল শুরুর আগে এই গানের মাধ্যমে তারা রাজ্যের প্রতি নিজেদের কর্তব্য এবং ভালোবাসা প্রকাশ করার সুযোগ পাবে, যা তাদের মধ্যে সাংস্কৃতিক গর্ববোধ তৈরিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে।
কাদের এই নির্দেশিকা পাঠানো হয়েছে?
এই নির্দেশের গুরুত্ব বোঝাতে এবং এর সঠিক রূপায়ণ নিশ্চিত করতে, পর্ষদ শুধুমাত্র স্কুল প্রধানদেরই নয়, বরং রাজ্যের শিক্ষা ব্যবস্থার সর্বোচ্চ স্তরের আধিকারিকদের কাছেও এই বিজ্ঞপ্তির কপি পাঠিয়েছে। প্রাপকদের তালিকায় রয়েছেন:
- স্কুল শিক্ষা দপ্তরের প্রিন্সিপাল সেক্রেটারি
- স্কুল শিক্ষা কমিশনার, পশ্চিমবঙ্গ সরকার
- সমস্ত জেলার ডিস্ট্রিক্ট ইন্সপেক্টর (D.I.) অফ স্কুলস (SE)
- পর্ষদের সমস্ত ডেপুটি সেক্রেটারি এবং রিজিওনাল অফিসাররা
এই পদক্ষেপের মাধ্যমে পর্ষদ এটা নিশ্চিত করতে চাইছে যে, রাজ্যের প্রতিটি প্রান্তে এবং প্রশাসনের সমস্ত স্তরে এই নির্দেশ যেন যথাযথভাবে পৌঁছে যায় এবং তা কঠোরভাবে পালিত হয়।
