পশ্চিমবঙ্গ

Temporary Workers: ব্রেকিং! প্যারা-টিচার, শিক্ষামিত্র এবং অস্থায়ী কর্মীদের সম্পূর্ণ আর্থিক সুবিধার নির্দেশ দিল সুপ্রিম কোর্ট

Temporary Workers: পশ্চিমবঙ্গ সর্বশিক্ষা মিশনের অধীনে কর্মরত অস্থায়ী কর্মীদের আর্থিক সুবিধা সংক্রান্ত মামলায় সুপ্রিম কোর্ট এক ঐতিহাসিক রায় দিয়েছে। এই রায়ের ফলে রাজ্যের হাজার হাজার প্যারা-টিচার, শিক্ষাবন্ধু, এবং শিক্ষামিত্র সহ অন্যান্য অস্থায়ী কর্মীরা বড়সড় স্বস্তি পেয়েছেন। কলকাতা হাইকোর্টের রায়কে বহাল রেখে, দেশের সর্বোচ্চ আদালত জানিয়ে দিয়েছে যে এই কর্মীদের সমস্ত আর্থিক সুযোগ-সুবিধা প্রদান করতে হবে।

মামলার প্রেক্ষাপট

পশ্চিমবঙ্গের সর্বশিক্ষা মিশনের অধীনে কর্মরত অস্থায়ী কর্মীদের আর্থিক বঞ্চনার অভিযোগ দীর্ঘদিনের। এই কর্মীরা স্থায়ী কর্মীদের মতো একই ধরনের কাজ করলেও, তাদের বেতন এবং অন্যান্য সুযোগ-সুবিধার মধ্যে বিশাল বৈষম্য ছিল। এই বৈষম্যের বিরুদ্ধে লড়াই করতে বেশ কিছু অস্থায়ী কর্মী কলকাতা হাইকোর্টের দ্বারস্থ হন।

২০২৫ সালের ৪ঠা এপ্রিল, বিচারপতি রাজশেখর মান্থা এবং বিচারপতি অজয় কুমার গুপ্তার ডিভিশন বেঞ্চ এই মামলায় এক যুগান্তকারী রায় দেয়। হাইকোর্ট তার রায়ে জানায় যে, সর্বশিক্ষা মিশনের অধীনে কর্মরত সমস্ত অস্থায়ী কর্মীদের সমস্ত আর্থিক সুবিধা প্রদান করতে হবে। আদালত ২০১১ সালের ৭ই ফেব্রুয়ারি এবং ২০১২ সালের ৩০শে মার্চের মিশন দ্বারা জারি করা স্মারকলিপিগুলিকে “অবৈধ, স্বেচ্ছাচারী এবং বৈষম্যমূলক” বলে অভিহিত করে, কারণ এগুলি কর্মীদের মধ্যে বিভাজন তৈরি করেছিল।

সুপ্রিম কোর্টের হস্তক্ষেপ

কলকাতা হাইকোর্টের এই রায়কে চ্যালেঞ্জ করে পশ্চিমবঙ্গ সর্বশিক্ষা মিশন সুপ্রিম কোর্টে একটি স্পেশাল লিভ পিটিশন (SLP) দায়ের করে। মিশনের যুক্তি ছিল যে, হাইকোর্টের এই রায় বাস্তবায়ন করা হলে রাজ্যের উপর বিপুল আর্থিক বোঝা চাপবে।

সবার আগে খবরের আপডেট পান!

টেলিগ্রামে যুক্ত হন

কিন্তু, বিচারপতি সঞ্জয় কুমার এবং বিচারপতি সতীশ চন্দ্র শর্মার বেঞ্চে এই মামলার শুনানিতে, সর্বোচ্চ আদালত সর্বশিক্ষা মিশনের আবেদন খারিজ করে দেয়। সুপ্রিম কোর্ট স্পষ্ট জানিয়ে দেয় যে, কলকাতা হাইকোর্টের রায়ে হস্তক্ষেপ করার মতো কোনো বৈধ কারণ তারা খুঁজে পায়নি। ফলস্বরূপ, হাইকোর্টের রায়ই চূড়ান্ত বলে গণ্য হয় এবং অস্থায়ী কর্মীদের আর্থিক সুবিধা প্রদানের নির্দেশ বহাল থাকে।

রায়ের প্রভাব ও তাৎপর্য

সুপ্রিম কোর্টের এই রায়ের ফলে রাজ্যের অস্থায়ী কর্মীরা নিম্নলিখিত সুবিধাগুলি পাবেন:

  • ৬০ বছর বয়স পর্যন্ত চাকরির নিশ্চয়তা।
  • স্থায়ী কর্মীদের মতো আর্থিক সুবিধা।
  • অবসরকালীন সমস্ত সুযোগ-সুবিধা।

এই রায় শুধুমাত্র মামলাকারী কর্মীদের জন্যই নয়, রাজ্যের সমস্ত অস্থায়ী কর্মীদের জন্য একটি বড় জয়। এটি প্রমাণ করে যে, দীর্ঘ লড়াইয়ের পর হলেও ন্যায়বিচার পাওয়া সম্ভব। তবে, উল্লেখ্য যে, এই নির্দিষ্ট মামলার আবেদনকারীরা সরাসরি সুবিধা পেলেও, অন্যান্য অস্থায়ী কর্মীদের হয়তো একই ধরনের সুবিধা পেতে হলে নতুন করে আদালতের দ্বারস্থ হতে হতে পারে।

এই ঐতিহাসিক রায় পশ্চিমবঙ্গের অস্থায়ী কর্মীদের অধিকার রক্ষায় এক নতুন দিগন্ত উন্মোচন করল। এটি রাজ্য সরকারকে অস্থায়ী কর্মীদের প্রতি তার নীতির পুনর্বিবেচনা করতে বাধ্য করবে এবং ভবিষ্যতে তাদের জন্য আরও সুরক্ষিত কর্মপরিবেশ তৈরি করতে সহায়ক হবে।

WBPAY Team

আমাদের প্রতিবেদন গুলি WBPAY Team এর দ্বারা যাচাই করে লেখা হয়। আমরা একটি স্বাধীন প্ল্যাটফর্ম যা পাঠকদের জন্য স্পষ্ট এবং সঠিক খবর পৌঁছে দিতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। আমাদের লক্ষ্য এবং সাংবাদিকতার মান সম্পর্কে জানতে, অনুগ্রহ করে আমাদের About us এবং Editorial Policy পৃষ্ঠাগুলি পড়ুন।
Back to top button