Teacher TET Mandatory: কোন আইনের ভিত্তিতে রেট্রোস্পেক্টিভ টেট পাশ বাধ্যতামূলক রায়? এর থেকে বাঁচার উপায় কী?

Teacher TET Mandatory: সম্প্রতি সুপ্রিম কোর্টের এক ঐতিহাসিক রায়ে সমস্ত কর্মরত শিক্ষকদের জন্য টেট (TET) বা শিক্ষক যোগ্যতা পরীক্ষা বাধ্যতামূলক করা হয়েছে। এই রায়ের পর থেকে শিক্ষক মহলে ব্যাপক আলোচনা ও উদ্বেগের সৃষ্টি হয়েছে। বিশেষ করে, শিক্ষার অধিকার আইন (RTE) ২০০৯-এর ২০১৭ সালের একটি সংশোধনীকে কেন্দ্র করে নতুন করে বিতর্ক তৈরি হয়েছে। এই ব্লগ পোস্টে আমরা সেই সংশোধনীর মূল বিষয়বস্তু, সুপ্রিম কোর্টের রায়ের প্রভাব এবং শিক্ষকদের জন্য সম্ভাব্য পদক্ষেপ নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করব।
বিতর্কের কেন্দ্রবিন্দু: RTE Act 2017 সংশোধনী
২০১৭ সালের ১৭ই অক্টোবর, কেন্দ্রীয় সরকার শিক্ষার অধিকার আইনের নিয়মে একটি গুরুত্বপূর্ণ সংশোধনী আনে। এই সংশোধনীর মূল বিষয় ছিল:
- শিক্ষাগত যোগ্যতা অর্জনের সময়সীমা: যে সমস্ত শিক্ষক শিক্ষিকারা ১লা এপ্রিল ২০১৫-এর আগে নিযুক্ত হয়েছিলেন এবং তাদের ন্যূনতম শিক্ষাগত যোগ্যতা (যার মধ্যে টেট অন্তর্ভুক্ত) ছিল না, তাদের সেই যোগ্যতা অর্জনের জন্য চার বছরের সময় দেওয়া হয়েছিল। অর্থাৎ, ১লা এপ্রিল ২০১৯-এর মধ্যে তাদের টেট পাস করার কথা বলা হয়েছিল।
- রেট্রোস্পেক্টিভ এফেক্ট (Retrospective Effect): আইনটি পূর্ববর্তী সময় থেকে অর্থাৎ ১লা এপ্রিল ২০১৫ থেকে কার্যকর করা হয়। তবে, একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় উল্লেখ করা হয় যে, “interest of no person shall be adversely affected” অর্থাৎ এই নিয়ম কার্যকর করার ফলে কোনো ব্যক্তির স্বার্থে আঘাত লাগবে না।
কিন্তু সেই সময় এই বিষয়টি নিয়ে বিশেষ চর্চা হয়নি, এবং কেন্দ্র বা রাজ্য কোনো তরফ থেকেই শিক্ষকদের ওপর এই নিয়ম কার্যকর করার জন্য চাপ সৃষ্টি করা হয়নি। ফলে, বিষয়টি আলোচনার বাইরেই থেকে যায়।
সুপ্রিম কোর্টের রায় এবং তার প্রভাব
সুপ্রিম কোর্ট সম্প্রতি এই পুরনো আইনকেই হাতিয়ার করে রায় দিয়েছে। আদালত জানিয়েছে যে, যেহেতু শিক্ষকরা নির্দিষ্ট সময়সীমার মধ্যে যোগ্যতা অর্জন করেননি, তাই তাদের আরও একবার সুযোগ দেওয়া হচ্ছে।
- নতুন সময়সীমা: ১লা সেপ্টেম্বর ২০২৫ থেকে পরবর্তী দুই বছরের মধ্যে, অর্থাৎ ১লা সেপ্টেম্বর ২০২৭-এর মধ্যে, সমস্ত কর্মরত শিক্ষকদের টেট পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হতে হবে।
- চাকরির স্থায়িত্বের প্রশ্ন: যদিও আইনটিতে বলা হয়েছে যে কোনো ব্যক্তির স্বার্থ ক্ষুণ্ণ হবে না, তার অর্থ এই নয় যে চাকরি চলে যাবে না। এর ব্যাখ্যা হলো, আইনটি পুরনো সময় থেকে কার্যকর হলেও, পুরনো সময়ে যোগ্যতা না থাকার কারণে চাকরি যাবে না। কিন্তু নতুন করে যে সময়সীমা দেওয়া হয়েছে, তার মধ্যে যোগ্যতা অর্জন করতে না পারলে চাকরি থাকা নিয়ে অনিশ্চয়তা তৈরি হতে পারে।
শিক্ষকদের বাঁচার উপায় কী?
এই পরিস্থিতিতে দাঁড়িয়ে শিক্ষকদের সামনে কয়েকটি সম্ভাব্য পথ খোলা রয়েছে।
- কেন্দ্রীয় সরকারের হস্তক্ষেপ: যেহেতু এই আইনটি কেন্দ্রীয় সরকার তৈরি করেছিল, তাই একমাত্র তারাই পারে নতুন কোনো সংশোধনী এনে এই নিয়মকে পরিবর্তন করতে। যদি কেন্দ্র সরকার আইন সংশোধন করে জানায় যে এই নিয়মটি পূর্ববর্তী শিক্ষকদের জন্য প্রযোজ্য হবে না, তাহলেই একমাত্র এর থেকে নিষ্কৃতি পাওয়া সম্ভব।
- রিভিউ পিটিশনের কার্যকারিতা: অনেকেই রিভিউ পিটিশনের কথা ভাবছেন। উত্তরপ্রদেশ সরকার ইতিমধ্যেই রিভিউ পিটিশন দাখিল করেছে। কিন্তু আইন বিশেষজ্ঞদের মতে, কোনো নতুন এবং উপযুক্ত তথ্য ছাড়া রিভিউ পিটিশনে সাফল্য পাওয়ার সম্ভাবনা খুবই কম।
- যোগ্যতা অর্জন: সবচেয়ে বাস্তবসম্মত এবং সুরক্ষিত উপায় হলো আদালতের নির্দেশ মেনে নির্দিষ্ট সময়সীমার মধ্যে টেট পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হওয়া।
এই রায় যে রাজ্যের লক্ষ লক্ষ শিক্ষকের জীবনে এক বিরাট প্রভাব ফেলবে, তা নিয়ে কোনো সন্দেহ নেই। এখন দেখার বিষয়, সরকার এবং শিক্ষক সংগঠনগুলি আগামী দিনে কী পদক্ষেপ গ্রহণ করে।