শিক্ষা

TET Case: টেট বাধ্যতামূলক! সুপ্রিম কোর্টের ১৭ বছরের পুরনো রায়ই কি হবে ‘গেম-চেঞ্জার’?

TET Case: খেলার মাঝখানে নিয়ম পরিবর্তন করা যেমন খেলার নীতির বিরুদ্ধে, তেমনি নিয়োগ প্রক্রিয়া শুরু হওয়ার পর তার নিয়মাবলীতে পরিবর্তন আনাও যুক্তিসঙ্গত নয়। সম্প্রতি শিক্ষক নিয়োগের ক্ষেত্রে টেট (Teacher Eligibility Test) বাধ্যতামূলক করার রায় নিয়ে যখন সারা দেশের শিক্ষক মহলে আলোড়ন সৃষ্টি হয়েছে, তখন সুপ্রিম কোর্টেরই একটি পুরনো রায় নতুন করে প্রাসঙ্গিক হয়ে উঠেছে। ২০০৮ সালের ‘কে মঞ্জুশ্রী বনাম অন্ধ্রপ্রদেশ রাজ্য’ মামলায় শীর্ষ আদালতের পর্যবেক্ষণ ছিল, “the rules of the game cannot be changed after the game has begun,” অর্থাৎ, খেলা শুরু হয়ে যাওয়ার পর খেলার নিয়ম পরিবর্তন করা যায় না।

মূল ঘটনা ও সুপ্রিম কোর্টের পর্যবেক্ষণ

অন্ধ্রপ্রদেশের একটি নিয়োগ প্রক্রিয়ায় লিখিত পরীক্ষার পর নতুন করে ন্যূনতম কাট-অফ মার্কস ধার্য করা হয়েছিল, যা মূল বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ ছিল না। এই সিদ্ধান্তকে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে মামলা হলে সুপ্রিম কোর্ট রায় দেয় যে, নিয়োগ প্রক্রিয়া একবার শুরু হয়ে গেলে মাঝপথে তার শর্ত বা মানদণ্ড পরিবর্তন করা আইনসম্মত নয়। আদালতের মতে, এটি প্রার্থীদের প্রতি অবিচার। এই রায়টিই বর্তমানে টেট মামলার ক্ষেত্রে একটি শক্তিশালী আইনি যুক্তি হিসেবে উঠে আসছে। যে সমস্ত শিক্ষক টেট বাধ্যতামূলক হওয়ার আগে তৎকালীন নিয়ম মেনে নিযুক্ত হয়েছিলেন, তাদের জন্য নতুন করে টেট পাশের শর্ত আরোপ করাকে অনেকেই এই রায়ের আলোকে দেখছেন।

বর্তমান পরিস্থিতি ও বিভিন্ন রাজ্যের পদক্ষেপ

সুপ্রিম কোর্টের সাম্প্রতিক রায়ে সমস্ত কর্মরত শিক্ষকের জন্য টেট পাশ বাধ্যতামূলক করা হয়েছে। এই রায়ের বিরুদ্ধে ইতিমধ্যেই বিভিন্ন রাজ্য সরকার ও শিক্ষক সংগঠন রিভিউ পিটিশন দাখিল করেছে। আমাদের প্রকাশিত সাম্প্রতিক তথ্য অনুযায়ী, ঝাড়খণ্ড, উত্তরপ্রদেশ, কেরালা সহ একাধিক রাজ্য এবং সর্বভারতীয় প্রাথমিক শিক্ষক ফেডারেশনের মতো সংগঠনগুলো এই রায়ের পুনর্বিবেচনার জন্য আদালতের দ্বারস্থ হয়েছে। পশ্চিমবঙ্গ সরকার এখনও এই বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত না নিলেও, শিক্ষক সংগঠনগুলি আশাবাদী যে রাজ্যও তাদের পাশে দাঁড়াবে।

শিক্ষকদের ভবিষ্যৎ কী?

এই পরিস্থিতিতে, যে সমস্ত শিক্ষক বহু বছর ধরে নিষ্ঠার সঙ্গে শিক্ষকতা করে আসছেন, তাদের ভবিষ্যৎ এক অনিশ্চয়তার মুখে দাঁড়িয়ে। তাদের যুক্তি, তারা যখন চাকরিতে যোগদান করেছিলেন, তখন যে নিয়মাবলী ছিল, তা মেনেই তারা নিযুক্ত হয়েছেন। এখন নতুন করে শর্ত আরোপ করা হলে, তা কেবল তাদের প্রতি অবিচারই নয়, বরং সুপ্রিম কোর্টের পূর্ববর্তী রায়ের পরিপন্থী। বর্তমানে একাধিক রিভিউ পিটিশন দায়ের হওয়ায় বিষয়টি আবার আইনি বিচারাধীন। এখন দেখার বিষয়, শীর্ষ আদালত তার পুরনো পর্যবেক্ষণের উপর ভিত্তি করে এই কর্মরত শিক্ষকদের স্বস্তি দেয়, নাকি নতুন রায়ই বহাল থাকে।

সবার আগে খবরের আপডেট পান!

টেলিগ্রামে যুক্ত হন

WBPAY Team

আমাদের প্রতিবেদন গুলি WBPAY Team এর দ্বারা যাচাই করে লেখা হয়। আমরা একটি স্বাধীন প্ল্যাটফর্ম যা পাঠকদের জন্য স্পষ্ট এবং সঠিক খবর পৌঁছে দিতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। আমাদের লক্ষ্য এবং সাংবাদিকতার মান সম্পর্কে জানতে, অনুগ্রহ করে আমাদের About us এবং Editorial Policy পৃষ্ঠাগুলি পড়ুন।
Back to top button