শিক্ষকদের TET সংকট! পশ্চিমবঙ্গকে ২০১৬ পর্যন্ত বিশেষ সুযোগ দিলেও কাদের ভুলে এই সংকট? | TET For all Teachers

TET for all Teachers: সম্প্রতি শিক্ষকদের TET যোগ্যতা নিয়ে একটি মামলা সুপ্রিম কোর্টে নিস্পত্তি হয়েছে, যা পশ্চিমবঙ্গ সহ সারা দেশের শিক্ষা ব্যবস্থায় এক নতুন সংকট তৈরি করেছে। কেন্দ্র সরকার ২০১৬ সাল পর্যন্ত পশ্চিমবঙ্গকে বিশেষ সুযোগ দিলেও, সেই সুযোগের সঠিক ব্যবহার না হওয়ায় আজ অনেক শিক্ষকের চাকরি প্রশ্নের মুখে। এই প্রতিবেদনে আমরা এই সংকটের মূল কারণ এবং তার বিভিন্ন দিক নিয়ে আলোচনা করব।
ঘটনার প্রেক্ষাপট
২০১০ সালে, শিক্ষার অধিকার আইন (RTE Act) অনুসারে, ন্যাশনাল কাউন্সিল ফর টিচার এডুকেশন (NCTE) শিক্ষকদের জন্য ন্যূনতম যোগ্যতামান নির্ধারণ করে, যার মধ্যে অন্যতম ছিল টিচার এলিজিবিলিটি টেস্ট (TET) পাশ করা। তবে, পরিকাঠামোগত ঘাটতির কারণে অনেক রাজ্যই এই নিয়ম অবিলম্বে লাগু করতে পারেনি। এই পরিস্থিতিতে, কেন্দ্র রাজ্যগুলিকে কিছু সময়ের জন্য ছাড় দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেয়।
কেন্দ্রীয় সরকারের ছাড় ও তার শর্ত
পশ্চিমবঙ্গ সরকারও কেন্দ্রের কাছে এই ছাড়ের জন্য আবেদন জানায়। কেন্দ্র প্রথমে ৩১শে মার্চ, ২০১৪ পর্যন্ত ছাড় দেয়। পরে, রাজ্যের অনুরোধে এই সময়সীমা ৩১শে মার্চ, ২০১৬ পর্যন্ত বাড়ানো হয়। তবে, এই ছাড়ের সাথে কিছু গুরুত্বপূর্ণ শর্ত আরোপ করা হয়েছিল:
- TET পরীক্ষা আয়োজন: পশ্চিমবঙ্গ সরকারকে নিজের রাজ্যে TET পরীক্ষা আয়োজন করতে হবে।
- নিয়োগ নিয়মে পরিবর্তন: রাজ্যকে নিয়োগের নিয়ম পরিবর্তন করে TET বাধ্যতামূলক করতে হবে এবং তা সংবাদপত্রে বিজ্ঞপ্তি দিয়ে জানাতে হবে।
- শিক্ষাগত যোগ্যতা অর্জন: যে সমস্ত শিক্ষকরা ছাড়ের সময়সীমার মধ্যে নিযুক্ত হয়েছেন, তাদের NCTE-এর নির্ধারিত ন্যূনতম শিক্ষাগত যোগ্যতা অর্জন করতে হবে।
সংকটের কারণ
কেন্দ্রীয় সরকারের দেওয়া ছাড় এবং তার শর্তগুলি থেকে স্পষ্ট যে, ২০১৬ সালের ৩১শে মার্চের পরে নিযুক্ত সমস্ত শিক্ষকদের জন্য TET পাশ করা বাধ্যতামূলক ছিল। কিন্তু, অভিযোগ উঠেছে যে, এই সময়সীমার পরেও অনেক শিক্ষককে TET ছাড়াই নিয়োগ করা হয়েছে। এই অনিয়মের ফলেই আজ এই সংকট তৈরি হয়েছে এবং এই সকল শিক্ষকরা সুপ্রিম কোর্টের রায়ের দ্বারা প্রভাবিত হয়েছেন।
সবার আগে খবরের আপডেট পান!
টেলিগ্রামে যুক্ত হনসুপ্রিম কোর্টের পর্যবেক্ষণ ও রিভিউ পিটিশন
সুপ্রিম কোর্ট এই মামলায় TET বাধ্যতামূলক করার পক্ষেই রায় দিয়েছে, যার ফলে অনেক শিক্ষকের চাকরি আজ প্রশ্নের মুখে। এই রায়ের বিরুদ্ধে একাধিক রিভিউ পিটিশন দাখিল করা হয়েছে। এখন দেখার বিষয়, আইনজীবীরা এই পিটিশনগুলির স্বপক্ষে কতটা জোরালো যুক্তি তুলে ধরতে পারেন।
ভবিষ্যৎ কী?
এই সংকট পশ্চিমবঙ্গ সহ সমগ্র দেশের শিক্ষা ব্যবস্থার জন্য একটি বড় চ্যালেঞ্জ। একদিকে যেমন শিক্ষকদের ভবিষ্যৎ অনিশ্চিত, তেমনই অন্যদিকে ছাত্রছাত্রীদের পড়াশোনাও ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। এই পরিস্থিতি থেকে বেরিয়ে আসার জন্য রাজ্য সরকার এবং শিক্ষা দপ্তরকে দ্রুত পদক্ষেপ নিতে হবে।