চাকরি

TET for Teachers: ‘টেট পাশ না করলে চাকরি বাতিল’ -এই রায়ে কোন ধরনের শিক্ষকরা প্রভাবিত হবেন? জেনে নিন বিস্তারিত

TET for Teachers: সাম্প্রতিক একটি যুগান্তকারী রায়ে, ভারতের সুপ্রিম কোর্ট জানিয়েছে যে ২০১০ সালের আগে নিযুক্ত সমস্ত প্রাথমিক এবং উচ্চ প্রাথমিক শিক্ষকদেরও এখন টিচার এলিজিবিলিটি টেস্ট বা TET পাস করতে হবে। এই রায়টি শিক্ষার অধিকার আইন (RTE Act) এর ভিত্তিতে দেওয়া হয়েছে এবং দেশের শিক্ষা ব্যবস্থায় একটি বড় পরিবর্তনের ইঙ্গিত দিচ্ছে। যে সমস্ত শিক্ষক আগামী দুই বছরের মধ্যে এই নির্দেশিকা পালনে ব্যর্থ হবেন, তাদের চাকরি পর্যন্ত বাতিল হতে পারে। আসুন, এই রায়ের খুঁটিনাটি বিষয়গুলো বিস্তারিতভাবে জেনে নেওয়া যাক।

এই রায়ের ফলে কারা প্রভাবিত হবেন?

সুপ্রিম কোর্টের এই নির্দেশ দেশের লক্ষ লক্ষ শিক্ষকের কর্মজীবনে সরাসরি প্রভাব ফেলবে। নির্দিষ্টভাবে, নিম্নলিখিত শিক্ষকরা এই রায়ের আওতায় পড়বেন:

  • ২০১০ সালের আগে নিযুক্ত শিক্ষক: যে সমস্ত শিক্ষক RTE আইন কার্যকর হওয়ার আগে অর্থাৎ, ২০১০ সালের আগে চাকরিতে নিযুক্ত হয়েছিলেন, তাদের প্রত্যেককে TET পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হতে হবে।
  • প্রাথমিক ও উচ্চ প্রাথমিক স্তর: প্রথম শ্রেণী থেকে অষ্টম শ্রেণী পর্যন্ত, অর্থাৎ প্রাথমিক এবং উচ্চ প্রাথমিক স্তরের সমস্ত সরকারি এবং সরকারি সাহায্যপ্রাপ্ত স্কুলের শিক্ষকরা এর আওতায় পড়বেন।
  • ছাড়: তবে, যে সমস্ত শিক্ষকের অবসরের বয়স পাঁচ বছরের কম, তাদের ক্ষেত্রে কিছুটা ছাড় দেওয়া হয়েছে। তারা TET পাস না করলেও চাকরি থেকে বরখাস্ত হবেন না, তবে তারা কোনো পদোন্নতি বা অন্যান্য সুবিধা পাবেন না।

রায়ের আইনি ভিত্তি ও বিস্তারিত তথ্য

এই রায়টি মূলত ২০০৯ সালের শিক্ষার অধিকার আইনের উপর ভিত্তি করে দেওয়া হয়েছে, যা সমগ্র ভারতে প্রযোজ্য। ন্যাশনাল কাউন্সিল ফর টিচার এডুকেশন (NCTE) দ্বারা ২৫শে আগস্ট, ২০১০-এ শিক্ষকদের জন্য ন্যূনতম যোগ্যতার মানদণ্ড স্থাপন করা হয়েছিল। সেই নির্দেশিকা অনুযায়ী, শিক্ষকতার জন্য TET পাস করা বাধ্যতামূলক।

কিছু গুরুত্বপূর্ণ বিষয় মনে রাখা প্রয়োজন:

সবার আগে খবরের আপডেট পান!

টেলিগ্রামে যুক্ত হন
  • যেসব শিক্ষক ইতিমধ্যে TET পাস করেছেন, তাদের পুনরায় পরীক্ষা দেওয়ার কোনো প্রয়োজন নেই, কারণ TET সার্টিফিকেটের বৈধতা এখন আজীবন।
  • প্রাথমিক এবং উচ্চ প্রাথমিকের TET পরীক্ষা দুটি সম্পূর্ণ ভিন্ন। অর্থাৎ, প্রাথমিকের শিক্ষককে প্রাইমারি TET এবং উচ্চ প্রাথমিকের শিক্ষককে আপার প্রাইমারি TET পাস করতে হবে। একটি অন্যটির বিকল্প হিসেবে গণ্য হবে না।
  • পশ্চিমবঙ্গের ক্ষেত্রে, রাজ্যের নিজস্ব TET পরীক্ষাকেই মান্যতা দেওয়া হয়। সেন্ট্রাল টিচার এলিজিবিলিটি টেস্ট বা CTET রাজ্যের চাকরিতে সাধারণত গ্রহণযোগ্য হয় না, তাই রাজ্যের শিক্ষকদের রাজ্য সরকারের আয়োজিত TET-তেই উত্তীর্ণ হতে হবে।

পশ্চিমবঙ্গের জন্য পরবর্তী পদক্ষেপ কী?

যদিও সুপ্রিম কোর্টের এই রায়টি প্রাথমিকভাবে মহারাষ্ট্রের একটি মামলার পরিপ্রেক্ষিতে দেওয়া হয়েছে, তবে এর প্রভাব দেশব্যাপী হওয়ার সম্ভাবনা প্রবল। এই রায়টি সারা দেশে কার্যকর করার জন্য, প্রথমে কেন্দ্রীয় সরকারের NCTE-কে তাদের অফিসিয়াল ওয়েবসাইটে একটি বিজ্ঞপ্তি জারি করতে হবে। এরপর প্রতিটি রাজ্যের শিক্ষা দপ্তরকে আলাদা করে বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে এটি কার্যকর করতে হবে। তাই, পশ্চিমবঙ্গে এই নিয়মটি অবিলম্বে কার্যকর না হলেও, ভবিষ্যতে যে এটি প্রযোজ্য হতে চলেছে, তা প্রায় নিশ্চিত। রাজ্যের শিক্ষকদের এখন থেকেই এই পরিবর্তনের জন্য মানসিকভাবে প্রস্তুতি নেওয়া প্রয়োজন।

WBPAY Team

আমাদের প্রতিবেদন গুলি WBPAY Team এর দ্বারা যাচাই করে লেখা হয়। আমরা একটি স্বাধীন প্ল্যাটফর্ম যা পাঠকদের জন্য স্পষ্ট এবং সঠিক খবর পৌঁছে দিতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। আমাদের লক্ষ্য এবং সাংবাদিকতার মান সম্পর্কে জানতে, অনুগ্রহ করে আমাদের About us এবং Editorial Policy পৃষ্ঠাগুলি পড়ুন।
Back to top button