TET News: TET পাস না করলে চাকরি থাকবে না? প্রায় ১ লক্ষ শিক্ষকের ভবিষ্যৎ নিয়ে সুপ্রিম কোর্টে যাচ্ছে রাজ্য!
 
 TET News: প্রাথমিক শিক্ষকদের জন্য টেট (TET) বা Teacher Eligibility Test পাস বাধ্যতামূলক করে দেওয়া সুপ্রিম কোর্টের রায়কে পুনর্বিবেচনার জন্য আবেদন জানাতে চলেছে রাজ্য সরকার। এই রায়ের ফলে রাজ্যের প্রায় এক লক্ষ প্রাথমিক শিক্ষকের চাকরি প্রশ্নের মুখে দাঁড়াচ্ছে, যা নিয়ে রাজ্য শিক্ষা দপ্তরে ব্যাপক উদ্বেগ তৈরি হয়েছে। নবান্ন থেকে সবুজ সংকেত মেলার পরেই এই স্পেশাল রিভিউ পিটিশন দাখিল করার প্রস্তুতি শুরু হয়েছে।
সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ কী ছিল?
বিচারপতি দীপঙ্কর দত্ত এবং বিচারপতি অগাস্টিন জর্জ মাসিহের ডিভিশন বেঞ্চ একটি যুগান্তকারী রায়ে জানায় যে, রাজ্যের সমস্ত প্রাথমিক শিক্ষকদের চাকরি সুরক্ষিত রাখতে টেট পাস করতে হবে। এই নির্দেশ পালনের জন্য দুই বছরের সময়সীমাও বেঁধে দেওয়া হয়েছিল।
আদালতের নির্দেশ অনুযায়ী:
- যেসব প্রাথমিক শিক্ষকের চাকরির বয়স পাঁচ বছরের বেশি, তাদের সকলকেই টেট পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হতে হবে।
- শুধুমাত্র সেইসব শিক্ষকদের ছাড় দেওয়া হয়েছে, যাদের অবসরের জন্য পাঁচ বছরের কম সময় বাকি আছে।
প্রাথমিকভাবে এই রায়ের ফলে রাজ্যের প্রায় ৯০ হাজার শিক্ষক প্রভাবিত হবেন বলে মনে করা হয়েছিল। কিন্তু পরবর্তী পরিসংখ্যান সামনে আসায় বোঝা যায় যে এর প্রভাব আরও অনেক ব্যাপক।
সবার আগে খবরের আপডেট পান!
টেলিগ্রামে যুক্ত হনরাজ্যের দুশ্চিন্তার কারণ
স্কুল শিক্ষা দপ্তরের পরিসংখ্যান অনুযায়ী, বর্তমানে রাজ্যে কর্মরত প্রায় এক লক্ষ প্রাথমিক শিক্ষক রয়েছেন যারা টেট পাস করেননি। সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ কার্যকর হলে, এই বিপুল সংখ্যক শিক্ষককে টেট পরীক্ষায় বসতে এবং পাস করতে হবে। রাজ্য সরকারের আশঙ্কা, দীর্ঘ সময় ধরে শিক্ষকতা করার পর অনেকেই হয়তো এই প্রতিযোগিতামূলক পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হতে পারবেন না। বহু বছর চাকরির পর তাদের সেই “মানসিকতা” থাকবে কিনা, তা নিয়েও প্রশ্ন উঠেছে। এর ফলে রাজ্যের প্রাথমিক শিক্ষা ব্যবস্থায় একটি বড় ধরনের বিশৃঙ্খলা তৈরি হতে পারে।
পুনর্বিবেচনার আবেদনে রাজ্যের যুক্তি
রাজ্য সরকার তার রিভিউ পিটিশনে কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় তুলে ধরতে চলেছে।
- ঐতিহাসিক প্রেক্ষাপট: রাজ্যে প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদ ২০১১ সালের পর থেকে টেট পরীক্ষা চালু করে। প্রভাবিত শিক্ষকদের অধিকাংশই তার আগের সময়ে নিযুক্ত হয়েছিলেন, যখন All India Council for Technical Education (AICTE)-এর নির্দেশিকা অনুযায়ী নিয়োগ হতো এবং টেট বাধ্যতামূলক ছিল না।
- বাস্তব সমস্যা: রাজ্য সরকার যুক্তি দেবে যে, এই শিক্ষকরা বহু বছর ধরে নিষ্ঠার সঙ্গে শিক্ষকতা করে আসছেন। এখন তাদের একটি প্রতিযোগিতামূলক পরীক্ষায় বসতে বাধ্য করা অবাস্তব।
- পূর্ব অভিজ্ঞতা: ২০০৯ সালে প্রাথমিক শিক্ষকদের জন্য একটি ব্রিজ কোর্স বাধ্যতামূলক করা নিয়ে যে সমস্যা তৈরি হয়েছিল, সেই উদাহরণও তুলে ধরা হবে। এই ধরনের নির্দেশ কিভাবে শিক্ষা ব্যবস্থাকে ব্যাহত করতে পারে, তা বোঝানোর চেষ্টা করা হবে।
ইতিমধ্যেই একটি শিক্ষক সংগঠন গত ৭ই অক্টোবর এই বিষয়ে একটি রিভিউ পিটিশন দাখিল করেছে। রাজ্য সরকারের আশা, প্রায় এক লক্ষ শিক্ষকের ভবিষ্যৎ এবং রাজ্যের প্রাথমিক শিক্ষা ব্যবস্থার স্থিতিশীলতার কথা মাথায় রেখে সুপ্রিম কোর্ট তাদের আবেদন ইতিবাচকভাবে বিবেচনা করবে।

 
 