US Tech Ban: ট্রাম্প ভারতে Google, Instagram ব্যান করলে কী হবে? জোহো প্রতিষ্ঠাতার উত্তরে তোলপাড়!
US Tech Ban: সম্প্রতি সোশ্যাল মিডিয়ায় একটি গুরুতর বিতর্ক শুরু হয়েছে, যেখানে আলোচনা করা হচ্ছে যে ডোনাল্ড ট্রাম্প যদি মার্কিন টেক সংস্থাগুলির উপর ভারতে নিষেধাজ্ঞা জারি করে, তাহলে দেশের পরিস্থিতি কী হবে। যদি Google, Instagram, এবং ChatGPT-এর মতো পরিষেবাগুলি ভারতে বন্ধ হয়ে যায়, তবে আমাদের ডিজিটাল অর্থনীতি হঠাৎ করে থমকে যেতে পারে। এই উদ্বেগ আরও তীব্র হয়েছে যখন এক ভারতীয় ধনকুবের এই বিষয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেন।
হর্ষ গোয়েঙ্কার ভাইরাল পোস্ট
এই আলোচনার সূত্রপাত হয় প্রখ্যাত ভারতীয় বিলিয়নেয়ার হর্ষ গোয়েঙ্কার একটি ভাইরাল পোস্ট থেকে, যা প্রায় ১ মিলিয়ন ইম্প্রেশন পেয়েছে। গোয়েঙ্কা একটি পরিস্থিতির কথা তুলে ধরেন যেখানে ট্রাম্প এমন একটি নতুন আইন পাশ করতে পারেন যা মার্কিন টেক কোম্পানিগুলিকে ভারতে পরিষেবা দিতে বাধা দেবে।
তিনি তার পোস্টে আরও উল্লেখ করেন যে x.com (Twitter) এবং Instagram-এর মতো প্ল্যাটফর্মে ভারতীয়দের বিরুদ্ধে বর্ণবিদ্বেষ ক্রমশ বাড়ছে। গোয়েঙ্কার মতে, এই পরিস্থিতিটি “ভয়ঙ্কর” এবং ভারতের একটি ‘প্ল্যান বি’ নিয়ে ভাবার সময় এসেছে।
জোহো প্রতিষ্ঠাতার প্রতিক্রিয়া
হর্ষ গোয়েঙ্কার এই পোস্টে সাড়া দেন জনপ্রিয় ভারতীয় সফটওয়্যার কোম্পানি জোহো (Zoho)-র প্রতিষ্ঠাতা শ্রীধর ভেম্বু। তিনি গোয়েঙ্কার সঙ্গে একমত হয়ে বলেন যে ভারতের প্রযুক্তিগত নির্ভরতা শুধুমাত্র কয়েকটি অ্যাপের মধ্যে সীমাবদ্ধ নয়, বরং এটি আরও অনেক গভীর।
সবার আগে খবরের আপডেট পান!
টেলিগ্রামে যুক্ত হন- অ্যাপের বাইরেও নির্ভরতা: ভেম্বু উল্লেখ করেন যে আমরা কেবল অ্যাপের জন্যই নয়, অপারেটিং সফটওয়্যার (যেমন Apple এবং Microsoft Windows) এবং কম্পিউটার চিপসের জন্যও মার্কিন সংস্থাগুলির উপর ব্যাপকভাবে নির্ভরশীল।
- জাতীয় মিশনের প্রস্তাব: এই নির্ভরতা কাটিয়ে উঠতে ভেম্বু “প্রযুক্তিগত আত্মনির্ভরতার জন্য একটি ১০ বছরের জাতীয় মিশন”-এর প্রয়োজনীয়তার উপর জোর দেন। তার মতে, এর জন্য প্রায় ৪০ থেকে ৫০ বিলিয়ন ডলারের একটি তহবিল প্রয়োজন হতে পারে।
- স্বদেশী বিকল্প: তিনি জোহোর নিজস্ব অ্যাপ ‘আরাত্তাই’-এর কথা উল্লেখ করে বলেন যে এটি একটি ভালো শুরু, যদিও এর ব্যাপক প্রসারের জন্য আরও প্রচার প্রয়োজন।
এই নিষেধাজ্ঞা কি সত্যিই সম্ভব?
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র কি সত্যিই ভারতে এমন নিষেধাজ্ঞা জারি করতে পারে? এই প্রশ্নের উত্তরে বিভিন্ন দিক বিশ্লেষণ করা হয়েছে:
- অর্থনৈতিক কারণ: অর্থনৈতিক দৃষ্টিকোণ থেকে এর সম্ভাবনা কম। মার্কিন টেক সংস্থাগুলি ভারত থেকে বছরে প্রায় ৪০ বিলিয়ন ডলার আয় করে, যা একটি বিশাল অঙ্ক। মার্কিন সরকার এত বড় বাজার হাতছাড়া করতে চাইবে না।
- রাজনৈতিক কারণ: তবে, আজকের রাজনীতি শুধু “বিবেচনা” দিয়ে চলে না, “আবেগ” এবং ভোটারদের সমর্থনের উপরও নির্ভর করে। ট্রাম্প তার ভোটারদের খুশি করতে H1B ভিসার মতো কঠোর পদক্ষেপ নিতে পারেন।
- ভূ-রাজনৈতিক কারণ: সাধারণত, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র তার সোশ্যাল মিডিয়া অ্যাপগুলির উপর নিষেধাজ্ঞা জারি করে না, কারণ এগুলি অন্য দেশে তার প্রভাব বিস্তারের একটি বড় মাধ্যম।
‘প্ল্যান বি’-এর প্রয়োজনীয়তা
সবশেষে, উপসংহার এটাই যে ভারতের উচিত মার্কিন প্রযুক্তির উপর এই নির্ভরতাকে একটি সম্ভাব্য বিপদ হিসেবে দেখা। ডোনাল্ড ট্রাম্প এই নির্ভরতাকে ভারতের সাথে আরও ভালো বাণিজ্য চুক্তি করার জন্য একটি “লিভারেজ” হিসেবে ব্যবহার করতে পারেন।
তাই, এটি আর কোনো কাল্পনিক প্রশ্ন নয়। ভারতের কাছে একমাত্র বিকল্প হলো যত তাড়াতাড়ি সম্ভব নিজস্ব প্রযুক্তিগত বিকল্প তৈরি করা। এর মাধ্যমে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রকে একটি স্পষ্ট বার্তা দেওয়া যাবে যে এই ধরনের নিষেধাজ্ঞা জারি করে ভারতের উপর কোনো বিশেষ সুবিধা পাওয়া যাবে না।