Uttarakhand Flash Flood: উত্তরাখণ্ডের বিপর্যয়: মানবসৃষ্ট নাকি হারানো পারমাণবিক যন্ত্রের অভিশাপ?

Uttarakhand Flash Flood: উত্তরাখণ্ডের বিপর্যয়ের পিছনে কি শুধু মানবসৃষ্ট কারণই দায়ী, নাকি এর পিছনে লুকিয়ে আছে অর্ধশতাব্দী পুরানো কোনও গোপন রহস্য? সাম্প্রতিক সময়ে উত্তরাখণ্ডে, বিশেষ করে ধারালি গ্রামের মতো এলাকা যেভাবে আকস্মিক বন্যা এবং ভূমিধসে নিশ্চিহ্ন হয়ে যাচ্ছে, তা এক ভয়াবহ ভবিষ্যতের ইঙ্গিত দিচ্ছে। বিজ্ঞানীরা যদিও এর জন্য ৮০% দায়ী করছেন অপরিকল্পিত নির্মাণ এবং প্রকৃতির উপর মানুষের লাগামহীন অত্যাচারকে, বাকি ২০% কারণ হিসেবে উঠে আসছে এক চাঞ্চল্যকর তথ্য—নন্দা দেবী শিখরে হারিয়ে যাওয়া এক পারমাণবিক যন্ত্র।
নেপথ্যের কারণ
মানব সৃষ্ট কারণ:
- অপরিকল্পিত নির্মাণ: নদীখাত এবং পাহাড়ের ঢালে গজিয়ে ওঠা অসংখ্য হোটেল, রিসর্ট এবং বাড়িঘর ভূমিধস এবং বন্যার প্রধান কারণ।
- বনভূমি ধ্বংস: গাছপালা কেটে ফেলার ফলে মাটির জলধারণ ক্ষমতা কমে যাচ্ছে, যা আকস্মিক বন্যার ঝুঁকি বাড়িয়ে দিচ্ছে।
- জলবায়ু পরিবর্তন: বিশ্ব উষ্ণায়নের ফলে হিমবাহ গলে যাওয়ার হার বাড়ছে এবং আবহাওয়ার চরম রূপ দেখা যাচ্ছে।
হারিয়ে যাওয়া পারমাণবিক যন্ত্র:
১৯৬৫ সালে, ভারত ও আমেরিকার গোয়েন্দা সংস্থা (IB এবং CIA) এক গোপন অভিযানে নন্দা দেবী শিখরে একটি পারমাণবিক যন্ত্র স্থাপন করার পরিকল্পনা করে। ‘গুরু রেনপোচে’ নামের এই যন্ত্রটির উদ্দেশ্য ছিল চিনের পারমাণবিক কার্যকলাপের উপর নজরদারি করা। কিন্তু প্রবল তুষারঝড়ের কারণে দলটি যন্ত্রটি একটি গুহায় লুকিয়ে রাখতে বাধ্য হয়। দুর্ভাগ্যবশত, পরবর্তীকালে অনেক খোঁজাখুঁজি করেও সেই যন্ত্রটির আর কোনও সন্ধান পাওয়া যায়নি।
পারমাণবিক যন্ত্রের প্রভাব
বিশেষজ্ঞদের মতে, এই হারিয়ে যাওয়া যন্ত্রটিতে ৫০ কেজি প্লুটোনিয়াম ছিল, যা একটি তেজস্ক্রিয় পদার্থ। আশঙ্কা করা হচ্ছে যে, এই যন্ত্রটি এখন ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে এবং এর থেকে নির্গত তেজস্ক্রিয়তা নন্দা দেবী অঞ্চলের তাপমাত্রা বাড়িয়ে দিচ্ছে। এর ফলেই হিমবাহগুলি দ্রুত গলে যাচ্ছে এবং মেঘভাঙা বৃষ্টি ছাড়াই বিধ্বংসী বন্যার সৃষ্টি হচ্ছে, যা স্থানীয় ভাষায় ‘হরপা বান’ নামে পরিচিত। ২০১৮ সাল থেকে এই ধরনের ঘটনা উল্লেখযোগ্যভাবে বেড়েছে, যা এই আশঙ্কাকে আরও দৃঢ় করছে।
উত্তরাখণ্ডের এই বিপর্যয়ের জন্য মানুষের লোভ এবং প্রকৃতির প্রতি উদাসীনতা যে বহুলাংশে দায়ী, তা নিয়ে কোনও সন্দেহ নেই। কিন্তু নন্দা দেবী শিখরে হারিয়ে যাওয়া ‘গুরু রেনপোচে’ এবং তার থেকে সম্ভাব্য তেজস্ক্রিয় বিকিরণের বিষয়টিও উড়িয়ে দেওয়া যায় না। এই দ্বিমুখী বিপদ থেকে উত্তরাখণ্ডকে বাঁচাতে হলে একদিকে যেমন পরিবেশবান্ধব উন্নয়নের পথে হাঁটতে হবে, তেমনই অন্যদিকে এই হারিয়ে যাওয়া পারমাণবিক যন্ত্রটিকে খুঁজে বের করে নিষ্ক্রিয় করার জন্য জরুরি পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে। নইলে হয়তো ভবিষ্যতে আরও বড় বিপর্যয়ের সাক্ষী থাকতে হবে আমাদের।