Voter List Rivision: বিহারের ভোটার তালিকা থেকে ৩৫ লক্ষ নাম বাদ, বিতর্কে উত্তাল দেশ, পশ্চিমবঙ্গে কত বাদ যাবে?

Voter List Rivision: বিহারের রাজনীতিতে এক নতুন বিতর্ক দানা বেঁধেছে ভোটার তালিকা সংশোধন ঘিরে। নির্বাচন কমিশন কর্তৃক বিশেষ সংক্ষিপ্ত সংশোধনী অভিযানে রাজ্যের ভোটার তালিকা থেকে প্রায় ৩৫ লক্ষ নাম বাদ দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে, যা ২০২৫ সালের বিধানসভা নির্বাচনের প্রাক্কালে এক নতুন রাজনৈতিক সংঘাতের জন্ম দিয়েছে। এই বিশাল সংখ্যক নাম বাদ দেওয়ার পিছনে নির্বাচন কমিশনের যুক্তি হল – মৃত, স্থানান্তরিত এবং সদৃশ ভোটারদের চিহ্নিত করে একটি স্বচ্ছ ভোটার তালিকা তৈরি করা।
বিতর্কের কেন্দ্রবিন্দু
এই অভিযানের মূল কারণগুলি হল:
- মৃত ভোটার: প্রায় ১২.৫ লক্ষ নাম মৃত ভোটারদের, যারা আর জীবিত নেই।
- স্থানান্তরিত শ্রমিক: প্রায় ১৭.৫ লক্ষ মানুষ বিহার ছেড়ে অন্য রাজ্যে চলে গেছেন এবং সেখানে বসবাস করছেন।
- সদৃশ এন্ট্রি: প্রায় সাড়ে পাঁচ লক্ষ নাম একাধিকবার নথিভুক্ত হয়েছে, অর্থাৎ একই ব্যক্তি একাধিকবার ভোটার তালিকায় নাম তুলেছেন।
- বিদেশি নাগরিক: নেপাল, বাংলাদেশ এবং মায়ানমার থেকে আসা কিছু বিদেশি নাগরিক অবৈধভাবে ভারতীয় নথি তৈরি করে ভোটার তালিকায় নাম তুলেছেন বলে অভিযোগ উঠেছে।
বিরোধী দলগুলির অভিযোগ
বিরোধী দলগুলি, বিশেষ করে ইন্ডিয়া জোট, এই অভিযানের তীব্র সমালোচনা করেছে। তাদের অভিযোগ, এটি একটি সুপরিকল্পিত ষড়যন্ত্র, যার মাধ্যমে প্রান্তিক মানুষদের, বিশেষ করে সংখ্যালঘু এবং দলিত সম্প্রদায়ের ভোটারদের ভোটাধিকার থেকে বঞ্চিত করার চেষ্টা করা হচ্ছে। বিরোধীদের দাবি, নির্বাচন কমিশন প্রথমে আধার কার্ড, ভোটার আইডি বা রেশন কার্ডের মতো পরিচয়পত্র প্রমাণ হিসেবে গ্রহণ করতে রাজি ছিল না, যার ফলে বহু মানুষ তাদের নাগরিকত্ব প্রমাণ করতে সমস্যার সম্মুখীন হচ্ছিলেন। নির্বাচনের ঠিক আগে এই সংশোধনী অভিযান রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত বলেও তারা অভিযোগ করেছে।
সুপ্রিম কোর্টের হস্তক্ষেপ এবং নির্বাচন কমিশনের পদক্ষেপ
এই মামলা সুপ্রিম কোর্ট পর্যন্ত গড়িয়েছে। সর্বোচ্চ আদালত এই অভিযানে স্থগিতাদেশ না দিলেও নির্বাচন কমিশনকে পরামর্শ দিয়েছে যে, পরিচয়পত্র হিসেবে আধার কার্ড, ভোটার আইডি এবং রেশন কার্ডের মতো নথি গ্রহণ করতে হবে। চাপের মুখে পড়ে নির্বাচন কমিশন তাদের নিয়মে শিথিলতা এনেছে এবং জানিয়েছে যে, সঠিক যাচাই এবং আপিলের সুযোগ না দিয়ে কোনো ভোটারের নাম তালিকা থেকে বাদ দেওয়া হবে না।
রাজনৈতিক প্রভাব ও আশঙ্কা
এই বিতর্কের ফলে রাজ্যে এক ধরণের রাজনৈতিক অস্থিরতা তৈরি হয়েছে। অভিযোগ উঠছে যে, এই অভিযান নির্দিষ্ট কিছু অঞ্চলে, বিশেষ করে মুসলিম ও দলিত অধ্যুষিত এলাকায় বেশি সক্রিয়ভাবে চালানো হচ্ছে। অদক্ষ বুথ-স্তরের আধিকারিকদের কারণে সাধারণ মানুষ হয়রানির শিকার হচ্ছেন বলেও খবর পাওয়া গেছে। এই বিশাল সংখ্যক ভোটারের নাম বাদ গেলে তা নির্বাচনের ফলাফলে সরাসরি প্রভাব ফেলতে পারে, বিশেষ করে যে আসনগুলিতে প্রতিদ্বন্দ্বিতা তীব্র হয়। চূড়ান্ত ভোটার তালিকা ৩০শে সেপ্টেম্বরের মধ্যে প্রকাশিত হবে বলে আশা করা হচ্ছে। এই ঘটনা বিহারের রাজনীতিতে এক নতুন মাত্রা যোগ করেছে এবং আগামী দিনে এর প্রভাব আরও স্পষ্ট হবে।