Download WB Holiday Calendar App 2026

Download Now!
সরকারি কর্মচারী

WB DA News: ডিএ কি বাধ্যতামূলক নয়? মুখ্যমন্ত্রীর দাবি নস্যাৎ করে সুপ্রিম কোর্টের রায় নিয়ে বড় বার্তা কর্মী নেতার

WB DA News: রাজ্য সরকারি কর্মীদের মহার্ঘ ভাতা বা ডিএ (DA) নিয়ে তরজা থামার কোনো লক্ষণই নেই। একদিকে রাজ্য সরকারের দাবি, ডিএ দেওয়া বাধ্যতামূলক নয়, অন্যদিকে সরকারি কর্মী সংগঠনগুলি আদালতের রায়কে হাতিয়ার করে নিজেদের হকের দাবিতে অনড়। সম্প্রতি মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ডিএ সংক্রান্ত মন্তব্যের কড়া প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন সরকারি কর্মী সংগঠনের নেতা মলয় মুখার্জি। তাঁর স্পষ্ট বক্তব্য, ডিএ সরকারি কর্মীদের সাংবিধানিক অধিকার, সরকারের দয়া বা করুণা নয়।

ডিএ কি সরকারের ঐচ্ছিক বিষয়?

মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সম্প্রতি মন্তব্য করেছেন যে ডিএ দেওয়া সরকারের জন্য বাধ্যতামূলক নয়। এই বক্তব্যের তীব্র বিরোধিতা করেছেন মলয় মুখার্জি। তিনি আইনি প্রেক্ষাপট তুলে ধরে জানান, এই দাবি সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন। তাঁর যুক্তিগুলি হলো:

  • আদালতের সুস্পষ্ট রায়: স্যাট (SAT) এবং কলকাতা হাইকোর্ট ইতিমধ্যেই দ্ব্যর্থহীন ভাষায় জানিয়ে দিয়েছে যে মহার্ঘ ভাতা বা ডিএ সরকারি কর্মীদের আইনি ও সাংবিধানিক অধিকার। এটি কোনোভাবেই সরকারের দয়ার দান নয়।
  • সম্পত্তির অধিকার: আইনি ব্যাখ্যা অনুযায়ী, ডিএ-কে কর্মীদের ‘সম্পত্তির অধিকার’ হিসেবে গণ্য করা হয়। বাজারদরের বা দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধির সাথে সামঞ্জস্য রেখে কর্মীদের বেতনের মান বজায় রাখা সরকারের দায়িত্বের মধ্যে পড়ে।
  • আদালত অবমাননার সামিল: সুপ্রিম কোর্টে যখন এই মামলা বিচারাধীন এবং হাইকোর্টের রায় বহাল রয়েছে, তখন ডিএ বাধ্যতামূলক নয় বলাটা কার্যত আদালতের অবমাননার সামিল বলে মনে করছেন কর্মী নেতারা।

বছরে ৮ শতাংশ ডিএ বৃদ্ধির দাবির সত্যতা

রাজ্য সরকার দাবি করেছে যে তারা কর্মীদের বছরে গড়ে ৮ শতাংশ হারে ডিএ দিচ্ছে। এই পরিসংখ্যানকে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে মলয় মুখার্জি পাল্টা হিসাব পেশ করেছেন। তাঁর দেওয়া তথ্য অনুযায়ী:

  • বাস্তব পরিসংখ্যান: ২০২০ সালের ১লা জানুয়ারি থেকে ষষ্ঠ বেতন কমিশন কার্যকর হয়েছে। তারপর থেকে গত ৫ বছরে রাজ্য সরকার মাত্র ৫টি কিস্তিতে ডিএ দিয়েছে (৩%, ৩%, ৪%, ৪%, এবং ৪%)। অর্থাৎ মোট ডিএ দেওয়া হয়েছে ১৮ শতাংশ।
  • হিসাবের গরমিল: যদি সরকারের দাবি অনুযায়ী বছরে ৮ শতাংশ হারে ডিএ দেওয়া হতো, তবে ৫ বছরে মোট ৪০ শতাংশ ডিএ পাওয়ার কথা ছিল কর্মীদের। কিন্তু বাস্তবে তারা পেয়েছেন অর্ধেকেরও কম, মাত্র ১৮ শতাংশ।
  • কেন্দ্রীয় হারের সাথে ফারাক: মলয়বাবুর দাবি অনুযায়ী, বর্তমানে কেন্দ্রীয় সরকারি কর্মীরা ৫৮ শতাংশ ডিএ পাচ্ছেন। সেই তুলনায় রাজ্য কর্মীরা ১৮ শতাংশে আটকে থাকায়, প্রতি ১০০ টাকায় রাজ্য কর্মীরা প্রায় ৪০ টাকা কম বেতন পাচ্ছেন।

বেতন কমিশন ও তীব্র সমালোচনা

ষষ্ঠ বেতন কমিশনের ভূমিকা নিয়েও প্রশ্ন তুলেছেন মলয় মুখার্জি। কমিশনের চেয়ারম্যান অভিরূপ সরকারের বিরুদ্ধে তিনি গুরুতর অভিযোগ এনেছেন। কর্মী নেতার অভিযোগ, অভিরূপ সরকার রাজনৈতিক চাপে বা ইচ্ছাকৃতভাবে ‘অল ইন্ডিয়া কনজিউমার প্রাইস ইনডেক্স’ (AICPI) মেনে চলার সুপারিশ রিপোর্ট থেকে বাদ দিয়েছেন। তিনি অত্যন্ত কড়া ভাষায় কমিশনের চেয়ারম্যানকে সরকারের অনুগত বলে কটাক্ষ করেন এবং অভিযোগ করেন যে কর্মীদের স্বার্থের কথা না ভেবে সরকারের সুবিধা করে দেওয়াই ছিল কমিশনের লক্ষ্য।

সবার আগে খবরের আপডেট পান!

টেলিগ্রামে যুক্ত হন

সুপ্রিম কোর্টে মামলার সর্বশেষ পরিস্থিতি

লক্ষ লক্ষ সরকারি কর্মী এখন তাকিয়ে আছেন সুপ্রিম কোর্টের রায়ের দিকে। মামলার বর্তমান অবস্থা সম্পর্কে মলয় মুখার্জি জানান:

  • গত ৮ই সেপ্টেম্বর সুপ্রিম কোর্টে মামলার চূড়ান্ত শুনানি শেষ হয়েছে এবং রায় সংরক্ষিত (Reserved) রাখা হয়েছে।
  • ডিসেম্বর মাসের মধ্যে রায় আসার একটা সম্ভাবনা ছিল। কিন্তু ১৯শে ডিসেম্বর থেকে সুপ্রিম কোর্টে শীতকালীন ছুটি শুরু হচ্ছে এবং আদালত পুনরায় খুলবে ২০২৬ সালের ২রা জানুয়ারি।
  • আগামী ৫ই জানুয়ারি ২০২৬-এর পর আদালত পুরোদমে কাজ শুরু করলে এই মামলার রায় ঘোষণা হতে পারে বলে আশা করা হচ্ছে। কর্মী সংগঠনগুলি আশাবাদী যে রায় তাদের পক্ষেই যাবে।

২০২৬ নির্বাচন ও পেনশনের ভবিষ্যৎ

আগামী ২০২৬ সালের বিধানসভা নির্বাচনকে পাখির চোখ করে কর্মী সংগঠনগুলি তাদের অবস্থান স্পষ্ট করেছে। তাদের অভিযোগ, বর্তমান সরকার ‘ভোটের রাজনীতি’ করছে। তাদের মতে, সরকার ১০০টি ভোট কেনার জন্য যে অর্থ ব্যয় করতে রাজি, সরকারি কর্মীদের ৫০টি ভোটের জন্য তা করতে নারাজ। মলয় মুখার্জি আশঙ্কা প্রকাশ করেন, বর্তমান সরকার ক্ষমতায় থাকলে ভবিষ্যতে পেনশন ব্যবস্থাও বন্ধ হয়ে যেতে পারে।

WBPAY Team

আমাদের প্রতিবেদন গুলি WBPAY Team এর দ্বারা যাচাই করে লেখা হয়। আমরা একটি স্বাধীন প্ল্যাটফর্ম যা পাঠকদের জন্য স্পষ্ট এবং সঠিক খবর পৌঁছে দিতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। আমাদের লক্ষ্য এবং সাংবাদিকতার মান সম্পর্কে জানতে, অনুগ্রহ করে আমাদের About us এবং Editorial Policy পৃষ্ঠাগুলি পড়ুন।
Back to top button