ছুটি

WB Summer Vacation: তীব্র গরমে অন্যান্য রাজ্যে ছুটি বাড়লো, এবার পশ্চিমবঙ্গেও কি বাড়বে ছুটি?

WB Summer Vacation: প্রচণ্ড গরমের কারণে যখন দেশের একাধিক রাজ্য স্কুলগুলিতে গরমের ছুটি বাড়িয়ে দিয়েছে, তখন পশ্চিমবঙ্গে পরিস্থিতিটা একটু ভিন্ন। ছুটি বাড়ানো নিয়ে নানা জল্পনা-কল্পনার অবসান ঘটিয়ে, জুনের শুরুতেই রাজ্যের স্কুলগুলি খুলে দেওয়া হয়েছে। একদিকে যখন ছাত্রছাত্রীরা দীর্ঘ ছুটির আমেজে, তখন বাংলার পড়ুয়ারা ক্লাসরুমে ফিরেছে। কিন্তু কেন এই সিদ্ধান্ত? অন্যান্য রাজ্যের তুলনায় পশ্চিমবঙ্গের পরিস্থিতি ঠিক কোথায় দাঁড়িয়ে? চলুন, গভীরে গিয়ে পুরো বিষয়টি বোঝা যাক।

অন্যান্য রাজ্যে পরিস্থিতিটা ঠিক কী?

এই বছর গরমের তীব্রতা অতীতের অনেক রেকর্ড ভেঙে দিয়েছে। ফলস্বরূপ, ছাত্রছাত্রীদের স্বাস্থ্যের কথা মাথায় রেখে একাধিক রাজ্য সরকার গরমের ছুটি বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে।

  • দিল্লি: রাজধানীতে স্কুলগুলি ১১ই মে থেকে ৩০শে জুন পর্যন্ত বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
  • পাঞ্জাব ও হরিয়ানা: এই দুই রাজ্যেই জুন মাস জুড়ে, অর্থাৎ ৩০শে জুন পর্যন্ত ছুটি ঘোষণা করা হয়েছে।
  • উত্তরপ্রদেশ ও বিহার: উত্তরপ্রদেশে ১৫ই জুন এবং বিহারে ২১শে জুন পর্যন্ত স্কুল বন্ধ থাকছে।
  • রাজস্থান: এখানে ১৭ই মে থেকে ৩০শে জুন পর্যন্ত দীর্ঘ ছুটি দেওয়া হয়েছে।
  • ছত্তিশগড় ও মধ্যপ্রদেশ: ছত্তিশগড়ে ২৫শে জুন এবং মধ্যপ্রদেশে ১৫ই জুন পর্যন্ত ছুটি বাড়ানো হয়েছে।

এই তালিকা থেকেই স্পষ্ট যে, উত্তর থেকে মধ্য ভারত পর্যন্ত বেশিরভাগ রাজ্যই পড়ুয়াদের স্বস্তি দিতে ছুটির সময়সীমা বাড়িয়েছে।

পশ্চিমবঙ্গের বিপরীত ছবি

অন্যান্য রাজ্যের এই চিত্রের পাশে পশ্চিমবঙ্গ এক ভিন্ন পথে হেঁটেছে। তীব্র গরমের কারণে রাজ্যে ৩০শে এপ্রিল থেকে গরমের ছুটি শুরু হয়ে গিয়েছিল, যা নির্ধারিত সময়ের থেকে এগিয়ে আনা হয়েছিল। ছুটি বাড়ানো হবে কিনা, তা নিয়ে অভিভাবক এবং ছাত্রছাত্রীদের মধ্যে ব্যাপক জল্পনা ছিল। সোশ্যাল মিডিয়াতেও নানা বিভ্রান্তিকর খবর ছড়িয়ে পড়ে।

সবার আগে খবরের আপডেট পান!

টেলিগ্রামে যুক্ত হন

কিন্তু শেষ পর্যন্ত রাজ্য সরকার ছুটি আর না বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নেয় এবং ২রা জুন থেকে স্কুল খুলে দেয়। বিকাশ ভবন সূত্রে জানানো হয়েছে, এই সিদ্ধান্তের পিছনে কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ কারণ রয়েছে:

  1. সিলেবাস শেষ করার তাগিদ: বিগত কয়েক বছর ধরে করোনা এবং গরমের কারণে ছুটির সংখ্যা বেড়েছে, যার ফলে সিলেবাস শেষ করতে সমস্যা হচ্ছিল। এই বছর সেই ক্ষতি পুষিয়ে নিতে চাইছে শিক্ষা দফতর।
  2. নতুন সেমিস্টার সিস্টেম: উচ্চ মাধ্যমিক স্তরে নতুন সেমিস্টার ব্যবস্থা চালু হওয়ায়, সময়মতো সিলেবাস শেষ করাটা একটা বড় চ্যালেঞ্জ। ছুটি বাড়ালে এই প্রক্রিয়া আরও পিছিয়ে যেত।
  3. শিক্ষকের ঘাটতি: রাজ্যের অনেক স্কুলেই শিক্ষকের অভাব রয়েছে। এই পরিস্থিতিতে, কর্মদিবস কমানো হলে পড়াশোনার মান ধরে রাখা কঠিন হয়ে পড়ত।

এই কারণগুলো মাথায় রেখেই, পড়ুয়াদের ভবিষ্যতের কথা চিন্তা করে স্কুল খোলার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।

অভিভাবকদের জন্য কিছু পরামর্শ

স্কুল খুলে যাওয়ায় অনেক অভিভাবকই হয়তো সন্তানদের স্বাস্থ্য নিয়ে চিন্তিত। তবে কিছু সাবধানতা অবলম্বন করলে এই সমস্যা এড়ানো সম্ভব:

  • পর্যাপ্ত জল: বাচ্চাকে স্কুলে পাঠানোর আগে এবং স্কুল থেকে ফেরার পর পর্যাপ্ত পরিমাণে জল ও ফলের রস খেতে দিন। স্কুলে ওয়াটার বটল অবশ্যই দিন।
  • হালকা খাবার: টিফিনে হালকা এবং সহজপাচ্য খাবার দিন। ভাজাভুজি বা ভারী খাবার এড়িয়ে চলুন।
  • সঠিক পোশাক: গরমের জন্য আরামদায়ক এবং হালকা রঙের সুতির পোশাক পরান।
  • সচেতনতা: গরমে শরীর খারাপ লাগলে বা কোনও রকম অস্বস্তি হলে সঙ্গে সঙ্গে স্কুল কর্তৃপক্ষকে জানাতে এবং প্রয়োজনে চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে সন্তানকে শিখিয়ে দিন।

শেষ কথা বলা যায়, প্রতিটি রাজ্যের পরিস্থিতি এবং অগ্রাধিকার ভিন্ন। অন্যান্য রাজ্যগুলি যখন ছাত্রছাত্রীদের সাময়িক স্বস্তি দিতে ছুটি বাড়িয়েছে, পশ্চিমবঙ্গ তখন পড়াশোনার ধারাবাহিকতা এবং সিলেবাস সময়মতো শেষ করার উপর বেশি জোর দিয়েছে। এই সিদ্ধান্তের ভালো-মন্দ নিয়ে বিতর্ক থাকতেই পারে, কিন্তু পড়ুয়াদের শিক্ষাজীবনের কথা মাথায় রেখে যে এই পদক্ষেপ, তা অনস্বীকার্য।

WBPAY Team

আমাদের প্রতিবেদন গুলি WBPAY Team এর দ্বারা যাচাই করে লেখা হয়। আমরা একটি স্বাধীন প্ল্যাটফর্ম যা পাঠকদের জন্য স্পষ্ট এবং সঠিক খবর পৌঁছে দিতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। আমাদের লক্ষ্য এবং সাংবাদিকতার মান সম্পর্কে জানতে, অনুগ্রহ করে আমাদের About us এবং Editorial Policy পৃষ্ঠাগুলি পড়ুন।
Back to top button