WB TET Case: প্রাথমিক টেট মামলায় সুপ্রিম কোর্টের বড় খবর: ২০ লক্ষ প্রার্থীর ভাগ্য নির্ধারণ ও প্রশ্নভুলের জট!
WB TET Case: পশ্চিমবঙ্গ প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদের ওপর প্রশ্নভুল মামলা সংক্রান্ত আইনি চাপ ক্রমশ তীব্রতর হচ্ছে। ২০১৪, ২০১৭ এবং ২০২২ সালের টেট (TET) পরীক্ষার ভুল প্রশ্ন নিয়ে একাধিক মামলা বর্তমানে আদালতের বিচারাধীন। এর মধ্যে ২০১৪ সালের টেট প্রশ্নভুল মামলা (MAT 1594) নিয়ে সুপ্রিম কোর্ট এবং হাইকোর্টে চলা আইনি লড়াই একটি গুরুত্বপূর্ণ মোড় নিতে চলেছে। এই মামলার ফলাফলের দিকে তাকিয়ে রয়েছেন রাজ্যের লক্ষ লক্ষ চাকরিপ্রার্থী।
২৫শে নভেম্বর: সুপ্রিম কোর্টে গুরুত্বপূর্ণ শুনানি
আগামী ২৫শে নভেম্বর, ২০২৫ তারিখে সুপ্রিম কোর্টে ২০১৪ টেট প্রশ্নভুল মামলার (MAT 1594) একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ শুনানি অনুষ্ঠিত হতে চলেছে। সুপ্রিম কোর্টের ৬ নম্বর কোর্টে এই মামলাটি ওঠার কথা রয়েছে। এই মামলাটি মূলত ২০১৪ সালের টেট পরীক্ষায় আসা ৬টি ভুল প্রশ্নকে কেন্দ্র করে দায়ের করা হয়েছিল।
মামলার সংক্ষিপ্ত ইতিহাস:
- প্রথমে হাইকোর্টের সিঙ্গল বেঞ্চ নির্দেশ দিয়েছিল যে শুধুমাত্র মামলাকারী বা পিটিশনারদেরই ভুল প্রশ্নের জন্য প্রাপ্য নম্বর বা চাকরির সুযোগ দিতে হবে।
- পরবর্তীতে ডিভিশন বেঞ্চ এই রায় পরিবর্তন করে নির্দেশ দেয় যে, সকল পরীক্ষার্থীকেই ভুল প্রশ্নের নম্বর দিতে হবে।
- ডিভিশন বেঞ্চের এই ‘সকলকে নম্বর দেওয়ার’ রায়কে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে মামলাটি সুপ্রিম কোর্টে যায়। বর্তমানে মামলাটি ‘ফাইনাল ডিসপোজাল’ বা চূড়ান্ত নিষ্পত্তির জন্য তালিকাভুক্ত হয়েছে।
বিচারপতিদের পর্যবেক্ষণ ও পর্ষদের অবস্থান
মামলার বিগত শুনানিগুলিতে সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতিরা এই দীর্ঘস্থায়ী সমস্যা সমাধানের দায়ভার পর্ষদের ওপরেই ন্যস্ত করেছিলেন। পর্ষদের আইনজীবীদের কাছে বিচারপতিরা জানতে চেয়েছিলেন যে, এই জটিলতা কাটাতে পর্ষদ ঠিক কী সিদ্ধান্ত নিচ্ছে।
সবার আগে খবরের আপডেট পান!
টেলিগ্রামে যুক্ত হননিচে একটি সারণীর মাধ্যমে মামলার গুরুত্বপূর্ণ দিকগুলি তুলে ধরা হলো:
| বিষয় | বিবরণ |
|---|---|
| মূল মামলা | MAT 1594 (২০১৪ টেট প্রশ্নভুল) |
| শুনানির তারিখ | ২৫শে নভেম্বর, ২০২৫ |
| চ্যালেঞ্জ (SLP C 25486/2023) | দিব্যেন্দু কুন্ডু বনাম পর্ষদ (সকলকে নম্বর না দেওয়ার দাবি) |
| পর্ষদের বর্তমান অবস্থান | সকলকে নম্বর দেওয়া সম্ভব নয় (প্রতিভা মন্ডল মামলা, ২০২৪) |
২০২৪ সালে পর্ষদ ‘প্রতিভা মন্ডল’ মামলায় চ্যালেঞ্জ করে জানিয়েছিল যে, তাদের পক্ষে সকল পরীক্ষার্থীকে নম্বর দেওয়া সম্ভবপর নয়। বিগত শুনানিতে আইনজীবীরা পরবর্তী নির্দেশ বা ইনস্ট্রাকশন নেওয়ার জন্য আদালতের কাছে সময় চেয়েছিলেন।
২০ লক্ষ নতুন মূল্যায়ন ও ওএমআর (OMR) জটিলতা
এই মামলাটি বর্তমানে অত্যন্ত জটিল আকার ধারণ করেছে, কারণ এর রায়ের ওপর ভিত্তি করে বিপুল সংখ্যক প্রার্থীর ভবিষ্যৎ নির্ভর করছে। যদি সুপ্রিম কোর্ট শেষ পর্যন্ত সকল পরীক্ষার্থীকে ভুল প্রশ্নের নম্বর দেওয়ার নির্দেশ বহাল রাখে, তবে প্রায় ২০ লক্ষ বা তার বেশি প্রার্থীর ওএমআর শিট নতুন করে মূল্যায়নের প্রশ্ন সামনে আসবে।
এখানেই তৈরি হয়েছে সবথেকে বড় সমস্যা। ২০১৪ সালের টেট পরীক্ষার্থীদের অনেকের ওএমআর (OMR) শিট বর্তমানে পর্ষদের কাছে নেই। ওএমআর শিট ছাড়া কীভাবে নম্বর বাড়ানো বা নতুন মূল্যায়ন করা হবে, তা নিয়ে বড়সড় আইনি ও প্রশাসনিক জটিলতা সৃষ্টি হতে পারে।
প্রতিযোগিতার আশঙ্কা ও উপসংহার
শুধুমাত্র ২০১৪ সালের প্রার্থীরাই নয়, এই মামলার দিকে তাকিয়ে আছেন ২০২২ বা ২০২৩ সালের টেট পাস করা প্রার্থীরাও। তাদের আশঙ্কা, যদি ২০১৪ সালের বিপুল সংখ্যক প্রার্থীকে নতুন করে সুযোগ দেওয়া হয়, তবে ইন্টারভিউ এবং ভবিষ্যৎ নিয়োগ প্রক্রিয়ায় প্রতিযোগিতা বা কম্পিটিশন অত্যধিক বেড়ে যাবে।
আগামী ২৫শে নভেম্বর যদি পর্ষদ আদালতের সামনে সঠিক তথ্য ও কোনো গ্রহণযোগ্য সমাধানের পথ দেখাতে পারে, তবেই দীর্ঘদিনের এই MAT 1594 মামলার নিষ্পত্তি ঘটার সম্ভাবনা রয়েছে। তবে ওএমআর সংক্রান্ত প্রযুক্তিগত সমস্যা এবং লক্ষাধিক পরীক্ষার্থীর স্বার্থ জড়িত থাকায়, মামলাটি শেষ পর্যন্ত কোন দিকে মোড় নেয়, সেটাই এখন দেখার।