WBHS: বড় খবর! পশ্চিমবঙ্গ হেল্থ স্কিমের তালিকা থেকে সাসপেন্ড হল এই বড় হাসপাতাল! জানুন বিস্তারিত

WBHS Hospital Suspension: পশ্চিমবঙ্গ স্বাস্থ্য প্রকল্প বা West Bengal Health Scheme (WBHS)-এর অধীনে থাকা সুবিধাভোগীদের জন্য একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ খবর। রাজ্য সরকার কলকাতার অন্যতম পরিচিত মাল্টি-স্পেশালিটি হাসপাতাল, কেয়ার অ্যান্ড কিওর হাসপাতাল (ভিভো-কেয়ার প্রাইভেট লিমিটেডের একটি ইউনিট)-কে অবিলম্বে সাসপেন্ড বা সাময়িকভাবে বরখাস্ত করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। পশ্চিমবঙ্গ সরকারের অর্থ দফতরের মেডিকেল সেল ৪ঠা সেপ্টেম্বর, ২০২৫ তারিখে এই বিষয়ে একটি বিজ্ঞপ্তি জারি করেছে।
এই সিদ্ধান্তের পিছনে রয়েছে একাধিক গুরুতর অভিযোগ। চলুন, বিস্তারিতভাবে জেনে নেওয়া যাক কেন এই পদক্ষেপ নেওয়া হলো এবং এর ফলে সাধারণ মানুষের উপর কী প্রভাব পড়বে।
কেন সাসপেন্ড করা হলো কেয়ার অ্যান্ড কিওর হাসপাতালকে?
বিজ্ঞপ্তি অনুসারে, কেয়ার অ্যান্ড কিওর হাসপাতালের বিরুদ্ধে স্বাস্থ্য প্রকল্পের সুবিধাভোগীরা একাধিক অভিযোগ দায়ের করেছিলেন। সরকারের মতে, হাসপাতালটি রাজ্য সরকারের সাথে করা মউ (Memorandum of Agreement – MoA) বা চুক্তির শর্তাবলী মেনে চলছিল না, যার ফলে রোগী এবং তাদের পরিবারকে হয়রানির শিকার হতে হচ্ছিল।
মূল অভিযোগগুলি হলো:
- জরুরী রোগী ভর্তি না করা: হাসপাতালের বিরুদ্ধে সবচেয়ে বড় অভিযোগ হলো, তারা পশ্চিমবঙ্গ স্বাস্থ্য প্রকল্পের অধীনে আসা জরুরী বা এমার্জেন্সি রোগীদের ভর্তি নিতে অস্বীকার করছিল। এটি সরাসরি চুক্তির লঙ্ঘন, যেখানে সমস্ত রোগীকে পরিষেবা দেওয়ার কথা বলা হয়েছে।
- অতিরিক্ত চার্জ নেওয়া: অভিযোগ করা হয়েছে যে হাসপাতালটি প্রকল্পের অধীনে নির্ধারিত রেটের চেয়ে অনেক বেশি টাকা রোগীদের কাছ থেকে নিচ্ছিল।
- কোনো বৈধ রসিদ না দেওয়া: অতিরিক্ত টাকা নেওয়ার পরেও অনেক ক্ষেত্রে কোনো বৈধ মানি রিসিপ্ট বা রসিদ দেওয়া হচ্ছিল না, যা চুক্তির নিয়মবিরুদ্ধ।
- বিলিং পদ্ধতিতে গাফিলতি: ইনডোর রোগীদের (IPD) ক্ষেত্রে বিল তৈরির জন্য যে নির্দিষ্ট পদ্ধতি অনুসরণ করার কথা, হাসপাতালটি তা মেনে চলছিল না।
এই সমস্ত অভিযোগ খতিয়ে দেখার পর, অর্থ দফতরের মেডিকেল সেল প্রাথমিকভাবে প্রমাণ পেয়েছে যে হাসপাতালটি চুক্তি অনুযায়ী কাজ করছে না। এরপরেই হাসপাতালটির এমপ্যানেলমেন্ট অবিলম্বে সাসপেন্ড করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
রোগীদের জন্য এর প্রভাব কী?
এই সাসপেনশনের ফলে এখন থেকে পশ্চিমবঙ্গ স্বাস্থ্য প্রকল্পের কোনো সুবিধাভোগী নতুন করে কেয়ার অ্যান্ড কিওর হাসপাতালে ভর্তি হতে পারবেন না বা প্রকল্পের অধীনে কোনো পরিষেবা পাবেন না। তবে, রাজ্য সরকার একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে আশ্বাস দিয়েছে।
যারা ইতিমধ্যেই ভর্তি আছেন তাদের কী হবে?
বিজ্ঞপ্তিতে স্পষ্ট করে বলা হয়েছে যে, যে সমস্ত রোগীরা এই সাসপেনশনের আদেশ জারির আগে থেকেই হাসপাতালে ইনডোর পেশেন্ট হিসেবে ভর্তি রয়েছেন, তাদের চিকিৎসায় কোনো বাধা আসবে না। তাদের চিকিৎসা শেষ না হওয়া পর্যন্ত তারা পশ্চিমবঙ্গ স্বাস্থ্য প্রকল্পের সমস্ত সুযোগ-সুবিধা আগের মতোই পেতে থাকবেন।
ভবিষ্যতে কী হবে?
এই সাসপেনশনটি সাময়িক। অর্থ দফতরের মেডিকেল সেল এখন একটি পূর্ণাঙ্গ তদন্ত চালাবে। তদন্তের রিপোর্টের উপর ভিত্তি করেই পরবর্তী সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে যে হাসপাতালটিকে পুনরায় প্রকল্পের অধীনে ফিরিয়ে আনা হবে কিনা। ততদিন পর্যন্ত, স্বাস্থ্য প্রকল্পের সুবিধাভোগীদের অন্য কোনো এমপ্যানেলড হাসপাতালে চিকিৎসার জন্য যাওয়ার পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে।
এই ঘটনাটি প্রমাণ করে যে রাজ্য সরকার স্বাস্থ্য প্রকল্পের নিয়মাবলী প্রয়োগের ক্ষেত্রে যথেষ্ট কঠোর এবং সুবিধাভোগীদের স্বার্থ রক্ষায় সর্বদা তৎপর।