West Bengal Strike: কর্মীদের ধর্মঘটের অধিকার কি কেড়ে নেওয়া হচ্ছে? ‘ডাইস নন’ বিজ্ঞপ্তির বিরুদ্ধে আইনি লড়াই শুরু

West Bengal Strike: পশ্চিমবঙ্গ পঞ্চায়েত কর্মচারী সমিতির জয়েন্ট কমিটির পক্ষ থেকে আইনজীবী দীপজ্যোতি চক্রবর্তী রাজ্য সরকারের অতিরিক্ত মুখ্য সচিবকে একটি আইনি নোটিশ পাঠিয়েছেন। এই নোটিশটি ৮ই জুলাই, ২০২৫ তারিখে পাঠানো হয়েছে এবং এর মূল বিষয় হলো ৯ই জুলাইয়ের ধর্মঘটের বিরুদ্ধে সরকারের জারি করা একটি বিজ্ঞপ্তিকে চ্যালেঞ্জ করা। ৭ই জুলাই জারি করা বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছিল যে, ধর্মঘটে অংশ নেওয়া কর্মীদের বিরুদ্ধে কারণ দর্শানোর নোটিশ জারি করা হবে এবং “ডাইস নন” (কাজের দিন নয়) নীতি প্রয়োগ করে বেতন কাটা হবে। এই পদক্ষেপকে কেন্দ্র করে রাজ্য সরকার এবং পঞ্চায়েত কর্মীদের মধ্যে সংঘাত নতুন মাত্রা পেয়েছে।
মূল ঘটনা
পশ্চিমবঙ্গ সরকারের জারি করা সাম্প্রতিক বিজ্ঞপ্তি অনুযায়ী, ৯ই জুলাই অনুষ্ঠিত হতে চলা রাজ্য সরকারি কর্মীদের ধর্মঘটে যাঁরা অংশ নেবেন, তাঁদের বিরুদ্ধে কড়া ব্যবস্থা নেওয়ার কথা বলা হয়েছে। এই ব্যবস্থার মধ্যে রয়েছে “ডাইস নন” কার্যকর করা, অর্থাৎ ওই দিনের বেতন কেটে নেওয়া এবং শৃঙ্খলাভঙ্গের অভিযোগে কারণ দর্শানোর নোটিশ জারি করা। এই বিজ্ঞপ্তির পরেই পঞ্চায়েত কর্মচারী সমিতিগুলির জয়েন্ট কমিটি আইনি পদক্ষেপ নেওয়ার সিদ্ধান্ত নেয় এবং তাদের আইনজীবী মারফত রাজ্য সরকারকে নোটিশ পাঠায়।
আইনি নোটিশের মূল বিষয়বস্তু
আইনজীবী দীপজ্যোতি চক্রবর্তীর পাঠানো নোটিশে মূলত কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় তুলে ধরা হয়েছে:
- সাংবিধানিক অধিকার লঙ্ঘন: নোটিশে বলা হয়েছে যে, সরকারের এই বিজ্ঞপ্তি কর্মীদের শান্তিপূর্ণ প্রতিবাদের সাংবিধানিক অধিকারকে লঙ্ঘন করে। ভয় দেখিয়ে কর্মীদের ধর্মঘট থেকে বিরত রাখার চেষ্টা করা হচ্ছে, যা আইনত ভিত্তিহীন।
- পূর্ববর্তী মামলার উদাহরণ: নোটিশে দুটি পূর্ববর্তী মামলার কথা উল্লেখ করা হয়েছে:
- মার্চ ২০২৩-এর মামলা: ২০২৩ সালের ১০ই মার্চ একটি ধর্মঘটের সময়ও সরকার একই ধরনের বিজ্ঞপ্তি জারি করেছিল। সেই সময় কলকাতা হাইকোর্ট জানিয়েছিল যে “ডাইস নন”-এর কোনো আইনি সংস্থান নেই এবং মামলাটি এখনও বিচারাধীন।
- ২০১৫-এর মামলা: ২০১৫ সালের একটি মামলাও এখনও বিচারাধীন রয়েছে, যেখানে রাজ্য সরকার হাইকোর্টকে প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল যে, মামলার নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত কর্মীদের বিরুদ্ধে কোনো কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে না।
- অবিলম্বে বিজ্ঞপ্তি প্রত্যাহারের দাবি: এই আইনি নোটিশের মাধ্যমে রাজ্য সরকারকে ইমেল পাওয়ার ছয় ঘণ্টার মধ্যে অবিলম্বে বিতর্কিত বিজ্ঞপ্তিটি প্রত্যাহার বা বাতিল করার জন্য অনুরোধ জানানো হয়েছে। অন্যথায়, আরও আইনি পদক্ষেপ নেওয়ার হুঁশিয়ারি দেওয়া হয়েছে।
কর্মীদের প্রতিক্রিয়া এবং ভবিষ্যৎ পদক্ষেপ
পঞ্চায়েত কর্মীদের সংগঠনগুলি জানিয়েছে যে, তারা তাদের দাবিতে অবিচল এবং সরকারের এই হুমকিমূলক বিজ্ঞপ্তিকে ভয় পায় না। তাদের মতে, শান্তিপূর্ণভাবে প্রতিবাদ জানানো তাদের গণতান্ত্রিক অধিকার এবং তারা এই অধিকার থেকে সরে আসবে না। যদি সরকার বিজ্ঞপ্তি প্রত্যাহার না করে, তাহলে তারা বৃহত্তর আইনি লড়াইয়ের জন্য প্রস্তুত।
এই ঘটনাটি রাজ্য সরকার এবং সরকারি কর্মচারীদের মধ্যে সম্পর্কের অবনতির একটি স্পষ্ট ইঙ্গিত। এখন দেখার বিষয়, রাজ্য সরকার এই আইনি নোটিশের জবাবে কী পদক্ষেপ নেয় এবং পঞ্চায়েত কর্মীদের ধর্মঘট শেষ পর্যন্ত কোন দিকে মোড় নেয়। এই সংঘাতের ফলে পঞ্চায়েত পরিষেবাগুলিতে কী প্রভাব পড়বে, সেদিকেও নজর থাকবে সকলের।