চাকরি

SSC Review Petition: কেন খারিজ হলো ২৬,০০০ শিক্ষকের রিভিউ পিটিশন? জানুন সুপ্রিম কোর্টের অর্ডারের খুঁটিনাটি

SSC Review Petition: পশ্চিমবঙ্গ স্কুল সার্ভিস কমিশনের (SSC) ২০১৬ সালের নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় প্রায় ২৬,০০০ চাকরি বাতিলের রায় পুনর্বিবেচনার আর্জি খারিজ করে দিয়েছে সুপ্রিম কোর্ট। এই রায়ের পর স্বাভাবিকভাবেই প্রশ্ন উঠছিল, ঠিক কোন যুক্তিতে দেশের সর্বোচ্চ আদালত এই রিভিউ পিটিশন খারিজ করল? সম্প্রতি প্রকাশিত অর্ডারের কপিতে সেই কারণগুলি স্পষ্ট করে ব্যাখ্যা করা হয়েছে, যা এই মামলার ভবিষ্যৎ নির্ধারণ করে দিয়েছে।

এই প্রতিবেদনে আমরা সুপ্রিম কোর্টের অর্ডার কপির মূল বিষয়গুলি তুলে ধরব এবং বোঝার চেষ্টা করব কেন চাকরিপ্রার্থীদের শেষ আশাটুকুও রইল না।

কেন রিভিউ পিটিশন খারিজ করল সুপ্রিম কোর্ট?

সুপ্রিম কোর্ট তার আদেশে কয়েকটি নির্দিষ্ট এবং গুরুত্বপূর্ণ কারণ উল্লেখ করেছে, যার ভিত্তিতে রিভিউ পিটিশনটি খারিজ করা হয়েছে। আদালত মনে করেছে যে, মূল মামলার শুনানিতে সমস্ত দিক বিস্তারিতভাবে খতিয়ে দেখা হয়েছে এবং নতুন করে পুনর্বিবেচনার কোনও ভিত্তি নেই।

অর্ডার কপিতে উল্লিখিত প্রধান কারণগুলি হলো:

  • নতুন করে শুনানির প্রয়োজন নেই: আদালত তার আদেশে স্পষ্ট জানিয়েছে যে, মূল মামলার শুনানির সময় সমস্ত বাস্তবিক (factual) এবং আইনি (legal) দিক অত্যন্ত পুঙ্খানুপুঙ্খভাবে বিবেচনা করা হয়েছিল। দীর্ঘ শুনানির পর রায় দেওয়া হয়। তাই, রিভিউ পিটিশনের ভিত্তিতে পুরো মামলাটি পুনরায় শোনার কোনও যৌক্তিকতা নেই।
  • OMR শিটের অনুপস্থিতি এবং দুর্নীতির প্রমাণ: এই মামলার সবচেয়ে বড় এবং নির্ণায়ক ফ্যাক্টর ছিল আসল OMR শিটগুলির অনুপস্থিতি। স্কুল সার্ভিস কমিশন (SSC) আসল OMR শিট বা তার মিরর ইমেজ (ডিজিটাল কপি) সংরক্ষণ করতে ব্যর্থ হয়েছে। আদালত বলেছে:
    • যদি এই OMR শিটগুলি সঠিকভাবে সংরক্ষণ করা হতো, তবে যোগ্য এবং অযোগ্য প্রার্থীদের আলাদা করা সম্ভব হতো। সেক্ষেত্রে হয়তো যোগ্যদের চাকরি বাঁচানো যেত।
    • যেহেতু OMR শিটই নেই, তাই কার নিয়োগ বৈধ এবং কার নিয়োগ অবৈধ, তা প্রমাণ করার কোনও উপায় নেই। এই পরিস্থিতিতে পুরো নিয়োগ প্রক্রিয়াটিকেই “tainted” বা কলুষিত বলে গণ্য করা হয়েছে।
  • কর্তৃপক্ষের গাফিলতি এবং তথ্য গোপনের চেষ্টা: সুপ্রিম কোর্ট তার পর্যবেক্ষণে আরও বলেছে যে, নিয়োগ প্রক্রিয়ার দায়িত্বে থাকা কর্তৃপক্ষ অর্থাৎ এসএসসি নিজেদের গাফিলতি এবং অবৈধ কার্যকলাপ ঢাকার চেষ্টা করেছে। এই বিষয়টি পুরো প্রক্রিয়ার স্বচ্ছতাকে নষ্ট করেছে এবং আদালতের কাছে এটা স্পষ্ট হয়েছে যে, নিয়োগ প্রক্রিয়াটি গোড়া থেকেই ত্রুটিপূর্ণ ছিল।
  • খোলা আদালতে শুনানির আর্জি খারিজ: আবেদনকারীদের পক্ষ থেকে রিভিউ পিটিশনটি খোলা আদালতে (Open Court) শোনার জন্য আবেদন করা হয়েছিল। কিন্তু সর্বোচ্চ আদালত সেই আবেদনও প্রত্যাখ্যান করে। এর অর্থ হলো, আদালত চেম্বারেই সমস্ত নথি পর্যালোচনা করে এই সিদ্ধান্তে উপনীত হয়েছে যে, পিটিশনটির কোনও সারবত্তা নেই।

চূড়ান্ত রায় এবং ভবিষ্যৎ

উপরোক্ত কারণগুলির উপর ভিত্তি করে বিচারপতি সঞ্জয় কুমার এবং বিচারপতি সতীশ চন্দ্র শর্মার বেঞ্চ এই সিদ্ধান্তে পৌঁছায় যে, রিভিউ পিটিশনে এমন কোনও নতুন যুক্তি বা তথ্য নেই যা মূল রায়কে প্রভাবিত করতে পারে। ফলস্বরূপ, পিটিশনটি খারিজ করে দেওয়া হয় এবং কলকাতা হাইকোর্টের ২৬,০০০ চাকরি বাতিলের রায়ই বহাল থাকে। এই আদেশের ফলে, যোগ্য অথচ দুর্নীতির শিকার হওয়া প্রার্থীদের জন্যও চাকরির দরজা চূড়ান্তভাবে বন্ধ হয়ে গেল।

WBPAY Team

আমাদের প্রতিবেদন গুলি WBPAY Team এর দ্বারা যাচাই করে লেখা হয়। আমরা একটি স্বাধীন প্ল্যাটফর্ম যা পাঠকদের জন্য স্পষ্ট এবং সঠিক খবর পৌঁছে দিতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। আমাদের লক্ষ্য এবং সাংবাদিকতার মান সম্পর্কে জানতে, অনুগ্রহ করে আমাদের About us এবং Editorial Policy পৃষ্ঠাগুলি পড়ুন।
Back to top button