1 Crore Corpus: ১ কোটি টাকার ফান্ড তৈরি করতে চান? আজই শুধরে নিন এই ৭টি ভুল, সহজেই পূরণ হবে স্বপ্ন
1 Crore Corpus: অনেকের কাছেই ১ কোটি টাকার একটি তহবিল বা কর্পাস তৈরি করা একটি স্বপ্নের মতো মনে হয়। কিন্তু বাস্তবে এটি ততটা কঠিন নয় যতটা আমরা ভাবি। অনেক সময় বিনিয়োগ করার মতো টাকার অভাব নয়, বরং আমাদের কিছু সাধারণ আর্থিক ভুলই আমাদের এবং আমাদের কোটিপতি হওয়ার লক্ষ্যের মাঝে বাধা হয়ে দাঁড়ায়। সঠিক পরিকল্পনা এবং শৃঙ্খলার মাধ্যমে এই লক্ষ্য অর্জন করা সম্ভব।
আজ আমরা আলোচনা করব এমন ৭টি সাধারণ ভুলের কথা, যা এড়িয়ে চললে আপনিও খুব সহজেই ১ কোটি টাকার ফান্ড তৈরি করতে পারবেন। আসুন জেনে নিই সেই ভুলগুলি সম্পর্কে এবং কীভাবে সেগুলি শুধরে নেওয়া যায়।
১. দেরি করে বিনিয়োগ শুরু করা
কম্পাউন্ডিং বা চক্রবৃদ্ধি সুদের সুবিধা পেতে হলে সময় আপনার সবচেয়ে বড় বন্ধু। যত তাড়াতাড়ি আপনি বিনিয়োগ শুরু করবেন, প্রতি মাসে আপনাকে তত কম টাকা বিনিয়োগ করতে হবে। সঠিক সময়ের অপেক্ষা বা বেতন বাড়ার অপেক্ষায় বসে থাকলে আপনার আর্থিক পরিকল্পনা কেবল পিছিয়েই যাবে। দীর্ঘ সময় ধরে নিয়মিত বিনিয়োগ করলে কম্পাউন্ডিংয়ের জাদুতে ১ কোটি টাকার লক্ষ্য সহজেই পূরণ করা সম্ভব হয়।
২. লক্ষ্যহীন বিনিয়োগ করা
কোথায় পৌঁছাতে চান তা না জেনেই দৌড়ানো আর অন্ধের মতো বিনিয়োগ করা একই বিষয়। ১ কোটি টাকার লক্ষ্যের জন্য একটি নির্দিষ্ট সময়সীমা ঠিক করুন। উদাহরণস্বরূপ, ১৫ বা ২০ বছর। এরপর আপনার সেই সময়ের সাথে সামঞ্জস্য রেখে সঠিক বিনিয়োগের মাধ্যম বেছে নিন। লক্ষ্য ঠিক থাকলে বিনিয়োগের পথ অনেক সহজ হয়ে যায়।
সবার আগে খবরের আপডেট পান!
টেলিগ্রামে যুক্ত হন৩. চটজলদি লাভের পেছনে ছোটা
বাজার যখন ঊর্ধ্বমুখী থাকে তখন তা খুব লোভনীয় মনে হয়, কিন্তু মনে রাখবেন স্বল্পমেয়াদী লাভে সাধারণত ঝুঁকি বেশি থাকে। হঠাত জনপ্রিয় হওয়া কোনো “হট স্টক” বা ক্রিপ্টোকারেন্সির পেছনে ছুটবেন না। এর পরিবর্তে শক্তিশালী এবং বৈচিত্র্যময় (Diversified) ফান্ডে বিনিয়োগ ধরে রাখুন, যা সময়ের সাথে সাথে ধীরগতিতে কিন্তু নিশ্চিতভাবে বাড়বে।
৪. পোর্টফোলিও পর্যালোচনা না করা
বিনিয়োগ কোনো “একবার করলাম আর ভুলে গেলাম” জাতীয় কাজ নয়। মাঝে মাঝে আপনার পোর্টফোলিও বা বিনিয়োগের খাতা পর্যালোচনা করা অত্যন্ত জরুরি। আপনার বিনিয়োগের পারফরম্যান্স ট্র্যাক করুন এবং প্রয়োজনে তা রিব্যালেন্স করুন। নিশ্চিত করুন যে আপনার বর্তমান ঝুঁকি নেওয়ার ক্ষমতার সাথে আপনার লক্ষ্যগুলোর মিল আছে।
৫. বাজার পড়লে ভয় পেয়ে বিক্রি করা
শেয়ার বাজারে উত্থান-পতন থাকবেই, এটি কখনোই দূর হবে না। কিন্তু বাজার পড়ে গেলে ভয়ের চোটে শেয়ার বা ফান্ড বিক্রি করে দিলে আপনি কেবল লোকসানই নিশ্চিত করবেন। মনে রাখবেন, যারা বাজারের এই খারাপ সময়েও বিনিয়োগ ধরে রাখেন, দীর্ঘমেয়াদে তারাই অন্যদের তুলনায় বেশি লাভবান হন।
৬. মুদ্রাস্ফীতি এবং করের হিসাব না রাখা
আজকের ১ কোটি টাকা ২০ বছর পর একই মূল্য বহন করবে না। মুদ্রাস্ফীতি এবং কর (Tax) বাদ দেওয়ার পর আপনার হাতে কত টাকা থাকবে, সেই হিসাব না করে কখনোই পরিকল্পনা করবেন না। কাগজে কলমে ১০% রিটার্ন দেখতে খুব ভালো লাগলেও, মুদ্রাস্ফীতি এবং করের প্রভাব বাদ দিলে প্রকৃত রিটার্ন অনেক কম হতে পারে। তাই এই বিষয়গুলি মাথায় রেখেই লক্ষ্যের অঙ্ক ঠিক করুন।
৭. আর্থিক শৃঙ্খলার অভাব
বিশ্বের সেরা পরিকল্পনাও ব্যর্থ হতে পারে যদি তাতে ধারাবাহিকতা না থাকে। আপনার বিনিয়োগ প্রক্রিয়াটি স্বয়ংক্রিয় (Automate) করুন যাতে প্রতি মাসে নির্দিষ্ট তারিখে টাকা জমা হয়ে যায়। নিজের খরচ ট্র্যাক করুন এবং আয় বাড়ার সাথে সাথে জীবনযাত্রার খরচ বা লাইফস্টাইল ইনফ্লেশন নিয়ন্ত্রণ করুন। সম্পদ গড়ে তোলা ভাগ্যের ব্যাপার নয়, বরং এটি দশকের পর দশক ধরে রাখা শৃঙ্খলার ফল।
একনজরে করণীয় ও বর্জনীয়:
| ভুল (বর্জনীয়) | সঠিক পদক্ষেপ (করণীয়) |
|---|---|
| দেরি করে শুরু করা | যত দ্রুত সম্ভব বিনিয়োগ শুরু করা |
| দ্রুত লাভের আশা | দীর্ঘমেয়াদী ও স্থিতিশীল বিনিয়োগ |
| প্যানিক সেলিং | বাজারের পতনেও বিনিয়োগ ধরে রাখা |
এই ছোট ছোট ভুলগুলি এড়িয়ে চললে এবং নিয়মানুবর্তিতার সাথে বিনিয়োগ করলে, ১ কোটি টাকার মালিক হওয়া কেবল সময়ের অপেক্ষা মাত্র।
দাবিত্যাগ (Disclaimer): এই প্রতিবেদনটি শুধুমাত্র তথ্যের উদ্দেশ্যে তৈরি করা হয়েছে। মিউচুয়াল ফান্ড বা শেয়ার বাজারে বিনিয়োগ বাজারগত ঝুঁকির অধীন। বিনিয়োগ করার আগে অবশ্যই আপনার আর্থিক উপদেষ্টার পরামর্শ নিন বা নিজে যাচাই করুন।