2020-22 DELED Case: ৬ সপ্তাহের মধ্যে নিয়োগ করতে হবে! সুপ্রিম কোর্টের রায়ে স্বস্তিতে প্রাথমিকের চাকরিপ্রার্থীরা

2020-22 DELED Case: অবশেষে সুপ্রিম কোর্টে নিষ্পত্তি হলো পশ্চিমবঙ্গ প্রাথমিক শিক্ষক নিয়োগ সংক্রান্ত ডি.এল.এড (DELED) মামলা।মাননীয় বিচারপতি পি এস নরসিংহা এবং বিচারপতি অতুল এস চান্দুরকার -এর ডিভিশন বেঞ্চে এই মামলার চূড়ান্ত শুনানি হয়, যার ফলে ১১,৭৬৫ শূন্যপদের ২০২০-২ ২ ডি.এল.এড প্রার্থীদের নিয়োগের পথ খুলে গেল। এই রায়ের ফলে একদিকে যেমন স্বস্তিতে চাকরিপ্রার্থীরা, তেমনই নিয়োগ প্রক্রিয়ায় স্বচ্ছতা আনার ক্ষেত্রেও একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ বলে মনে করা হচ্ছে।
মামলার প্রেক্ষাপট
এই মামলাটি মূলত ২০২০-২২ শিক্ষাবর্ষের ডি.এল.এড প্রার্থীদের সঙ্গে যুক্ত। প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদের বিরুদ্ধে অভিযোগ ছিল যে, তারা আদালতের নির্দেশ সত্ত্বেও সঠিকভাবে নিয়োগ প্রক্রিয়া সম্পন্ন করেনি। এর ফলে অনেক যোগ্য প্রার্থী চাকরি থেকে বঞ্চিত হচ্ছিলেন। মামলাকারীদের তরফে আইনজীবী আদালতে জানান যে, পর্ষদ আদালতের নির্দেশ অমান্য করেছে। অন্যদিকে, পর্ষদের আইনজীবী জয়দীপ গুপ্ত জানান যে, ইচ্ছাকৃতভাবে নির্দেশ অমান্য করা হয়নি, বরং কিছু পরিস্থিতির কারণে এই সমস্যা তৈরি হয়েছে।
সুপ্রিম কোর্টের পর্যবেক্ষণ ও রায়
সুপ্রিম কোর্ট এই মামলায় একটি ঐতিহাসিক রায় দিয়েছে। বিচারপতিরা স্পষ্ট জানিয়েছেন যে, সংবিধানের ১৪২ নং ধারা অনুযায়ী, সম্পূর্ণ ন্যায়বিচারের জন্য আদালতের নির্দেশ মেনে চলা বাধ্যতামূলক। আদালত অবমাননার মামলা এবং অন্যান্য সম্পর্কিত ফাইল খারিজ করে দিয়ে, রাজ্য সরকারকে একটি নতুন সুযোগ দিয়েছে।
রায়ের গুরুত্বপূর্ণ দিকগুলি হলো:
- শূন্যপদ পুনর্বিন্যাস: রাজ্য সরকারকে আগামী ছয় সপ্তাহের মধ্যে খালি থাকা পদগুলিকে পুনরায় শ্রেণিভুক্ত করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। এর ফলে জাতি, বিভাগ বা বিষয় অনুযায়ী শূন্যপদগুলি পূরণ করা সম্ভব হবে।
- ২০২০-২২ ব্যাচের চাকরি বহাল: এই রায়ের ফলে ২০২০-২২ ব্যাচের ৯৫৩ জন প্রার্থীর চাকরিতে কোনো প্রভাব পড়বে না। তাদের নিয়োগ বৈধ থাকবে।
- নিয়োগ প্রক্রিয়ার সময়সীমা: আদালত জানিয়েছে যে, আগামী ছয় সপ্তাহের মধ্যে পুনর্বিন্যাস এবং নিয়োগ প্রক্রিয়া সম্পন্ন করতে হবে।
চাকরিপ্রার্থীদের জন্য এর অর্থ কী?
এই রায়ের ফলে রাজ্যের হাজার হাজার ডি.এল.এড প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত চাকরিপ্রার্থীদের মুখে হাসি ফুটেছে। দীর্ঘদিন ধরে আইনি জটিলতায় আটকে থাকা নিয়োগ প্রক্রিয়া এবার গতি পাবে বলে আশা করা হচ্ছে। যে সমস্ত শূন্যপদ খালি ছিল, সেগুলি এবার মেধার ভিত্তিতে পূরণ করা হবে। এই রায় শুধুমাত্র চাকরিপ্রার্থীদের জন্যই নয়, রাজ্যের শিক্ষা ব্যবস্থার জন্যও একটি ইতিবাচক দিক।
ভবিষ্যতের পদক্ষেপ
এখন দেখার বিষয়, রাজ্য সরকার এবং প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদ আদালতের নির্দেশ মেনে কত দ্রুত নিয়োগ প্রক্রিয়া সম্পন্ন করতে পারে। আগামী ছয় সপ্তাহ রাজ্যের চাকরিপ্রার্থীদের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ হতে চলেছে। আশা করা যায়, সমস্ত পক্ষ আদালতের নির্দেশকে সম্মান জানিয়ে স্বচ্ছতার সঙ্গে নিয়োগ প্রক্রিয়া এগিয়ে নিয়ে যাবে এবং যোগ্য প্রার্থীরা তাদের অধিকার পাবে।