32000 Case Update: আজ ৩২,০০০ চাকরি বাতিল মামলার রায় কোন পথে? বিচারপতিদের মন্তব্যে নতুন মোড়, চূড়ান্ত পর্যায়ে শুনানি!
32000 Case Update: পশ্চিমবঙ্গের ৩২,০০০ প্রাথমিক শিক্ষকের চাকরি বাতিল মামলার শুনানি বর্তমানে চূড়ান্ত পর্যায়ে এসে পৌঁছেছে। দীর্ঘ শুনানির পর উভয় পক্ষের বক্তব্য পেশ শেষ হয়েছে এবং আইনজীবীরা এখন শুধুমাত্র তাঁদের জবাব দাখিল করছেন। এই পরিস্থিতিতে, মামলার রায় কোন দিকে যেতে পারে, সেই বিষয়ে বিচারপতি তপোব্রত চক্রবর্তীর একটি মন্তব্য নতুন করে জল্পনার সৃষ্টি করেছে।
মামলার গতিপ্রকৃতিতে নতুন মোড়
শুরুতে মনে করা হচ্ছিল যে, এই মামলার মাধ্যমে হয়তো পিটিশনারদের চাকরি পাওয়ার একটি সুযোগ তৈরি হতে পারে এবং কর্মরত ৩২,০০০ শিক্ষকের চাকরি বাতিলের সম্ভাবনা কম। কিন্তু শুনানির শেষ পর্বে বিচারপতি চক্রবর্তীর পর্যবেক্ষণ সেই ধারণাকে অনেকটাই বদলে দিয়েছে। তিনি স্পষ্টভাবে জানিয়েছেন যে, এই মামলা থেকে মূল পিটিশনারদের চাকরি পাওয়ার সুযোগ বা আশা প্রায় নেই বললেই চলে।
বিচারপতি উল্লেখ করেন, এই মামলার প্রধান বিচার্য বিষয় হলো, বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের সিঙ্গেল বেঞ্চের দেওয়া ৩২,০০০ শিক্ষকের সম্পূর্ণ সিলেকশন প্রক্রিয়া বাতিলের নির্দেশটি ডিভিশন বেঞ্চ বহাল রাখবে, নাকি বাতিল করবে। সুতরাং, মামলার রায় মূলত দুটি সম্ভাব্য পথের মধ্যে একটিকে বেছে নেবে।
রায়ের দুটি সম্ভাব্য পরিণতি
এই মামলার চূড়ান্ত রায় থেকে দুটি প্রধান সম্ভাবনা উঠে আসছে:
সবার আগে খবরের আপডেট পান!
টেলিগ্রামে যুক্ত হন- সিঙ্গেল বেঞ্চের নির্দেশ বাতিল: যদি ডিভিশন বেঞ্চ সিঙ্গেল বেঞ্চের রায়কে বাতিল বা সেটঅ্যাসাইড করে দেয়, তবে ৩২,০০০ শিক্ষক-শিক্ষিকার চাকরি সুরক্ষিত হবে এবং তাঁরা তাঁদের পদে বহাল থাকবেন।
- সিঙ্গেল বেঞ্চের নির্দেশ বহাল: অন্যদিকে, যদি ডিভিশন বেঞ্চ সিঙ্গেল বেঞ্চের রায়কে বহাল বা আফার্ম করে, তবে ৩২,০০০ চাকরি বাতিল হওয়া কার্যত নিশ্চিত হয়ে যাবে।
দুর্নীতির অভিযোগ এবং সিবিআই রিপোর্ট
মামলার রায় মূলত নির্ভর করছে পর্ষদের পেশ করা যুক্তি এবং দুর্নীতির প্রমাণের ওপর। বিচারপতিরা প্রথম থেকেই দুর্নীতির বিষয়টিকে অত্যন্ত গুরুত্বের সাথে বিবেচনা করছেন। সিবিআই-এর পেশ করা রিপোর্টে নিয়োগ প্রক্রিয়ার বিভিন্ন স্তরে দুর্নীতি, বেআইনি কার্যকলাপ এবং আর্থিক লেনদেনের বিস্তারিত তথ্য উল্লেখ করা হয়েছে। এই দুর্নীতি শুধুমাত্র প্রাথমিক নিয়োগেই সীমাবদ্ধ নয়, বরং স্কুল সার্ভিস কমিশনের (SSC) নবম-দশম, একাদশ-দ্বাদশ, গ্রুপ-সি এবং গ্রুপ-ডি নিয়োগেও ঘটেছে বলে রিপোর্টে বলা হয়েছে।
প্রাথমিক নিয়োগের ক্ষেত্রে সিবিআই রিপোর্টে কিছু নির্দিষ্ট বেআইনি কার্যকলাপের উল্লেখ রয়েছে:
- ৭৫২ জন প্রার্থীকে বেআইনিভাবে চাকরি দেওয়া হয়েছে।
- ২৬৯ জনের চাকরি বাতিল করা হয়েছে, যাঁদের মামলা বর্তমানে সুপ্রিম কোর্টে বিচারাধীন।
- ৯৪ জন এমন প্রার্থী রয়েছেন, যাঁরা টেট পাস না করেও চাকরি পেয়েছেন।
তবে একটি বিষয় লক্ষণীয় যে, এই বেআইনিভাবে নিযুক্ত ব্যক্তিরা এবং ৩২,০০০ অপ্রশিক্ষিত (non-trained) প্রার্থীরা ভিন্ন হতে পারেন, কারণ অনেকের নিয়োগপত্র ২০১৭ সালের নভেম্বর মাসে দেওয়া হয়েছিল, যেখানে ৩২,০০০ জনের নিয়োগ হয়েছিল ২০১৭ সালের ফেব্রুয়ারিতে।
সব মিলিয়ে, বিচারপতিরা সমগ্র বিষয়টি কীভাবে মূল্যায়ন করছেন, তার উপরেই মামলার চূড়ান্ত রায় নির্ভর করছে। তবে এটা পরিষ্কার যে, সিঙ্গেল বেঞ্চের নির্দেশ হয় বহাল থাকবে, নয়তো বাতিল হবে। এই পরিস্থিতিতে, মূল পিটিশনারদের নতুন করে চাকরি পাওয়ার সম্ভাবনা অত্যন্ত ক্ষীণ। এমনকি, নতুন করে যারা এই মামলায় যুক্ত হয়ে সুবিধা পেতে চাইছেন, তাদের আবেদনও আদালত গ্রহণ করছে না।