32000 Teacher Case: র্যাঙ্ক জাম্পিং, ‘Y’ প্রার্থী রহস্য! আজ হাইকোর্টের শুনানিতে উঠে এলো বিস্ফোরক তথ্য

32000 Teacher Case: কলকাতা হাইকোর্টে ৩২,০০০ প্রাথমিক শিক্ষকের চাকরি বাতিল মামলার শুনানিতে উঠে এলো একের পর এক চাঞ্চল্যকর তথ্য। মহামান্য বিচারপতি তপোব্রত চক্রবর্তী এবং বিচারপতি ঋতব্রত কুমার মিত্রের ডিভিশন বেঞ্চে এই মামলার শুনানি চলে। আবেদনকারী বঞ্চিত চাকরিপ্রার্থীদের পক্ষে আইনজীবী বিকাশরঞ্জন ভট্টাচার্য একাধিক গুরুতর অভিযোগ তুলে ধরেন, যা নিয়োগ প্রক্রিয়ার স্বচ্ছতা নিয়ে বড়সড় প্রশ্নচিহ্ন তৈরি করেছে।
শুনানির মূল বিষয়বস্তু
এদিন আদালতে আইনজীবী বিকাশরঞ্জন ভট্টাচার্য মূলত যে বিষয়গুলির ওপর আলোকপাত করেন, সেগুলি হলো:
- মেধা তালিকার অনুপস্থিতি: প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদ কোনোদিন সম্পূর্ণ মেধা তালিকা প্রকাশ করেনি। শুধুমাত্র এমপ্যানেলড (Empanelled) বা নট এমপ্যানেলড (Not Empanelled) দেখানো হয়েছে, যা দুর্নীতির সুযোগ করে দিয়েছে।
- র্যাঙ্ক জাম্পিং: কম নম্বর পাওয়া সত্ত্বেও বহু প্রার্থী চাকরি পেয়েছেন, অথচ বেশি নম্বর পেয়েও আবেদনকারীরা বঞ্চিত হয়েছেন। এই র্যাঙ্ক জাম্পিংয়ের সপক্ষে একাধিক তথ্যপ্রমাণ আদালতে পেশ করা হয়।
- অযোগ্যদের নিয়োগ: এমন অনেককে চাকরি দেওয়া হয়েছে যারা ২০১৪ সালের টেট পরীক্ষাতেই বসেননি। এমনকি, টেট পাশ না করেও অনেকে নিয়োগপত্র পেয়েছেন বলে অভিযোগ।
- ‘Y’ নামক প্রার্থী রহস্য: শুনানিতে ‘Y’ নামক এক রহস্যময় প্রার্থীর কথা উঠে আসে, যাকে বেআইনিভাবে চাকরি পাইয়ে দেওয়া হয়েছে বলে অভিযোগ। পর্ষদের পক্ষ থেকে জানানো হয়, ফর্ম ফিলাপের সময় ভুলবশত ঐ প্রার্থীর নাম ‘Y’ হিসেবে নথিভুক্ত হয়েছিল।
- অস্বচ্ছ নিয়োগ প্রক্রিয়া: অ্যাপটিটিউড টেস্ট (Aptitude Test) এবং ইন্টারভিউ প্রক্রিয়ায় ব্যাপক গরমিলের অভিযোগ আনা হয়েছে। কোনো রকম রেকর্ড ছাড়াই নম্বর বন্টন করা হয়েছে, যা সম্পূর্ণ নিয়মবিরুদ্ধ।
- রিলাক্সেশন পিরিয়ডের অপব্যবহার: প্রশিক্ষণহীন শিক্ষকদের নিয়োগের ক্ষেত্রে যে রিলাক্সেশন পিরিয়ড বা ছাড়ের সময়সীমা ছিল, তার অপব্যবহার করা হয়েছে। সময়সীমা পেরিয়ে যাওয়ার পরেও নিয়ম ভেঙে নিয়োগ চলেছে।
বিচারপতির পর্যবেক্ষণ ও পরবর্তী পদক্ষেপ
আদালত এই সকল অভিযোগ অত্যন্ত গুরুত্ব সহকারে শুনেছে। বিচারপতি জানান, নিয়োগ প্রক্রিয়ায় এত বড় দুর্নীতির অভিযোগ থাকলে তা এড়িয়ে যাওয়া সম্ভব নয়। পর্ষদের ভূমিকা এবং নিয়োগের স্বচ্ছতা নিয়ে একাধিক প্রশ্ন তোলেন তিনি। বিচারপতি আরও বলেন যে, পাঁচ বছর পর কেন এই বিষয়গুলো তোলা হচ্ছে, সেই প্রশ্ন যেমন থাকছে, তেমনই আইনের চোখে দুর্নীতির কোনো ক্ষমা নেই।
এই মামলার পরবর্তী শুনানির দিন ধার্য হয়েছে ২৯শে অক্টোবর, ২০২৫। পুজোর ছুটির কারণে শুনানি পিছিয়ে যাওয়ায় চাকরিপ্রার্থীদের অপেক্ষা আরও বাড়ল। তবে আদালত যেভাবে বিষয়টির গভীরে গিয়ে তদন্ত করছে, তাতে বঞ্চিত চাকরিপ্রার্থীরা সুবিচার পাওয়ার আশায় বুক বাঁধছেন। এখন এটাই দেখার, আগামী দিনে এই মামলা কোন দিকে মোড় নেয় এবং ৩২,০০০ শিক্ষকের ভাগ্য শেষ পর্যন্ত কি হয়।