32000 Teacher Case: ৩২ হাজার শিক্ষকের চাকরি থাকবে? দেখুন আজ হাইকোর্টে কী ঘটল!

32000 Teacher Case: কলকাতা হাইকোর্টে ৩২,০০০ প্রাথমিক শিক্ষকের চাকরি বাতিলের মামলা এক নতুন মোড় নিয়েছে। এই মামলাটি পশ্চিমবঙ্গের হাজার হাজার চাকরিপ্রার্থীর ভবিষ্যত নির্ধারণ করবে। সম্প্রতি মাননীয় বিচারপতি তপব্রত চক্রবর্তীর এজলাসে এই মামলার শুনানি অনুষ্ঠিত হয়, যেখানে চাকরিপ্রার্থীদের পক্ষ থেকে একাধিক গুরুতর অভিযোগ তোলা হয়েছে। এই ব্লগ পোস্টে আমরা সেই শুনানির গুরুত্বপূর্ণ বিষয়গুলো তুলে ধরব।
আদালতে উত্থাপিত প্রধান অভিযোগসমূহ
চাকরিপ্রার্থীদের পক্ষের আইনজীবী তরুণজ্যোতি তেওয়ারি এবং কুমারজ্যোতি একাধিক বিস্ফোরক অভিযোগ আদালতে পেশ করেছেন। এই অভিযোগগুলো নিয়োগ প্রক্রিয়ার স্বচ্ছতা নিয়ে বড়সড় প্রশ্ন তুলেছে।
- অ্যাপটিটিউড টেস্টের স্বচ্ছতার অভাব: মামলাকারীদের অভিযোগ, অ্যাপটিটিউড টেস্ট কীভাবে নেওয়া হয়েছে বা আদৌ নেওয়া হয়েছে কিনা, তা নিয়ে যথেষ্ট সন্দেহ রয়েছে।
- সংরক্ষণ নীতির লঙ্ঘন: একাধিক জেলায় সংরক্ষিত শ্রেণীর প্রার্থীদের কাট-অফ মার্কস সাধারণ শ্রেণীর প্রার্থীদের থেকে বেশি ছিল বলে অভিযোগ। অনেক যোগ্য প্রার্থী কাট-অফ মার্কস পাওয়ার পরেও চাকরি পাননি।
- প্যানেল প্রকাশ না করা: নিয়ম অনুযায়ী, নিয়োগের প্যানেল প্রকাশ করা হয়নি। আইনজীবী তরুণজ্যোতি তেওয়ারি আদালতে জানান যে, Rule 8, Sub-rule 5 অনুযায়ী কোনো প্যানেল তৈরিই হয়নি।
- দুর্নীতির অভিযোগ: নিয়োগ প্রক্রিয়ায় ব্যাপক দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছে। বাড়তি নম্বর দেওয়ার জন্য প্রার্থীদের কাছ থেকে টাকা নেওয়া হয়েছে বলেও অভিযোগ।
- তৃতীয় পক্ষের হস্তক্ষেপ: OMR শিট মূল্যায়নের জন্য একটি বেসরকারি সংস্থাকে (S. Roy Basu Company) দায়িত্ব দেওয়া হয়েছিল, যা সম্পূর্ণ বেআইনি বলে দাবি করা হয়েছে।
- অতিরিক্ত প্যানেল: বিভিন্ন সময়ে একাধিক অতিরিক্ত প্যানেল প্রকাশ করা হয়েছে, যা নিয়েও প্রশ্ন উঠেছে।
- প্যারা-টিচারদের নম্বর: প্যারা-টিচারদের অ্যাপটিটিউড টেস্ট বা অভিজ্ঞতার জন্য ভগ্নাংশে নম্বর দেওয়া হয়েছে, যা অনিয়মের ইঙ্গিত দেয়।
- অতিরিক্ত নিয়োগ: বিজ্ঞাপিত শূন্যপদের চেয়ে বেশি নিয়োগ করা হয়েছে বেশ কয়েকটি জেলায়, যেমন নদীয়া, হুগলী, পশ্চিম মেদিনীপুর, পূর্ব মেদিনীপুর এবং পুরুলিয়া।
আদালতের পর্যবেক্ষণ
মাননীয় বিচারপতি তপব্রত চক্রবর্তী মামলাকারীদের কাছে বেশ কিছু বিষয়ে স্পষ্টীকরণ চেয়েছেন। তিনি “exempted” এবং “non-exempted” বিভাগের পার্থক্য জানতে চেয়েছেন এবং প্যানেল ও ব্রেকআপ মার্কস প্রকাশ না করায় বিস্ময় প্রকাশ করেছেন। আদালত আরও জানতে চেয়েছে যে, মামলাকারীরা ২০১৪ সালের TET পরীক্ষার ফলাফলে সন্তুষ্ট ছিলেন কিনা, যেহেতু তারা সেই পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়েছিলেন।
মামলার ভবিষ্যৎ
এই মামলার পরবর্তী শুনানির দিন ধার্য করা হয়েছে ২ সেপ্টেম্বর, ২০২৫। এই মামলা পশ্চিমবঙ্গের শিক্ষা ব্যবস্থার জন্য একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ মাইলফলক হতে চলেছে। এখন দেখার বিষয়, আদালত শেষ পর্যন্ত কী রায় দেয় এবং হাজার হাজার চাকরিপ্রার্থীর ভবিষ্যৎ কোন দিকে মোড় নেয়।