চাকরি

32000 Teacher Recruitment Case: দুর্নীতির প্রমাণ বিচারপতির হাতে, জোরালো সওয়াল – জবাবের বিস্তারিত দেখুন এখানে

32000 Teacher Recruitment Case: কলকাতা হাইকোর্টে ৩২,০০০ প্রাথমিক শিক্ষকের চাকরি বাতিলের মামলা এক নতুন মোড় নিয়েছে। বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের রায়কে চ্যালেঞ্জ করে দায়ের হওয়া মামলার শুনানিতে উঠে এল একাধিক গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন। আজ দুপুর ২টোয় এই মামলার পরবর্তী শুনানি অনুষ্ঠিত হবে, যার ওপর নির্ভর করছে ৩২ হাজার শিক্ষকের ভবিষ্যৎ। আসুন গতকালের শুনানির মূল বিষয়গুলো বিস্তারিতভাবে জেনে নেওয়া যাক।

৩২ হাজার শিক্ষকের আইনজীবীর সওয়াল

শিক্ষকদের পক্ষে আইনজীবী অনিন্দ্য মিত্র বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ যুক্তি তুলে ধরেন। তাঁর প্রধান যুক্তিগুলো হলো:

  • মামলার উদ্দেশ্য নিয়ে প্রশ্ন: তিনি প্রশ্ন তোলেন, ২০১৭ সালে নিযুক্ত ৩২ হাজার শিক্ষকের বিরুদ্ধে ২০২২ সালে মামলা করা হলো কেন? আবেদনকারীরা তাদের পিটিশনে স্পষ্টভাবে চাকরি বাতিলের দাবি করেননি।
  • অপর্যাপ্ত কারণ: একক বেঞ্চের রায়ে অপ্রশিক্ষিত প্রার্থীদের চাকরি বাতিল করার জন্য যথেষ্ট কারণ দেখানো হয়নি।
  • কাট-অফ মার্কসের বিভ্রান্তি: আবেদনকারীরা যে ১৪.১৯ কাট-অফ মার্কসের কথা বলছেন, তা শুধুমাত্র বীরভূম জেলার SC ক্যাটাগরির জন্য প্রযোজ্য ছিল। বাস্তবে, বিভিন্ন জেলা ও ক্যাটাগরির জন্য কাট-অফ মার্কস ভিন্ন ছিল। এমনকি ১৩-র কম নম্বর পেয়েও ৮২৪ জন চাকরি পেয়েছেন।
  • অ্যাপটিটিউড টেস্ট: আবেদনকারীদের মধ্যে মাত্র সাতজনের মৌখিক অভিযোগের ওপর ভিত্তি করে অ্যাপটিটিউড টেস্ট নিয়ে প্রশ্ন তোলা হয়েছে, যাদের নিজেদেরই অ্যাপটিটিউড টেস্টে নম্বর সবচেয়ে কম ছিল। তাদের কোনো ক্রস-এক্সামিনেশনও হয়নি।
  • ন্যায়বিচারের লঙ্ঘন: ৩২ হাজার শিক্ষকের বক্তব্য রাখার কোনো সুযোগ দেওয়া হয়নি, যা প্রাকৃতিক ন্যায়বিচারের পরিপন্থী।

আদালতের পর্যবেক্ষণ ও প্রশ্ন

শুনানি চলাকালীন বিচারপতিরা বিভিন্ন বিষয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেন এবং পর্ষদের আইনজীবীর কাছে কিছু কড়া প্রশ্ন রাখেন।

  • দুর্নীতির অভিযোগ: বিচারপতিরা বলেন, যদি দুর্নীতি প্রমাণিত হয়, তবে জড়িতদের বরখাস্ত করা হবে। তারা প্রশ্ন তোলেন, যদি পর্ষদ দুর্নীতিগ্রস্ত হয়, তবে সেই পর্ষদকে দিয়ে নতুন করে নিয়োগ প্রক্রিয়া চালানো কতটা যুক্তিসঙ্গত?
  • পর্ষদের নীরবতা: আগের শুনানিগুলোতে পর্ষদ কেন কিছু বিষয়ে নীরব ছিল, তা নিয়েও প্রশ্ন তোলেন বিচারপতিরা।
  • নম্বর বিভাজন: ইন্টারভিউ এবং অ্যাপটিটিউড টেস্টের নম্বর আলাদাভাবে না দেখানোয় প্রার্থীদের যোগ্যতা মূল্যায়ন করা কঠিন হয়ে পড়েছে বলে আদালত মন্তব্য করে।
  • দুর্নীতির প্রমাণ বিচারপতির হাতে: অনিন্দ্য মিত্র যখন জানতে চান দুর্নীতি কোথায় হয়েছে? তখন বিচারপতি একটি নথি দেখিয়ে বলেন, তাহলে এটি কী? অর্থাৎ দুর্নীতির প্রমাণ যে বিচারপতির হাতে সেটা স্পষ্ট।

মামলার ভবিষ্যৎ এবং শিক্ষকদের উদ্বেগ

এই মামলার পরবর্তী শুনানি আজ অনুষ্ঠিত হবে। যদি প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদ দুর্নীতির অভিযোগের বিষয়ে কোনো সন্তোষজনক প্রমাণ বা যুক্তি দেখাতে না পারে, তবে ৩২ হাজার শিক্ষকের ভবিষ্যৎ ঘোর অন্ধকারে চলে যেতে পারে। এই পরিস্থিতিতে, রাজ্যজুড়ে শিক্ষামহলে তীব্র উদ্বেগ ও উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়েছে। সকলেই এখন তাকিয়ে আছে আদালতের চূড়ান্ত রায়ের দিকে।

WBPAY Team

আমাদের প্রতিবেদন গুলি WBPAY Team এর দ্বারা যাচাই করে লেখা হয়। আমরা একটি স্বাধীন প্ল্যাটফর্ম যা পাঠকদের জন্য স্পষ্ট এবং সঠিক খবর পৌঁছে দিতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। আমাদের লক্ষ্য এবং সাংবাদিকতার মান সম্পর্কে জানতে, অনুগ্রহ করে আমাদের About us এবং Editorial Policy পৃষ্ঠাগুলি পড়ুন।
Back to top button