Dearness Allowance

DA Case: ২৫% ডিএ কারা পাবেন? পরে ফেরত দিতে হবে… ২০২৫ পর্যন্ত দেবে, দেখুন আইনজীবীর বিশ্লেষণ

WB DA Case: পশ্চিমবঙ্গের সরকারি কর্মীদের মহার্ঘ ভাতা (ডিএ) মামলা আবারও আলোচনার কেন্দ্রে। সম্প্রতি, ভারতের সর্বোচ্চ আদালত এই বিষয়ে একটি গুরুত্বপূর্ণ অন্তর্বর্তীকালীন নির্দেশ দিয়েছে, যা রাজ্য সরকারি কর্মী, শিক্ষক, বিধিবদ্ধ পঞ্চায়েত কর্মী, পেনশনভোগী এবং পারিবারিক পেনশনভোগীদের জন্য তাৎপর্যপূর্ণ। এই ব্লগ পোস্টে আমরা আইনজীবী প্রবীর বাবুর সাক্ষাৎকার এবং অন্যান্য নির্ভরযোগ্য সূত্র থেকে প্রাপ্ত তথ্যের ভিত্তিতে সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশিকা, এর প্রভাব এবং কর্মীদের জন্য প্রয়োজনীয় বিষয়গুলি বিস্তারিতভাবে আলোচনা করব।

সুপ্রিম কোর্টের সাম্প্রতিক নির্দেশ:

দীর্ঘদিন ধরে চলা এই মামলায়, সুপ্রিম কোর্ট পশ্চিমবঙ্গ সরকারকে একটি অন্তর্বর্তীকালীন নির্দেশ দিয়েছে। এই নির্দেশ অনুযায়ী, রাজ্য সরকারকে তার কর্মীদের বকেয়া ডিএ-র ন্যূনতম ২৫ শতাংশ অবিলম্বে মিটিয়ে দিতে হবে। এই নির্দেশটি সমস্ত রাজ্য সরকারি কর্মচারী, শিক্ষক, বিধিবদ্ধ সংস্থার কর্মী, পঞ্চায়েত কর্মী, পুরসভা ও পৌরনিগমের কর্মী, অবসরপ্রাপ্ত কর্মী এবং পারিবারিক পেনশনভোগীদের জন্য প্রযোজ্য হবে। আদালত স্পষ্ট করেছে যে, কোনও প্রকার শ্রেণিবিভাগ না করে সকলকেই এই সুবিধার আওতায় আনতে হবে।

আইনজীবী প্রবীর বাবুর বিশ্লেষণ:

ডিএ মামলায় প্রথম থেকেই যুক্ত থাকা আইনজীবী প্রবীর বাবু এই বিষয়ে তাঁর মূল্যবান মতামত দিয়েছেন। তাঁর মতে:

  • সকলের অধিকার: সুপ্রিম কোর্টের এই নির্দেশে পশ্চিমবঙ্গের সমস্ত সরকারি কর্মচারী, শিক্ষক, বিধিবদ্ধ পঞ্চায়েত কর্মী, পেনশনভোগী এবং পারিবারিক পেনশনভোগীরা ডিএ পাওয়ার যোগ্য। আদালত কোনওরকম নির্বিচারে শ্রেণিবিভাগ না করে সকলকেই একই ছাতার তলায় এনেছে।
  • বকেয়া ফেরত দিতে হবে না: যদি ভবিষ্যতেও সুপ্রিম কোর্ট রায় দেয় যে ডিএ মৌলিক অধিকার নয়, তাহলেও ইতিমধ্যে প্রদত্ত বকেয়া কর্মীদের ফেরত দিতে হবে না। বর্তমান অর্থপ্রদান আইনি যুক্তিতর্কের ফলাফলের উপর নির্ভরশীল নয়।
  • রিভিউ পিটিশনের সম্ভাবনা কম: প্রবীর বাবুর মতে, অন্তর্বর্তীকালীন আদেশের বিরুদ্ধে রিভিউ পিটিশন দাখিল করার কোনও সংস্থান নেই। ২৫% ডিএ প্রদানের আদেশ রাজ্য সরকারের আইনজীবীদের উপস্থিতিতেই দেওয়া হয়েছে, তাই কোনও রিভিউ পিটিশন গ্রহণযোগ্য হওয়ার সম্ভাবনা কম। এমনকি, তাঁর মতে এমন রিভিউ পিটিশনের সময় আদালত বাকি ৭৫% ডিএ মিটিয়ে দেওয়ার নির্দেশও দিতে পারে।
  • ডিএ প্রদানের সময়সীমা: ২০০৮ সালের ১লা এপ্রিল থেকে বর্তমান তারিখ (২০২৫) পর্যন্ত বকেয়া ডিএ মেটাতে হবে। এটি ২০০৯ সালের রোপা এবং পরবর্তী বিভিন্ন আদেশের (বিচারপতি রবীন্দ্রনাথ সামন্তর আদেশ সহ) উপর ভিত্তি করে নির্ধারিত হয়েছে।
  • রাজ্যের বাধ্যবাধকতা: আদেশে বলা হয়েছে যে রাজ্যকে “উচিত” (should) প্রদেয় পরিমাণের কমপক্ষে ২৫% মুক্তি দেওয়া, যা পরিশোধের একটি শক্তিশালী বাধ্যবাধকতা বোঝায়। এই নির্দেশ পালনে ব্যর্থ হলে রাজ্যের গুরুতর পরিণতি হতে পারে এবং বিষয়টি ৪ঠা আগস্ট (পরবর্তী শুনানির তারিখ) সুপ্রিম কোর্টের সামনে আনা হবে।
  • অর্থপ্রদানের পদ্ধতি: সুপ্রিম কোর্ট কর্মীদের সরাসরি নগদ অর্থ প্রদানের নির্দেশ দিয়েছে এবং বকেয়া অর্থ প্রভিডেন্ট ফান্ডে জমা দেওয়ার অনুমতি দেয়নি। রাজ্যকে এই নির্দেশ মেনে চলতে হবে।

অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ তথ্য:

সুপ্রিম কোর্ট রাজ্য সরকারকে এই ২৫ শতাংশ বকেয়া ডিএ ছয় সপ্তাহের মধ্যে মিটিয়ে দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছে। আদালত আরও জানিয়েছে যে, ডিএ সংক্রান্ত এই মামলার পরবর্তী শুনানি আগামী ৪ঠা আগস্ট, ২০২৫ তারিখে অনুষ্ঠিত হবে এবং তার আগে সব পক্ষকে তাদের বক্তব্য জানাতে হবে। বর্তমানে পশ্চিমবঙ্গের সরকারি কর্মীরা ১৮ শতাংশ ডিএ পান, যেখানে কেন্দ্রীয় সরকারি কর্মীরা ৫৫ শতাংশ হারে ডিএ পান। রাজ্য সরকার হাইকোর্টের রায়কে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হয়েছিল। এর আগে প্রায় ১৮ বার এই মামলার শুনানি পিছিয়ে গিয়েছিল।

কিছু প্রশ্নোত্তর (FAQs):

প্রশ্ন ১: সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ অনুযায়ী কারা ডিএ পাবেন?
উত্তর: পশ্চিমবঙ্গের সকল রাজ্য সরকারি কর্মচারী, শিক্ষক, বিধিবদ্ধ সংস্থার কর্মী, পঞ্চায়েত কর্মী, পুরসভা ও পৌরনিগমের কর্মী, অবসরপ্রাপ্ত কর্মী এবং পারিবারিক পেনশনভোগীরা এই নির্দেশের আওতায় ডিএ পাবেন।

প্রশ্ন ২: কত শতাংশ বকেয়া ডিএ দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে এবং কত দিনের মধ্যে?
উত্তর: সুপ্রিম কোর্ট বকেয়া ডিএ-র ন্যূনতম ২৫ শতাংশ ছয় সপ্তাহের মধ্যে মিটিয়ে দেওয়ার অন্তর্বর্তীকালীন নির্দেশ দিয়েছে।

প্রশ্ন ৩: ডিএ কি প্রভিডেন্ট ফান্ডে জমা দেওয়া হবে?
উত্তর: না, সুপ্রিম কোর্ট স্পষ্ট নির্দেশ দিয়েছে যে বকেয়া ডিএ কর্মীদের সরাসরি নগদ অর্থে প্রদান করতে হবে, প্রভিডেন্ট ফান্ডে জমা দেওয়া যাবে না।

প্রশ্ন ৪: এই মামলার পরবর্তী শুনানি কবে?
উত্তর: এই মামলার পরবর্তী শুনানি আগামী ৪ঠা আগস্ট, ২০২৫ তারিখে ধার্য করা হয়েছে।

সুপ্রিম কোর্টের এই সাম্প্রতিক নির্দেশ নিঃসন্দেহে পশ্চিমবঙ্গের সরকারি কর্মীদের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ। যদিও এটি একটি অন্তর্বর্তীকালীন নির্দেশ, এটি কর্মীদের দীর্ঘদিনের দাবি পূরণের পথে কিছুটা হলেও আশার আলো দেখাচ্ছে। আগামী দিনে এই মামলার চূড়ান্ত রায় কী হয়, সেদিকেই তাকিয়ে থাকবে রাজ্যের লক্ষ লক্ষ সরকারি কর্মী ও পেনশনভোগী। এই বিষয়ে আরও বিশদ তথ্য এবং সর্বশেষ আপডেটের জন্য নজর রাখুন আমাদের ওয়েবসাইটে।

WBPAY

The site wbpay.in is a collaborative platform voluntarily monitored by a dedicated group of reporters of West Bengal. The site features insightful posts and articles authored by experts in various fields, ensuring high-quality content that informs and engages the community. With a focus on transparency and public service, wbpay.in aims to provide valuable resources and updated news relevant to the citizens and employees of West Bengal. For any query please mail us at [email protected]

Related Articles

Back to top button