Dearness Allowance

Dearness Allowance: ডিএ দেওয়া সম্ভব! “রাজ্য চাইলেই পারে,” এটা কর্মীদের অধিকার! দাবি কনফেডারেশনের

Dearness Allowance: পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য সরকারি কর্মীদের মহার্ঘ ভাতা (DA) নিয়ে দীর্ঘদিনের আইনি লড়াই চলছে। এই পরিস্থিতিতে, কনফেডারেশন অফ স্টেট গভর্নমেন্ট এমপ্লয়িজ, পশ্চিমবঙ্গের সাধারণ সম্পাদক শ্রী মলয় মুখোপাধ্যায় এক সাম্প্রতিক সাক্ষাৎকারে জোর দিয়ে বলেছেন যে রাজ্য সরকারের পক্ষে কর্মীদের বকেয়া ডিএ প্রদান করা সম্পূর্ণভাবে সম্ভব। তাঁর মতে, মূল সমস্যা সদিচ্ছার, আর্থিক অক্ষমতার নয়।

শ্রী মুখোপাধ্যায় উল্লেখ করেন যে কর্মীরা গত ছয় বছরে প্রায় ১৫,০০০ কোটি টাকা ডিএ বাবদ পাননি। যদিও রাজ্য সরকার আর্থিক সংকটের কথা বলছে, সুপ্রিম কোর্ট সম্প্রতি রাজ্যকে ছয় সপ্তাহের মধ্যে বকেয়া ডিএর ২৫% মিটিয়ে দেওয়ার অন্তর্বর্তীকালীন নির্দেশ দিয়েছে। এটি প্রমাণ করে যে ডিএ প্রদান একটি আইনি ও সাংবিধানিক অধিকার, যা থেকে কর্মীদের বঞ্চিত করা যায় না।

ডিএ দেওয়ার বাস্তবসম্মত পথ রয়েছে:

রাজ্য সরকারের আর্থিক অক্ষমতার যুক্তির জবাবে শ্রী মুখোপাধ্যায় এবং তাঁর সংগঠন জোরালোভাবে পাল্টা যুক্তি দিয়েছেন যে, ডিএ দেওয়া সম্ভব। তাঁদের বিশদ বিশ্লেষণে উঠে এসেছে যে, রাজ্য সরকার বহু শূন্যপদে (প্রায় ৪.৫ লক্ষ) স্থায়ী নিয়োগ না করে চুক্তিভিত্তিক বা পুনঃনিয়োগপ্রাপ্ত কর্মী দিয়ে কাজ চালাচ্ছে। এর ফলে শুধুমাত্র বেতন ও পেনশন বাবদ সরকারের বিপুল অর্থ সাশ্রয় হয়েছে। শ্রী মুখোপাধ্যায়ের দাবি, “এই সাশ্রয় হওয়া অর্থ, যা গত ছয় বছরে আনুমানিক ১৫,০০০ কোটি টাকার কাছাকাছি, তা দিয়েই কর্মীদের বকেয়া ডিএ স্বচ্ছন্দে মিটিয়ে দেওয়া যেত। সুতরাং, ডিএ দেওয়ার সদিচ্ছা থাকলে অর্থের অভাব বাধা হবে না।” তিনি আরও বলেন যে, সরকার বিভিন্ন উৎসব ও অনুষ্ঠানের (“মেলা, খেলা, কার্নিভাল”) জন্য অর্থ বরাদ্দ করতে পারলে কর্মীদের ন্যায্য পাওনা মেটাতে পারবে না, এই যুক্তি গ্রহণযোগ্য নয়। তাই, তাঁদের মতে, ডিএ মেটানো কেবল ন্যায্য নয়, আর্থিকভাবেও সম্ভব।

শ্রী মুখোপাধ্যায় পূর্ববর্তী বামফ্রন্ট সরকারের উদাহরণ টেনে বলেন, সেই সরকারও পে কমিশনের সাথে ১৬% মহার্ঘ ভাতা দিয়েছিল, যেখানে বর্তমান সরকার শূন্য থেকে শুরু করেছিল। বর্তমানে রাজ্য কর্মীরা যেখানে ১৮% ডিএ পাচ্ছেন, সেখানে কেন্দ্রীয় সরকারি কর্মী ও অন্যান্য রাজ্যের কর্মীরা ৫৫% ডিএ পান, যা বৈষম্যমূলক।

মুখ্যমন্ত্রীর ডিএ আন্দোলনরত কর্মীদের সম্পর্কে করা কিছু মন্তব্য (“ঘেউ ঘেউ”) নিয়েও তিনি সমালোচনা করেন এবং জানান যে হাইকোর্টও এই ধরনের মন্তব্যকে দুর্ভাগ্যজনক বলেছে। তাঁর মতে, আদালতের হস্তক্ষেপ ছাড়া রাজ্য সরকার নিজে থেকে ডিএ বৃদ্ধির পথে হাঁটেনি।

সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ অনুসারে, নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে পদক্ষেপ না নিলে মুখ্য সচিব এবং অর্থ সচিবের বিরুদ্ধে আদালত অবমাননার অভিযোগ আনা হতে পারে, যা পরিস্থিতিটির গুরুত্ব বুঝিয়ে দেয়। মহার্ঘ ভাতা সর্বভারতীয় মূল্যসূচকের (AICPI) ভিত্তিতে নির্ধারিত একটি অধিকার, এবং শ্রী মুখোপাধ্যায়ের মতে, বর্তমান সরকার দীর্ঘ সময় ধরে এই অধিকার থেকে কর্মীদের বঞ্চিত করে রেখেছে, যা কেবল অন্যায্যই নয়, বরং সরকারের সদিচ্ছার অভাবকেই প্রকট করে।

সব মিলিয়ে, শ্রী মলয় মুখোপাধ্যায়ের বক্তব্য অনুযায়ী, রাজ্য সরকারি কর্মীদের বকেয়া ডিএ প্রদান শুধু আইনি বাধ্যবাধকতাই নয়, রাজ্য সরকারের সদিচ্ছা থাকলে তা আর্থিকভাবেও সম্পূর্ণরূপে সম্ভব। কর্মীরা এখন সুপ্রিম কোর্টের চূড়ান্ত রায়ের দিকে তাকিয়ে, এই বিশ্বাস নিয়ে যে তাঁদের দীর্ঘদিনের লড়াই সফল হবে। ২৫ শতাংশ মিটিয়ে দেওয়ার নির্দেশের পর তাঁরা আরো আত্মবিশ্বাসী এবং তাঁদের প্রাপ্য ডিএ তাঁরা পাবেন কারণ ডিএ দেওয়া সম্ভব।

WBPAY

The site wbpay.in is a collaborative platform voluntarily monitored by a dedicated group of reporters of West Bengal. The site features insightful posts and articles authored by experts in various fields, ensuring high-quality content that informs and engages the community. With a focus on transparency and public service, wbpay.in aims to provide valuable resources and updated news relevant to the citizens and employees of West Bengal. For any query please mail us at [email protected]

Related Articles

Back to top button